বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪
৪ মার্চ চুয়েটে অনুষ্ঠিত হলো “মোবাইল অ্যাপ গেম এন্ড জব ফেস্টিবাল- ২০২৩”। এতে শর্টলিস্টেড গেম এন্ড এপের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হয় ফেনীর ছেলে ফেনী বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই বিভাগের শিক্ষার্থী কাজী আরাফাতুল ইসলাম ইনসাফের Soldier of 52 গেম। এ সময় তার সাথে উপস্থিত ছিলো জিরোওয়ানল্যাবের এসোসিয়েট হাসিফ আহমেদ তামিম। প্লেস্টোরে এভেইলেবল Soldier of 52 গেমটি দেশে ও বিদেশের শিক্ষার্থীদের বাংলা শিখাতে তৈরি করা হয়েছে। ৭০টির বেশি আইডিয়ার মধ্যে ইনসাফের আইডিয়া প্রথম স্থান অধিকার করে।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জনাব জুনায়েদ আহমেদ পলক, এমপি মহোদয়। তিনি বলেন, “৪র্থ শিল্পবিপ্লবের এই ৪র্থ শিল্পবিল্পবের এই সময়ে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে মোবাইল অ্যাপ ও গেইম ইন্ডাস্ট্রি বিশাল অবদান রাখছে। তথ্যপ্রযুক্তি খাতে আমাদের বর্তমান রপ্তানি আয় প্রায় ১.৩ বিলিয়ন ডলার। ২০২৫ সালের মধ্যে সেটা ৫ বিলিয়ন ডলারে নিয়ে যেতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। বিশ্ব বাজারের উপযোগী করে মোবাইল অ্যাপ ও গেইম ইন্ডাস্ট্রি গড়ে তুলতে হবে।”
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন সমাজকর্মী ও তরুণ নেতৃত্ব ফারাজ করিম চৌধুরী, আইসিটি বিভাগের উপ-সচিব মোহাম্মদ মনির হোসেন, চুয়েটের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. মো. মোকাম্মেল হক, অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আইসিটি বিভাগের মোবাইল গেইম ও অ্যাপস শীর্ষক প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক জনাব মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন।
প্রথম স্থান অধিকারী ইনসাফ বলেন , “গেম ডেভেলপমেন্ট অনেক চ্যালেঞ্জিং একটি কাজ যেখানে আইডিয়েশন, স্টোরি মেকিং, ইলাস্ট্রেশন, কোডিং সবকিছুতেই ক্রিয়েটিভিটির প্রয়োজন পড়ে। পাশাপাশি এটি একটি দারুণ সম্ভাবনাময় সেক্টর, যেখানে লাখ লাখ তরুণের কর্মসংস্থান সম্ভব। সামনের দিনগুলোতে গেমের ব্যবহার আরো বাড়বে, তাই আমি বলবো যারা উদ্যোমী তরুণ আছেন, এখনই সময় নিজের স্কিলকে ডেভেলপ করার। ভবিষ্যৎ এ গেমটির আরো সংস্করণ আনার পরিকল্পনা রয়েছে। আর গার্ডিয়ানদের উদ্যেশ্যে বলবো, আপনার শিশুকে যদি গেম খেলতে দিতেই হয়, তাহলে Soldier of 52 -এর মতো নিরাপদ শিক্ষণীয় গেমগুলো দিবেন, আমরা চাই শিশুরা নিরাপদ গেম খেলে আনন্দের পাশাপাশি কিছু শিখুক।”
সমাজকর্মী ও তরুণ নেতৃত্ব জনাব ফারাজ করিম চৌধুরী তাঁর বক্তব্যে বলেন, “গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রির উপর ভর করে আমাদের অর্থনীতি আজকের এই পর্যায়ে এসেছে। কিন্তু যেসব দেশ রোবট বানিয়ে পুরো সিস্টেমকেই বদলে দিচ্ছে, যারা মানুষের ব্রেইনের বিকল্প তৈরিতে সক্ষমতা অর্জন করে ফেলেছে তাদের সাথে প্রতিযোগিতায় টিকতে আমরা কতটুকু সক্ষম সেটাও ভাবতে হবে। বিগত এক দশকের আগের মোবাইল অ্যাপ ও গেইমিং ইন্ডাস্ট্রি সম্পূর্ণ বদলে গেছে। প্রযুক্তি শেকড় এখন অনেকদূর এগিয়ে গেছে। আমাদেরকওে সেই গতিতে আগাতে হবে। সেজন্য দেশের মেধাবীদের যদি দেশে রাখতে পারি তবে দেশের প্রকৃত উন্নতি হবে। আমাদের দেশের মেধা বিদেশিরা কাজে লাগিয়ে এগিয়ে যাবে, সেটা কাম্য নয়।”
দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালায় “স্মার্ট ক্যারিয়ার উইথ অ্যাপ অ্যান্ড গেইম”, “দ্য রাইজ অব অ্যানিমেশন: অ্যাক্সপ্লোরিং দ্য ক্যারিয়ার”, “পিপল, ট্রেনিং অ্যান্ড টেকনোলজি”, “অ্যানিমেশন মুভি স্ক্রিনিং” এবং “প্রেজেন্টেশন অন শর্ট লিস্টেড গেইম অ্যান্ড অ্যাপ” শীর্ষক পৃথক পাঁচটি সেশন পরিচালিত হয়। উক্ত সেশনসমূহে বর্তমান বিশ্ববাজারের চাহিদা উপযোগী বিভিন্ন ধরনের মোবাইল অ্যাপ ও গেইম তৈরির লক্ষ্যে তরুণ প্রযুক্তিবিদ ও শিক্ষার্থীদেরকে দক্ষতা উন্নয়ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়।
এছাড়া জব ফেস্টিভ্যালে দেশের স্বনামধন্য ২০টি আইটি ও সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। যেখানে বিভিন্ন মোবাইল অ্যাপস, গেইম ও আইডিয়া নিয়ে আসা শিক্ষার্থীদের জীবন বৃত্তান্ত সংগ্রহ করেন প্রতিষ্ঠানগুলো। পাশাপাশি অংশগ্রহণকারীদের জন্য ছিল আকর্ষণীয় র্যাফেল ড্র।