বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪
‘অনেকেই বলছেন, এক বিশেষ কারণে ঈশ্বর আমার জীবন বাঁচিয়েছেন। এ দেশকে রক্ষা ও এর হৃতগৌরব পুনরুদ্ধারের জন্য’—আততায়ীর বুলেটে কানের চামড়া ছিঁড়ে গেলেও অলৌকিকভাবে ডোনাল্ড ট্রাম্প রক্ষা পেয়েছিলেন। বিজয়ের মুহূর্তে সমর্থকদের এ ঘটনা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন— ‘নিজেদের দেশ আজ ফেরত পেলেন। দিনটি উদযাপন করুন।’
২০১৬ সালে ট্রাম্প সবাইকে হতবাক করে প্রথমবার প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন। শোনা যায়, তিনি নিজেও বিশ্বাস করতে পারছিলেন না। কিন্তু ভোটের হিসাবে পিছিয়ে থেকেও ইলেকটোরাল কলেজ জেতার সুবাদে ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে প্রবেশাধিকার পেয়ে যান। গত ১৬ বছরের ১২ বছর ডেমোক্র্যাটরা হোয়াইট হাউস দখলে রেখেছিলেন। শীতল যুদ্ধের অবসানের পর ১৯৯২ থেকে গত ৩২ বছরে মাত্র একবার রিপাবলিকানরা জাতীয় ভিত্তিক ভোটের হিসাবে ডেমোক্র্যাটদের পেছনে ফেলতে পেরেছেন। কিন্তু এবার জাতীয় ভোটে ট্রাম্পের অংশ হচ্ছে ৫০.৭ শতাংশ, কমলা ৪৭.৭ শতাংশ। রিপাবলিকানদের ভোট শুধু রেড স্টেটে বৃদ্ধি পায়নি, ডেমোক্র্যাটদের ঘাঁটি নীল স্টেটেও প্রবণতা একই। ডোনাল্ড ট্রাম্পের এবারের জয় রাজনৈতিক দিক পরিবর্তনের ইঙ্গিত আছে। ডেমোক্র্যাটদের জন্য অশনিসংকেত হচ্ছে হিস্পানি ও কালোদের মধ্যে তাদের একচেটিয়া সমর্থনের নিরেট দেয়ালে ভাঙন ধরেছে। ট্রাম্প সেখানে হানা দিয়েছেন। কালো ও বাদামি জনগোষ্ঠীর মধ্যে রিপাবলিকান পার্টির ভোট কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। অথচ ডেমোক্র্যাটরা এদের অধিকারের মুখপাত্র। তাদের স্লোগান বৈচিত্র্য, সমতা ও অন্তর্ভুক্তি, যার অর্থ কালো-বাদামি-আদিবাসী-অভিবাসী এবং নারী, তৃতীয় লিঙ্গ ও সমকামী, উভকামী, বৈচিত্র্যকামীদের সমনাগরিক অধিকার ও সমাজের মূল স্রোতে জায়গা করে দেওয়া এবং সেই লক্ষ্যে ইতিবাচক বিশেষ পদক্ষেপ (affirmative action)। এটি বিচিত্র সামাজিক শক্তিগুলোর একটি রংধনু জোট, নির্বাচনী রাজনীতিতেও জেতার মতো সমীকরণ। এতদিন অন্তত তাই দেখা গেছে।
কিন্তু সংস্কৃতির যুদ্ধ ও মতাদর্শগত লড়াই অযৌক্তিক ও অসহিষ্ণুতার পর্যায়ে এসে ঠেকেছে। এ রাজনীতি ক্রমেই ধার হারিয়ে ভোঁতা হয়ে গেছে। ডেমোক্র্যাটরা এটিকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে গড়পড়তা মানুষের প্রাত্যহিক জীবনের আবশ্যিক প্রয়োজন ও বাঁচার লড়াই সম্পর্কে সম্পূর্ণ ভুলে গেছেন। আর্থসামাজিক বাস্তবতার সঙ্গে তারা যোগাযোগশূন্য, সম্পর্কহীন ও বাস্তবতাবিবর্জিত। কমলা এরই শিকার।
