সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫
প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে ত্বকের পরিচর্যা করা নতুন কিছু নয়। আর এই ধারাবাহিকতায় যোগ হয়েছে গাজরের ব্যবহার।
তবে এর কিছু বিপরীত দিকও রয়েছে।
এই বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বার্লিংটন’য়ের বোর্ড নিবন্ধিত ত্বক বিশেষজ্ঞ এবং ‘কেপি অ্যাওয়ে’র প্রতিষ্ঠাতা ডা. আনার মিকাইলভ ওয়েলঅ্যান্ডগুড ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ব্যাখ্যা করেন, “গাজরে রয়েছে উল্ল্যেখযোগ্য পরিমাণে বেটা-ক্যারোটিন, একটি খাঁটি ‘মলিকিউল’ বা অণু যা বিভিন্ন উদ্ভিজ্জ উপাদান থেকে পাওয়া যায়।”
“আর গাজর সঠিকভাবে ত্বকে ব্যবহার করতে পারলে বহুগুণে উপকার পাওয়া যায় এই উপাদানের কারণে,” বলেন এই ত্বক বিশেষজ্ঞ।
যুক্তরাষ্ট্রের বোর্ড নিবন্ধিত ত্বক বিশেষজ্ঞ এবং ‘স্কিন ওয়েলনেস ডার্মাটোলজি’র প্রতিষ্ঠাতা ডা. কোরে এল. হার্টম্যান বলেন, “গাজর সমৃদ্ধ ত্বকের প্রসাধনীতে গাজরের নির্যাস অথবা এর বীজের তেল ব্যবহার করা হয়। এগুলো উচ্চ বেটা ক্যারোটিন সমৃদ্ধ।”
ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, “এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের প্রদাহ কমায় এবং দুষণের কারণে হওয়া ত্বকের ক্ষতি রোধ করে। বেটা ক্যারোটিন রূপান্তরিত হয় ভিটামিন এ হিসেবে, যা বয়সের ছাপ কমায়, কোলাজেনের উৎপাদন বাড়ায়। ফলে ত্বকের উজ্জ্বলতা ও স্থিতিস্থাপকতা বাড়ে।”
রেটিনলও উচ্চ ভিটামিন এ সমৃদ্ধ। এই দুই উপকরণই ত্বকে একই ধরনের কাজ করে। কোষের পুনরুৎপাদন এবং কোলাজেন তৈরিতে সহায়তা করে।
ডা. মিকাইলভ সতর্ক করে দিয়ে বলেন, “এই একই ফলাফল গাজরের উপাদান সমৃদ্ধ প্রসাধনী থেকে আশা করা ঠিক নয়। কারণ গাজর এই উপাদানগুলোর মতো খুব দ্রুত কাজ করতে পারে না।”
ডা. হার্টম্যানও এই বিষয়ে সমর্থন করে বলেন, “গাজর সমৃদ্ধ প্রসাধনী ভিটামিন এ’য়ের মতো দ্রুত কাজ করে না। তাই ত্বক এক্সফলিয়েট করতে চাইলে বা ব্রণ কমাতে চাইলে গাজর বাদ দিয়ে রেটিনল ধরনের প্রসাধনী ব্যবহার করতে হবে।”
“আর যদি ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে চান তাহলে গজর সমৃদ্ধ প্রসাধনী ব্যবহার করা যেতে পারেন।”
গাজর খাওয়ার নির্দিষ্ট কিছু উপকারিতা রয়েছে যেমন- আঁশ বৃদ্ধি এবং চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখা। তবে প্রসাধনী হিসেবে এটা ব্যবহার করা ত্বকে ভিন্ন কিছু পরিবর্তন আনতে পারে।
ডা. মিকাইলভের মতে, “খাবার ও প্রসাধনী হিসেবে একই পণ্য ব্যবহার দেহে ভিন্ন ভিন্ন কাজ করতে পারে। তবে ত্বক ভালো রাখতে বেটা ক্যারোটিনের ব্যবহার সবচেয়ে নিরাপদ।”
“ত্বকে গাজরের নির্যাস সমৃদ্ধ প্রসাধনী ব্যবহারের ক্ষেত্রে লক্ষ করা উচিত, এর সঙ্গে আর্দ্রতা রক্ষাকারী উপাদান যেমন- সেরামাইড, হায়ালুরনিক অ্যাসিড, গ্লিসারিন ইত্যাদি আছে কিনা”, বলেন ডা. হার্টম্যান।
গাজর অন্যান্য ভিটামিন এ সমৃদ্ধ পণ্যের মতো কাজ করে। তিনি রেটিনয়েড সমৃদ্ধ পণ্যের সঙ্গে এটা ব্যবহারে নিষেধ করেন। কেননা তা ত্বকে জ্বলুনির ঝুঁকি বাড়াতে পারে।