মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২৪
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট পদত্যাগ করেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর থেকে অনেকটাই জনরোষের মুখে পড়েছে তার দলের নেতাকর্মীরা। এমনকি গত ১০ নভেম্বর ঢাকায় সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছিল তৎকালীন ক্ষমতাশীল দল আওয়ামী লীগ। ফলে সেদিন জনরোষের মুখে পড়েছেন দলের একাধিক কর্মী। এবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ব্রিফিংয়ে সভা-সমাবেশের বিষয়টি উঠে এসেছে।
গত ১০ নভেম্বরের বিষয়টি উল্লেখ করে ব্রিফিংয়ে জানতে চাওয়া হয় যে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের কী বার্তা? সরকারের সমর্থকরাও এর আগে বাক স্বাধীনতা ও সমাবেশের পক্ষে কথা বলেছেন।
জবাবে পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রধান উপ-মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল বলেন, আমরা ভিন্নমত ও বিরোধী কণ্ঠস্বরসহ মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশের প্রতি সমর্থন জানায়। যে কোনো গণতন্ত্রের জন্য এগুলো এগুলো অত্যন্ত জরুরি। আমরা অন্তর্বর্তী সরকারসহ আমাদের সকল অংশীদারদের এটি সমর্থনের আহ্বান জানায়। সত্যিকার গণতান্ত্রিক ভবিষ্যত নিশ্চিত করতে সকল বাংলাদেশির জন্য এসব স্বাধীনতা সমুন্নত রাখা এবং রক্ষা করা অপরিহার্য।
ব্রিফিংয়ে অ্যাসোসিয়েট প্রেসের (এপি) ব্যুরো চিফসহ সম্প্রতি বাংলাদেশে ১৮৪ সাংবাদিকের অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড বাতিলের বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। জানতে চাওয়া হয়েছে, এমন পরিস্থিতিতে সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষায় সংবাদপত্রের স্বাধীনতার জন্য যুক্তরাষ্ট্র কী ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে? সম্প্রতি সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষায় কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্ট (সিপিজে) অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে চিঠি দিয়েছে। এ বিষয়ে আপনার মন্তব্য কী?
জবাবে দপ্তরের প্রধান উপ-মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল বলেন, বিষয়টি আমি এখনো দেখিনি। যদি এমনটি হয় তবে তা দুঃখজনক। আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি হলো বাংলাদেশসহ যে কোনো দেশের পরিস্থিতি তুলে ধরার জন্য সংবাদপত্রের স্বাধীনতা অত্যাবশ্যক। প্রেসিডেন্ট ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা গুরুত্বপূর্ণ। আমরা সাংবাদিকদের অধিকার এবং স্বাধীনতা যথাযথভাবে সম্মান করার বিষয়টি উত্সাহিত করব এবং এটি নিশ্চিত করতে চাই।
এর আগে বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে)। সোমবার (১১ নভেম্বর) ই-মেইলে পাঠানো এক চিঠিতে এ আহ্বান জানান বিশ্বজুড়ে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে কাজ করা সিপিজের সিইও জোডি গিনসবার্গ।
সিপিজের নিজস্ব ওয়েবসাইটেও প্রকাশিত চিঠিতে বলা হয়, গত ৪ নভেম্বর বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয় আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ২০০৩ সালে পাস হওয়া সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিলের যে ঘোষণা দিয়েছে, তাকে স্বাগত জানানো হয়। এ ছাড়া প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. ইউনূসের বিভিন্ন কাজের প্রশংসা করে সিপিজের সিইও বাংলাদেশের সংবিধান এবং নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকারবিষয়ক আন্তর্জাতিক সনদে যেসব মৌলিক অধিকার রয়েছে, সেগুলো রক্ষায় পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষায় বাধ্যবাধকতাকে ক্ষুণ্ন করে, এমন সব আইন অবিলম্বে স্থগিত করারও আহ্বান জানানো হয়।