যুক্তরাষ্ট্রে সামাজিক বৈষম্য বেড়েই চলেছে। এর কারণ নয়া উদারতাবাদী অর্থনৈতিক নীতি। রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যান শুরু করেছিলেন। নব্বইয়ের দশকে বিল ক্লিনটনের সময় থেকে ডেমোক্র্যাটরাও মার্কেট ফান্ডামেন্টালিজম বা ‘রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপমুক্ত বাজার অর্থনীতি’কে আলিঙ্গন করলেন। তাদেরও জপমালা হলো ‘উন্মুক্ত বাজার, ব্যক্তি খাতের সম্প্রসারণ, বিশ্বায়ন ও বাণিজ্য। অফশোরিংয়ের নামে যুক্তরাষ্ট্রের শিল্পকারখানা সাগর পাড়ি দিয়েছে, আউটসোর্সিং বা কাজ হস্তান্তরিত হয়েছে ঠিকাদারদের কাছে, কর্মী ও শ্রমিকদের ব্যাপকহারে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। শ্রমিক ইউনিয়নগুলো ভেঙে পড়েছে বা দুর্বল হয়েছে। গৃহনির্মাণ শিল্প নিয়ে ফটকা ব্যবসার কারণে বাড়ির দাম আকাশচুম্বী। স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা, উচ্চশিক্ষা, গণযোগাযোগ ও যাতায়াত অবকাঠামো ব্যক্তি খাতে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। দ্রব্যমূল্য বেড়েছে ফি বছর, কিন্তু মজুরি স্থির বা কমেছে। মধ্যবিত্ত ও শ্রমিকশ্রেণির ওপর অর্থনৈতিক চাপ বেড়েছে। বাড়ির মর্টগেজ, গাড়ির ইনস্টলমেন্ট, ইন্স্যুরেন্স, গ্যাস, কাঁচা বাজার, মুদির খরচা, ক্রেডিট কার্ডের বিল ইত্যাদি পরিশোধ নিয়ে টানাপড়েনে জীবন অতিষ্ঠ। সপ্তাহান্তের পে চেক একমাত্র ভরসা, একটি পে চেক থেকে আরেকটি পে চেকের দিকে তাকিয়ে থেকে জীবন সামনে গড়ায়। ছুটিছাটা, অবকাশযাপন, পরিচিতজনদের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ ক্রমেই সংকুচিত। কাজের নিশ্চয়তা নেই, কাজ না থাকলে সংসারজীবনের নিশ্চয়তা উধাও। যুক্তরাষ্ট্রে বর্তমান প্রজন্মের মানুষদের অধিকাংশই আশা করেন না যে, তাদের সন্তানদের জীবন ব্যতিক্রম কিছু হবে। তাদের আশঙ্কা, হয়তো আরও খারাপ দিন সামনে অপেক্ষা করে আছে। অথচ এই একই সময়ে করপোরেট মুনাফা ও শেয়ার মার্কেটে স্টকের মূল্য ধাই ধাই করে বেড়েছে কয়েকশ গুণ, অর্থনীতি কয়েক গুণ বড় হয়েছে, সিইও এবং কর্মকর্তাদের বেতন বৃদ্ধি পেয়েছে কয়েক হাজার গুণ, বিলিয়নিয়ার তৈরি হয়েছে কয়েকশ। কিন্তু গড়পড়তা মানুষ এই সমৃদ্ধির অংশীদার নন, তাদের জীবন মান নিম্নগামী, একটু একটু করে পড়ে যাচ্ছে প্রতিদিন।
