শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪
ধনীরা ক্রমশ ভারত ছাড়ছেন। উন্নত বিনিয়োগ সম্ভাবনা, সম্পদের সুরক্ষা, জীবনস্টাইল এবং স্বাস্থ্যসেবার জন্য ক্রমশ এসব ধনীর দেশ ছাড়ার সংখ্যা বাড়ছে। এক্ষেত্রে তারা পরিবার এবং ব্যবসা গুটিয়ে নিচ্ছেন বিদেশে।
এমন আবাসিক ভিসার জন্য যেসব দেশকে বেছে নেয়া হয়, তার মধ্যে অন্যতম যুক্তরাষ্ট্র, বৃটেন, পর্তুগাল এবং গ্রিস। এর ফলে নানা ক্ষেত্রে বিনিয়োগের সুযোগ পাওয়া যায়। একই সঙ্গে রিয়েল এস্টেট বাণিজ্য থেকে লোভনীয়, আকর্ষণীয় লাভ পাওয়া যায়। এ খবর দিয়েছে অনলাইন রেডিফ। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বেসরকারি বিনিয়োগ এবং পরামর্শ বিষয়ক প্রতিষ্ঠান এলসিআর ক্যাপিটাল পার্টনার্সের ভারতীয় সিনিয়র পরিচালক শিল্পা মেনন বলেছেন, করোনা ভাইরাস মহামারির প্রথম পর্যায়ে অভিবাসন কর্মসূচিতে ভাটা পড়ে।
এরপর এখন আবার আমরা দেখতে পাচ্ছি অধিক থেকে অধিক সংখ্যক পরিবার বসবাস এবং নাগরিকত্বের জন্য নানা বিকল্প মূল্যায়ন করছেন অথবা তারা বিদেশে বসবাসকে বেছে নিচ্ছেন। এক্ষেত্রে বেছে নেয়ার মতো প্রচুর সম্ভাবনা আছে। কিন্তু সঠিক বাছাই এবং বিনিয়োগের জন্য যথার্থ প্রকল্প হতে পারে অপ্রতিরোধ্য। একটি ভাল প্রকল্পে শক্তিশালী অভিবাসন বিষয়ক সুবিধা থাকবে। পাশাপাশি শক্তিশালী বিনিয়োগকারী সুরক্ষা ব্যবস্থাও থাকতে হয়।
মাত্র কয়েক বছর আগে, ভারতীয় বিনিয়োগ বিষয়ক অভিবাসন আবর্তিত হয়েছে অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বৃটেন এবং যুক্তরাষ্ট্রকে ঘিরে। কিন্তু বর্তমানে ইউরোপে বিনিয়োগের মাধ্যমে আবাসন কর্মসূচিতে আগ্রহ বৃদ্ধি পেয়েছে।
বৈশ্বিক আবাসন এবং নাগরিকত্ব পরিকল্পনা বিষয়ক প্রতিষ্ঠান হেনলে অ্যান্ড পার্টনার্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জুয়ের্গ স্টিফেন বলেন, বিকল্প আবাসন বা নাগরিকত্বের বিষয়ে বিনিয়োগকারীদের কাছে এটি একটি চালকের মতো আচরণ করে। এর অর্থ হলো এসব বিনিয়োগে ঝুঁকি অতিক্রম করা যায়। বাণিজ্যিক কার্যক্রম এবং ব্যবসা বাণিজ্যে প্রবৃদ্ধির জন্য ভারত হলো একটি গতিশীল স্থান। কিন্তু সম্পদ সংরক্ষণের দিক থেকে তা অনেকটাই কম। তিনি আরো বলেন, করোনা মহামারির ফলে অনাকাঙ্খিত আর্থিক সঙ্কট শুধু ভারত একাই মোকাবিলা করছে এমন নয়। এর আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে এমনভাবে গড়ে তোলা উচিত, যাতে দীর্ঘস্থায়ী হয় আস্থা। প্রজন্মের পর প্রজন্মের সম্পদ রক্ষায় দীর্ঘস্থায়ী সমাধান দিতে হবে।
ভাতুয়া শাহ অ্যান্ড কোং-এর অংশীদার যশেষ আশার বলেছেন, ধনী ব্যক্তি বা পরিবারের বাণিজ্যিক এবং ব্যক্তিগ উদ্দেশ্যগুলোর সঙ্গে যদি কর এবং নিয়ন্ত্রকের বিষয়গুলো একত্রিত করা হয়, তখন জটিলতা বাড়ে। যেসব মানুষ ইউরোপ চলে গিয়েছেন, তারা ভারতে ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে সক্ষম হবেন না। কারণ, এক্ষেত্রে দূরত্ব এবং সময় বড় ফ্যাক্টর। এ অবস্থায় ব্যবসায়ী কর্মকা- ভারতের বাইরে স্থানান্তর করাই তাদের কাছে উন্নত সম্ভাবনা হিসেবে দেখা দেয়। এর মধ্য দিয়ে তারা দেশের বাইরে আঞ্চলিক বাণিজ্যের প্রাণকেন্দ্রে অবদান রাখেন।
ভারতে একজন ব্যক্তিকে আবাসিক মর্যাদার জন্য ১২০ দিনের বেশি অবস্থান করার প্রয়োজন হয় না। তবে এ সময়ে যদি ওই ব্যক্তি ভারত থেকে ১৫ লাখ রুপির নিচে আয় করেন তাহলে তার জন্য এই সময় বেড়ে দাঁড়ায় ১৮১ দিন। যশেষ আশারের মতে, ট্যাক্স রেসিডেন্সি সার্টিফিকেট অর্জন হলো গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, তাকে অন্য দেশে আয়কর দিতে হয়। বৈশ্বিক যেসব ভ্রমণকারী বিভিন্ন দেশে অবস্থান করবেন তখন তার সময় বিধিনিষেধের ৩০ থেকে ৬০ দিনে বন্দি। এর ফলে তারা ওইসব দেশে আবাসিক মর্যাদার যে শর্ত তা পূরণে সক্ষম হবেন না। লিবারেলাইজড রেমিট্যান্স স্কিমের অধীনে আবাসিক যেকোনো বছরে ভারতের বাইরে আড়াই লাখ ডলার পাঠাতে পারেন।