শনিবার, ৩ মে ২০২৫
কিউকমের ফাঁদে, ২৫০ কোটি টাকা হারালেন গ্রাহক ।
ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান কিউকমের ডিসকাউন্টের ফাঁদে পড়ে আড়াইশ’ কোটি টাকা হারালেন শত শত গ্রাহক। বিজয় আওয়ার, স্বাধীনতা আওয়ার এবং বিগ বিলিয়ন- এ তিন ক্যাটাগরিতে গ্রাহকদের মোটরসাইকেল কেনার অফার দেয় প্রতিষ্ঠানটি।
ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান হিসেবে ২০২০ সালের শুরুর দিকে যাত্রা শুরু করে কিউকম। ডিসকাউন্টে ভোগ্যপণ্য থেকে শুরু করে লক্ষাধিক পণ্যের সমারোহ নিয়ে বাজারে আসা প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে গ্রাহকদের অভিযোগের শেষ নেই।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) এক শিক্ষার্থীর করা মামলায় প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রিপন মিয়াকে রোববার (৩ অক্টোবর) রাতে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। শুধু মোটরসাইকেলের অর্ডার বাবদ গ্রাহকদের প্রতিষ্ঠানটির কাছে পাওনা ২৫০ কোটি টাকা।
সোমবার (৪ অক্টোবর) দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রিপন দাবি করেছেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট গেটওয়ে ফস্টারের কাছে প্রতিষ্ঠানটির ৪০০ কোটি টাকা আটকে আছে। ফলে গ্রাহকদের টাকা কিংবা পণ্য কোনোটিই দিতে পারছেন না। যদিও তার এই অভিযোগ খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
তিনি বলেন, তারা প্রায় লক্ষাধিক পণ্য বিক্রি করে। তবে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, ৩৯৭ কোটি টাকা পেমেন্ট আটকে আছে শুধু মোটরসাইকেল বাবদ এবং জনগণও তার কাছ থেকে ২৫০ কোটি টাকার পণ্য পায়। করোনাকালে এ রকম বেশ কয়েকটি বড় বড় প্রতারণার ঘটনা ঘটেছে। সিস্টেমের মারপ্যাঁচে পড়ে জনগণ এখন ভুক্তভোগী হয়েছেন।
মালয়েশিয়ার পুত্রা ইউনিভার্সিটিতে মার্কেটিং নিয়ে পড়াশোনা করেছেন রিপন মিয়া। ইভ্যালির এমডি মোহাম্মদ রাসেলের সঙ্গে সুসম্পর্কের সুবাদে দেশে ফিরেই ইভ্যালির সঙ্গে কিছুদিন কাজ করেন। এরপর নিজেই নেমে পড়েন ব্যবসায়। প্রতিষ্ঠা করেন কিউকম।
ধামাকা অফার দিয়ে তিনি শুরু করেন অনলাইন ব্যবসা। তার কোম্পানিতে টেলিভিশন, ফ্রিজ ও মোটরসাইকেলের অফার দিত। কম মূল্যের কারণে তার প্রতিষ্ঠানে লোকজন হুমড়ি খেয়ে পড়তেন। পণ্যের মূল দামের সঙ্গে প্রায় ৭৫ ভাগ ছাড়ের ঘোষণা থাকত।
দেশে সম্প্রতি একাধিক ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। ইভ্যালির ঘটনার পর জানা গেল, পণ্য দেওয়ার নাম করে গ্রাহকের কোটি কোটি টাকা সংগ্রহ করেছে কিউকম। কিন্তু অনেক গ্রাহককে তারা পণ্য বুঝিয়ে দেয়নি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ফলে কিউকমের সন্দেহজনক লেনদেনের বিরুদ্ধে ছায়া তদন্ত শুরু করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।