কভিডের সময় সরকার জনসাধারণকে আর্থিক সহায়তা দিয়েছিল। তুলনামূলকভাবে খরচ ও দ্রব্যমূল্য ছিল কম। এই প্রথম অনেকের ব্যাংক হিসাবে বাড়তি টাকা জমা হয়েছিল। কিন্তু বাইডেন প্রশাসনের চার বছরে প্রতি তিন মাস পরপর আর্থিক কোয়ার্টারে দ্রব্যমূল্য লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে প্রায় ৭.৫ শতাংশ হারে। সে টাকা বাজারে হাত ঘুরে করপোরেট মুনাফায় রূপান্তরিত হয়েছে। ব্যাংক হিসাবে পুনরায় জমার ঘরে শূন্য, ক্রেডিট কার্ডের বিল পরিশোধ করা যাচ্ছে না। ডেমোক্র্যাটরা জনগণকে তাদের কৃতিত্বের গল্প শুনিয়ে চলেছেন, ‘কভিড-পরবর্তী অর্থনীতির ত্বরিত পুনরুদ্ধার, অর্থনীতির দ্রুত প্রবৃদ্ধি, কর্মহীন মানুষের সংখ্যা হ্রাসে রেকর্ড এবং মজুরি বৃদ্ধি।’ যে গল্পের সঙ্গে হিস্পানি বা এশিয়ান, বাদামি, কালো বা ধলা রঙের সাধারণ মানুষদের জীবনের কোনো মিল নেই, তাদের জীবনে যে সংখ্যাতত্ত্ব অর্থহীন। ডেমোক্র্যাটরা গলা ফাটিয়েছেন, বিশ্বব্যাপী গণতন্ত্রের বিপর্যয়, রাশিয়া বুঝিবা ইউক্রেনকে গিলে ফেলে। গেল গেল রব তুলে ইউক্রেন রক্ষায় কাঁড়ি কাঁড়ি অর্থ এবং দামি যুদ্ধাস্ত্র ও সরঞ্জাম পাঠিয়েছেন।
ইসরায়েল গাজায় সামরিক অভিযান চালিয়েছে। টিভির পর্দায় ভেসে বেড়াচ্ছে একাকী শিশুর মুখচ্ছবি। গোটা পরিবার বোমার আঘাতে হতাহত, বিধ্বস্ত বসতবাড়ি, দেয়াল ভেঙে পড়েছে। দুজন বুড়োবুড়ি, সাতটি সন্তানের সবকটিকে একসঙ্গে মুহূর্তের মধ্যে হারিয়েছেন। অশ্রুসজল আয়ত নয়ন নারীর গেছে স্বামী-সন্তান, সাজানো সংসার। আহত মানুষদের নিয়ে হুড়োহুড়ি, ধ্বংসস্তূপের মধ্যে আপনজনদের লাশ খুঁজে ফিরছে মানুষ। মাটিতে সারি সারি কফিন। রক্ষা পায়নি স্কুল, উদবাস্তু শিবির, হাসপাতাল, অবকাঠামো। হাতির শুঁড়ের মতো ঊর্ধ্বগামী ধোঁয়ার কালো মেঘে আকাশ ঢাকা পড়েছে। নেতানিয়াহুকে গণহত্যায় বাধা দেওয়া বা থামানো নয়, ইসরায়েলের নিরাপত্তা নিয়ে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত বাইডেন দায়িত্ব নিয়েছেন তাকে সশস্ত্র করার। অবশ্য আমেরিকান জনগণের ট্যাক্সের টাকায়। লিবারেল আমেরিকার মুখোশ খসে পড়েছে, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার শূন্যগর্ভ ফাঁপা বুলি। ডেমোক্র্যাটদের নির্ভরযোগ্য ভোটার তরুণ যুবা ও মুসলমানরা ক্ষুব্ধ। মিশিগান ও পেনসিলভানিয়ার ভোটে তার প্রতিফলন।
ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষোভ, বঞ্চনা, ঘৃণা ও ক্রোধের আগুনে ঘি ঢেলেছেন। তিনি বলেছেন, ‘ডেমোক্র্যাটরা হচ্ছে শিক্ষিত এলিট, উচ্চবিত্ত। ওয়াশিংটনে ফেডারেল আমলাতন্ত্র ওদের দখলে। ওরা জ্ঞান ও বুদ্ধির বড়াই করে, ওরা নাকি বিশেষজ্ঞ, টেকনোক্র্যাট। যারা কারখানা ও খনিতে কাজ করে তারা মূর্খ, অশিক্ষিত, সাদা আবর্জনা (white trash)। গাঁ-গেরামের মানুষদের বলে চাষাভুষা, রেড নেক। ওরা আমাদের হাইকোর্ট দেখায়। অথচ আমরা হচ্ছি প্রকৃত আমেরিকান, এই দেশের মালিক, কয়েক পুরুষের বসবাস।’ অতঃপর উনি আঙুল তুলে ইঙ্গিত করেছেন দেশের দক্ষিণ সীমান্তের দিকে। ‘লাখ লাখ লোক জড়ো হয়েছে। ওরা কারা? আফ্রিকা, এশিয়া, লাতিন আমেরিকা ও সেন্ট্রাল আমেরিকার নোংরা গর্তের মতো দেশ থেকে যত সব দাগি আসামি, খুনি, সিরিয়াল কিলার, সন্ত্রাসীকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে আমেরিকার সীমান্তে। গ্লোবালিস্ট টেকনোক্র্যাট ডেমোক্র্যাট বাইডেন-কমলা আমাদের কারখানা কাজ সব দেশের বাইরে পাঠিয়েছে। এখন এদের আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন এই দেশে। যাতে তাদের ভোট সংখ্যা বাড়ে, দুর্নীতিবাজ ডেমোক্র্যাটদের ক্ষমতা চিরস্থায়ী হয়। আমি মেক্সিকো সীমান্তের পুরোটা দেয়াল দিয়ে ঘিরে দেব। একজনও যেন ঢুকতে না পারে। দেশে এক কোটি অবৈধ অভিবাসী। তাদের প্রত্যেককে আমি ঘাড় ধরে বের করে দেব। এরা আপনাদের কাজ ও মজুরি চুরি করছে। আপনাদের রক্ত পানি করা ট্যাক্সের টাকা কাদের পেছনে খরচ হয়? সরকার এদের দুই হাতে টাকা বিলায়। এরা এ দেশে ফুড স্ট্যাম্প, অক্ষম ভাতার টাকায় দিব্যি আরামে বসে বসে খায়, ঘুরে বেড়ায়। আমি ক্ষমতায় গেলে আপনাদের ট্যাক্স দিতে হবে না। আমাদের সব কলকারখানা চীন এবং মেক্সিকোয় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাদের পণ্যে আমেরিকার বাজার সয়লাব। আমি চীন ও মেক্সিকোর ওপর ট্যারিফ বসাব, কানাডা, ইউরোপও বাদ যাবে না। সবাই আমাদের ঠকিয়ে খাচ্ছে। আমি সরকারের বাহুল্য খরচ ও অপচয় কমাব। ট্যারিফের টাকায় দেশ বেশ চলবে। আমি করপোরেট ট্যাক্স কমাব, যাতে দেশের ভেতরের শিল্পকারখানাগুলো সুরক্ষা পায়। ট্যাক্সের চাপে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে দেশের যেসব শিল্প-কারখানা বিদেশে চলে গিয়েছিল, তারা যেন ফেরত আসে। আপনাদের কাজের অভাব না হয় এবং মজুরি বাড়ে।’
নির্বাচনী প্রচারণার শুরুতে কমলা জনগণের অর্থনৈতিক ইস্যুতে মুখ খুলেছিলেন। তিনি মূল্যবৃদ্ধির জন্য দায়ী করপোরেটগুলোকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম নিয়ে নয়ছয় করলে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে পণ্যের দাম বেঁধে দেবেন। করোনার সময়ে চালু শিশু ও অল্প বয়স্কদের জন্য ট্যাক্স ক্রেডিট পুনরায় চালু করবেন। প্রথমবার বাড়ি কেনার জন্য ২৫ হাজার ডলার নগদ আর্থিক সহায়তা দেবেন। বয়স্কদের বাড়িতে দেখাশোনার বিষয়টি সরকারি বীমা মেডিকেয়ারের কভারেজের অন্তর্ভুক্ত করবেন। যেসব প্রতিষ্ঠান শেয়ারবাজারে মিলিয়ন ডলারের বেশি মুনাফা করবে তাদের ওপর উঁচু হারে