শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশটিতে বুধবার নতুন কোভিড শনাক্ত হয়েছে ৫৪ হাজার ৫১৭ জন, যা সেখানে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ দৈনিক শনাক্তের সংখ্যা।
বিশ্বের চতুর্থ সর্বাধিক জনবহুল দেশ ইন্দোনেশিয়ায় এ এক ভয়ানক সতর্কবার্তাই দিচ্ছে বলে জানিয়েছে সিএনএন।
এতদিন দৈনিক কোভিড সংক্রমণে শীর্ষে ছিল ভারত। এবার ২৭ কোটি মানুষের দেশ ইন্দোনেশিয়া সেই জায়গায় চলে এল।
বিশেষজ্ঞরা জানান, এই হারে শনাক্তের সংখ্যা বাড়তে থাকলে ইন্দোনেশিয়ার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা বিপর্যয়ের দ্বারপ্রান্তে চলে যেতে পারে।
অনেক মানুষ করোনাভাইরাস পরীক্ষার আওতায় না আসায় আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে এমন আশংকা করছেন অনেকে।
শনিবার প্রকাশিত একটি জরিপের ফল বলছে, রাজধানী জাকার্তার এক কোটি ছয় লাখ মানুষের প্রায় অর্ধেকই করোনাভাইরাসের সংস্পর্শে এসেছেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কঠোর লকডাউনের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন না করা এবং কার্যকর সংস্পর্শ-সন্ধান ব্যবস্থার জন্য যথেষ্ট বিনিয়োগ না করার মাশুল গুনছে ইন্দোনেশিয়া। দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী এর আগে সিএনএন-কে বলেন, ঠিক কত দ্রুত ভাইরাসটি ছড়িয়ে যাচ্ছে তা বুঝে উঠতে পারেনি কর্তৃপক্ষ।
এ হারে সংক্রমণ বাড়লে তা চাপ সৃষ্টি করবে হাসপাতালগুলোর ওপর, এমন শঙ্কা প্রকাশ করেছে কর্তৃপক্ষ। রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যম আনতারা নিউজ জানায়, ১ লাখ ২০ হাজার হাসপাতাল শয্যার ৯০ হাজারই এখন পরিপূর্ণ। জুন মাসের শেষ থেকে বেড়েছে অক্সিজেনের দাম।
কিছু কিছু হাসপাতালে অক্সিজেন শেষও হয়ে গেছে। জাভায় একটি হাসপাতালে অক্সিজেন শেষ হয়ে আসলে সেখানে একদিনে মারা যান ৬০ জন রোগী, তবে এদের সকলেই করোনাভাইরাস আক্রান্ত ছিলেন কি না তা নিশ্চিত করতে পারেননি হাসপাতালের মুখপাত্র।
করোনাভাইরাসের ডেল্টা ধরনের দাপটেই ইন্দোনেশিয়ায় সংক্রমণর এই চিত্র বলে ধারণা করা হচ্ছে। জুনেও ইন্দোনেশিয়ায় কোভিড সংক্রমণ কম ছিল। কিন্তু জুলাইয়ের শুরু থেকে পরিস্থিতি বদলাতে থাকে।
গত সপ্তাহ থেকে জনবহুল দুই দ্বীপ বালি এবং জাভায় আরোপ করা হয়েছে জরুরি লকডাউন। দেশটিতে মাত্র ৫.৫ শতাংশ মানুষ দুই ডোজ টিকা পেয়েছেন। তাদের মধ্যে জাকার্তায় ২০ লাখ মানুষ টিকা পেয়েছেন, যা শহরের মোট জনসংখ্যার ১৮ শতাংশ, জানায় স্বাস্থ্য অধিদফতর।
মঙ্গলবার কোভ্যাক্সের আওতায় ৩৫ লাখ ডোজ অ্যাস্ট্রজেনেকা টিকা পৌঁছেছে ইন্দোনেশিয়ায়। এখন পর্যন্ত কোভ্যাক্স প্রোগ্রামের আওতায় ১ কোটি ৪০ লাখ টিকা পৌঁছেছে দেশটিতে, জানায় রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম।
বুধবার করোনাভাইরাসে ইন্দোনেশিয়ায় মারা গেছেন ৯৯১ জন এবং এখন পর্যন্ত দেশটিতে মোট মৃত্যুর সংখ্যা ৬৯ হাজার ২১০ জন।