বুধবার, ৭ মে ২০২৫
সীমান্তে বাড়ছে ভারতীয় বন্যহাতির তাণ্ডব ।
শেরপুর সীমান্তে ভারতীয় বন্যহাতির তাণ্ডবে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। হাতির দল সীমান্তের ওপার থেকে লোকালয়ে এসে নষ্ট করছে কৃষকের ক্ষেতের ধান, ফলের গাছ ও সবজি বাগান। বন্যহাতি আতঙ্কে ঘুম হারাম সীমান্ত এলাকার বাসিন্দাদের। এদিকে বনবিভাগ বলছে, সীমান্তে মনিটরিং কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে।
শেরপুরের শ্রীবরদী, ঝিনাইগাতী ও নালিতাবাড়ী উপজেলার সীমান্তঘেঁষা একটি আঞ্চলিক সড়কে স্বাচ্ছন্দ্য বিচরণ করছে এরা। দিনে-দুপুরে মানুষ চলাচলের রাস্তা দখল করে রাখছে অর্ধশতাধিক হাতির একটি দল।
এই তিন উপজেলার ২৫ কিলোমিটার পাহাড়ি অঞ্চলে এখন নিয়মিত বিচরণ করছে ওই বন্যহাতির দল। চালাচ্ছে তাণ্ডব। হাতির আক্রমণ থেকে জানমাল রক্ষায় রাতের পর রাত মশাল জালিয়ে পাহারা দিতে হচ্ছে এলাকাবাসীকে।
তবে সার্বক্ষণিক মনিটরিংয়ের ফলে গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার হাতির আক্রমণ কিছুটা কমেছে বলে দাবি বন বিভাগের কর্মকর্তাদের।
শেরপুর শ্রীবরদী বন বিভাগের বন কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম বলেন, হাতির দল বর্ডার রুট পার হয়ে সোনাঝুরি এলাকায় আসছে প্রায় ১৪ দিন। হাতিগুলোকে সার্বক্ষণিক পাহারা দিয়ে রাখতেছি।
সীমান্তের এই পাহাড়ি এলাকায় ৩০ বছর ধরেই চলছে হাতি ও মানুষের এই যুদ্ধ। অস্তিত্ব সংকটে থাকা এই প্রাণিটিকে বিরক্ত না করে রক্ষা করা গেলে বিশাল বনভূমি প্রাকৃতিকভাবেই রক্ষা পাবে বলে মনে করেন পরিবেশবিদরা।
শেরপুরের পরিবেশকর্মী দেবদাস চন্দ্র বাবু বলেন, হাতিদের তাড়া করা, ঢিল মারার কারণে তারা তেড়ে আসে। আর ওয়াইল্ড লাইফ ফটোগ্রাফার শাহানুল করিম বলেন, হাতি কিন্তু বাইরে এসে, জনবসতিতে এসে হামলা করছে না।
হাতির আবাসস্থল দখল করে মানুষের বিচরণের ফলে এই দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়েছে, এমনটাই ধারণা বিশেষজ্ঞদের। তবে, আপাতত হাতির অপছন্দের ফসল চাষাবাদ করেও তাদের আক্রমণ কমানো যেতে পারে বলে মত দিলেন এক প্রাণি বিশেষজ্ঞ।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মনিরুল খান বলেন, বন থাকুক বা না থাকুক, এই জায়গাগুলোতে মানুষের বসতি ও মানুষের চাষাবাদ থেকে দুরে রাখতে হবে।
বন বিভাগের তথ্য মতে, ২০১৪ সাল থেকে এ পর্যন্ত বন্যহাতির আক্রমণে মানুষ মারা গেছেন ২৩ জন এবং আহত হয়েছেন ২৭ জন। এ সময় হাতি মারা গেছে ২৪টি।