ক্যাপিটাল গেইন ট্যাক্স ধার্য করবেন। কিন্তু কিছুদিন না যেতেই কমলা তার দেবর উবারের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট ডেরেক অ্যান্থনি ওয়েস্ট এবং ওয়ালস্ট্রিটের বিলিয়নেয়ার ব্যবসায়ী ঘনিষ্ঠ বন্ধু মার্ক কিউবানের পরামর্শে এসব বিষয়ে চুপ মেরে যান। এর পরিবর্তে নির্বাচনী ইস্যু হিসেবে গর্ভপাত এবং ‘মার্কিন গণতন্ত্রের জন্য ডোনাল্ড ট্রাম্প সবচেয়ে বড় হুমকি’ এ প্রচারণায় মনোনিবেশ করেন। দোদুল্যমান ভোটারদের টানার জন্য তিনি সফরসঙ্গী হিসেবে ট্রাম্পবিরোধী রিপাবলিকান নেতা লিজ চেনিকে সঙ্গে নেন। কিন্তু শ্রমজীবী জনগণের কাছে জনপ্রিয় ও শ্রদ্ধেয় প্রগতিশীল নেতা বার্নি স্যান্ডার্সকে দূরে রাখেন। কমলার এ দুর্বলতার পূর্ণ সদ্ব্যবহার করেছেন ট্রাম্প। তিনি ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলাকে বাইডেনের সঙ্গে ব্র্যাকেট বন্দি করে বলতে থাকেন, ‘ইউক্রেন যুদ্ধের ফল হচ্ছে বাইডেন-কমলা মূল্যস্ফীতি। দেশের মানুষকে বিপদগ্রস্ত করে তারা ইউক্রেনের পেছনে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার খরচ করছেন। স্মরণ করুন, আমি যখন প্রেসিডেন্ট ছিলাম গ্যাসের দাম কত ছিল, এখন কত? কাঁচা বাজারে একশ ডলারে কী কিনতে পেতেন, এখন কী অবস্থা?’ বার্নি স্যান্ডার্সের মন্তব্য হচ্ছে, ‘ট্রাম্প অর্থনীতি নিয়ে কথা বলেছেন। যেমন তেমন হলেও সমস্যার সমাধান হাজির করেছেন। কমলা অর্থনৈতিক ইস্যু এড়িয়ে গেছেন। ডেমোক্রেটিক পার্টিকে এ ভুলের মাশুল গুনতে হচ্ছে।’
ডেমোক্র্যাটদের সর্বজনগ্রাহ্য নেতা সাবেক স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি বাইডেনের সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, প্রেসিডেন্ট যদি আরও কিছুদিন আগেই নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতেন, তাহলে প্রার্থিতার দৌড়ে আমরা অনেককে পেতাম। সবাই মনে করত মাঠ উন্মুক্ত। সে ক্ষেত্রে প্রাথমিক প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া যেতে পারে। …কিন্তু কী আর করা, যা ঘটেছে সেটি অস্বীকার করা যাবে না। মেনে নেওয়া ছাড়া উপায় কী?
কমলার বার্তা ছিল, ডোনাল্ড ট্রাম্প ফ্যাসিস্ট, একনায়ক, বর্ণবাদী। এ নির্বাচনে আমেরিকার গণতন্ত্রের ভাগ্য নির্ধারিত হবে। নীচুতলার মানুষ সেটি উপেক্ষা করেছে। তাদের ভাবনা মাসিক আয়-ব্যয়ের হিসাব, ডাইনিং টেবিলে খাবারের সংস্থান। হিস্পানি, লাতিনো, কালো ও এশিয়ানরা ডোনাল্ড ট্রাম্পের দিকে ঝুঁকেছেন। তিনি শক্ত মানুষ। দেখা যাক না কী করেন। তিনিই হয়তো আমাদের সমস্যার সমাধান। গায়ের রং যাই হোক, ওরাও তো কাজ করেই খায়।