বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪
পার্বত্য চট্টগ্রামে ট্রেন চালুর প্রকল্প গ্রহণ
কক্সবাজারের পর এবার পার্বত্য চট্টগ্রামে ট্রেন চালুর চিন্তা করছে সরকার। এ জন্য রেলপথ নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়ে কাজও শুরু করেছে। ফলে চট্টগ্রাম থেকে সবচেয়ে কাছের পার্বত্য অঞ্চল রাঙ্গামাটির কাপ্তাইয়ে যাবে প্রথম রেলপথ। পর্যায়ক্রমে বাকি অঞ্চলগুলোতেও রেল যোগাযোগ নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছে সরকার।
রেল কর্তৃপক্ষ জানায়, চট্টগ্রাম থেকে কাপ্তাই পর্যন্ত দূরত্ব হবে ৪২ কিলোমিটারের বেশি। এই দূরত্বের রেললাইন স্থাপনে প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকার প্রকল্পের প্রাথমিক প্রস্তাব তৈরি করা হয়েছে। এটি বাস্তবায়নের কাজ শুরু হলে পার্বত্য তিন জেলার মধ্যে কাপ্তাই সবার আগে রেল নেটওয়ার্কের মধ্যে আসবে।
প্রস্তাবিত ৪২ দশমিক ১৭ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই ডুয়েল গেজ রেললাইন নির্মাণে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৮ হাজার ৯২৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে ৭ হাজার ১৪১ কোটি টাকা এবং বাকি এক হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে জোগান দেওয়ার প্রাথমিক লক্ষ্যমাত্রা গ্রহণ করা হয়েছে।
অর্থায়ন নিশ্চিত হলে আগামী ২০২৬ সালের মধ্যেই এই প্রকল্পের কাজ শেষ করতে চায় রেল কর্তৃপক্ষ।
রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘পার্বত্য অঞ্চলে রেল সুবিধা পৌঁছে দিতেই এ উদ্যোগ। এ জন্য ‘জানালীহাট-চুয়েট-কাপ্তাই ডুয়েল গেজ সংযোগ রেললাইন নির্মাণ’ শীর্ষক একটি প্রকল্পে হাত নেওয়া হয়েছে।’
তবে এ জন্য বৈদেশিক অর্থায়নের প্রয়োজন রয়েছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী। বলেন, ‘বিদেশি অর্থায়ন পেতে প্রকল্পটির প্রয়োজনীয় দলিলাদি ইআরডিতে পাঠিয়েছি। ইআরডি অর্থায়নকারী সংস্থা ঠিক করে জানালে আমরা প্রকল্পটি চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য প্রস্তাব তৈরি করব।
প্রকল্পটি দুই পর্যায়ে বাস্তবায়নের প্রাথমিক পরিকল্পনা করছে মন্ত্রণালয়। প্রথম পর্যায়ে চট্টগ্রামের জানালীহাট থেকে চুয়েট পর্যন্ত ১৪ দশমিক ৩১ কিলোমিটার এবং দ্বিতীয় পর্যায়ে চুয়েট থেকে কাপ্তাই পর্যন্ত ২৭ দশমিক ৮৬ কিলোমিটার।
পিডিপিপি অনুযায়ী প্রথম অংশের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ হাজার ১৪২ কোটি টাকা। দ্বিতীয় অংশের জন্য মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ হাজার ৭৮৪ কোটি টাকা।
রেল কর্মকর্তারা জানান, দুর্গম পাহাড়ি এলাকার উৎপাদিত পণ্য সহজে চট্টগ্রাম শহরে নিয়ে আসার জন্য এবং পর্যটকদের যাতায়াতকে সহজ করতেই চট্টগ্রাম থেকে কাপ্তাই পর্যন্ত রেল যোগাযোগ স্থাপনের এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
রেল বিভাগের প্রধান পরিকল্পনা কর্মকর্তা এসএম সলিমুল্লাহ বাহার সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘ওই রুটে দেশের গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চুয়েট অবস্থিত। সব মিলিয়ে কাপ্তাই, রাঙ্গুনিয়া ও পার্বত্য এলাকার মানুষকে রেল সেবা দেওয়ার পরকিল্পনার অংশ হিসেবেই প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়েছে।’
রেল মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, প্রকল্পটির জন্য মোট ৬৪০ একর জমি অধিগ্রহণ করতে হবে। বর্তমানে অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণে তিন গুণ অর্থ দিতে হয়। এই খাতেই বড় অঙ্কের টাকা ব্যয় হবে। এ ছাড়া প্রকল্পটির আওতায় ৩টি রেলসেতু, ২৫টি কালভার্ট এবং ৯টি স্টেশন নির্মাণ করতে হবে।
সূত্র: সময় নিউজ