বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫
পণ্য বা সেবা, লেনদেনের যেকোনো ক্ষেত্রে প্রতারিত হলে অভিযোগ করা যায় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে। সব ধরনের পণ্য বা সেবার অনিয়ম নিয়েই অভিযোগ করা যায় সেখানে। তবে ভোক্তারা সাধারণত বাছাই করা কিছু বিষয়েই অভিযোগ করেন। আবার যখন যে ধরনের অভিযোগ আসতে থাকে, দেখা যায় সে ধরনের অভিযোগই বেশি বেশি আসে। অন্যান্য বিষয়ের অভিযোগ আসে খুবই সামান্য। এক্ষেত্রে এক সময় মোবাইল অপারেটর এবং রাইড শেয়ারিংয়ের বিরুদ্ধে বেশি অভিযোগ আসলেও এখন সবচেয়ে বেশি অভিযোগ আসছে ই-কমার্স নিয়ে।
প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত অধিদপ্তরে অভিযোগ জমা পড়েছে ৫৬ হাজারের বেশি। সেসব অভিযোগ বিশ্লেষণে দেখা গেছে, শুরুর দিকে ভোক্তাদের অভিযোগের সবচেয়ে বড় প্রবণতাটি ছিল মোবাইল ফোন অপারেটরদের বিরুদ্ধে। যেখানে প্যাকেজের নামে প্রতারণা, প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সেবা না দেওয়া ও গ্রাহকের অজান্তে টাকা কেটে নেওয়ার অভিযোগ ছিল বেশি।
২০১৭ সালের পর সে ধারায় পরিবর্তন আসে। তখন বেশি অভিযোগ আসত অ্যাপভিত্তিক রাইড শেয়ারিংয়ের বিরুদ্ধে। এ ধরনের সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান ও তাদের চালকদের ভাড়া বেশি নেওয়াসহ বিভিন্ন অফার ও ছাড়ের প্যাকেজে অনিয়মের অভিযোগ এসেছে অহরহ।
এখন অভিযোগ বেশি ই-কমার্স শপগুলোর বিরুদ্ধে। সঠিক পণ্য না দেওয়া, প্রতিশ্রুত পণ্য না পাওয়া, রিফান্ড না পাওয়ার মতো অভিযোগই বেশি আসে এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। বিগত তিন বছরে নামি-বেনামি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এ ধরনের প্রায় ২০ হাজার অভিযোগ করেছেন ভোক্তারা।
তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এখনো বিভিন্ন সেবার ক্ষেত্রে অভিযোগ আসে। তবে তার পরিমাণ ই-কমার্সের অভিযোগের তুলনায় নগন্য।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রথম দুটি সেবায় অভিযোগ কমার সুনির্দিষ্ট কিছু কারণ রয়েছে। ২০১৭ সালে মোবাইল অপারেটর রবি আজিয়াটার এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মোবাইল অপারেটরদের বিষয়ে কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার ওপর স্থগিতাদেশ দেন উচ্চ আদালত। এরপর আর রিট আবেদনটির শুনানি হয়নি এখন পর্যন্ত। ফলে সে সময় ১ হাজার ৬০০টির বেশি অভিযোগ নিষ্পত্তির জন্য ঝুলে যায়। এরপর আর কোনো মোবাইল অপারেটরের বিরুদ্ধে অভিযোগের নিষ্পত্তি হয়নি। সেজন্য প্রতিকার না পেয়ে অভিযোগে অনিহা তৈরি হয়েছে।