বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪
মসজিদে আকসা ইসলামের তৃতীয় পবিত্রতম স্থাপনা। যাকে মসজিদুল আকসা, আল-কুদস, আল-আকসা মসজিদ বা বায়তুল মুকাদ্দাস বলা হয়ে থাকে। মুসলমানদের প্রথম কিবলা এই মসজিদ। আল-আকসায় ওজু করে এখান থেকেই মিরাজে গিয়েছিলেন শেষ নবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম। ইসলামে তাই মসজিদুল হারাম ও মসজিদে নববীর পরই আল-আকসার অবস্থান।
ঐতিহাসিক এই মসজিদ জেরুজালেমে অবস্থিত। এতে ২টি বড় এবং ১০টি ছোট গম্বুজ রয়েছে। আল আকসা নির্মাণের বিভিন্ন পর্যায়ে স্বর্ণ, সিসা ও মার্বেল পাথর ব্যবহার করা হয়েছে। এর আয়তন সাড়ে তিন হাজার বর্গমিটার। মসজিদটি ৩৫ একর জমির ওপর নির্মিত। এর নির্মাণশৈলী মুসলিম ঐতিহ্যের রাজসাক্ষী।
যতদূর জানা যায়, ফেরেশতাদের মাধ্যমে অথবা প্রথম মানব ও নবী হজরত আদম আলাইয়ে ওয়া সাল্লামের কোন সন্তানের মাধ্যমে আল-আকসা সর্বপ্রথম নির্মিত হয়। হাদিস থেকে জানা যায়, এটি কাবা শরীফ নির্মাণের চল্লিশ বছর পর নির্মিত। হজরত ইয়াকুব আ. কে আল্লাহতাআলা নির্দেশ দিলে তিনি তা পুননির্মাণ করেন। তার প্রায় হাজার বছর পর হজরত দাউদ আ. এর পুনর্নির্মাণ শুরু করেন। যদিও তিনি তা শেষ করতে পারেননি। তার ছেলে হজরত সুলাইমান আ.-এর হাতে বায়তুল মুকাদ্দাসের সংস্কার শেষ হয়।
পবিত্র কোরআনের ভাষ্য অনুযায়ী, মানুষের পাশাপাশি জিনরাও হযরত সুলাইমান আ. এর অনুগত ছিলেন। তাদের মধ্যে অনেক দুষ্ট জিনও বেড়িবদ্ধ অবস্থায় নির্দেশ মেনে চলত। তাদের মাধ্যমে আল-আকসা পুনর্নির্মাণ ও সংস্কার করা হয়।
নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ারে আগেই হজরত সুলাইমান (আ.)-এর মৃত্যুর সময় চলে আসে। আল্লাহর নির্দেশে হজরত সুলাইমান (আ.) কাচের মেহরাবে মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত হন। লাঠিতে ভর করে দাঁড়িয়ে বা বসে থাকা অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। মসজিদুল আকসা নির্মাণ শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত নবীর দেহ পচেনি, পড়েও যায়নি। দুষ্ট জিনেরা ভয়ে কাছেও যায়নি। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ বলেন, ‘যখন আমি সুলাইমানের মৃত্যু ঘটালাম, তখন ঘুনপোকাই জিনদেরকে তার মৃত্যু সম্পর্কে অবহিত করল। হযরত সুলাইমানের লাঠি খেয়ে যাচ্ছিল। অতঃপর যখন তিনি মাটিতে পড়ে গেলেন, তখন জিনেরা বুঝতে পারল যে, যদি তারা অদৃশ্য বিষয় জানতো, তাহলে তারা এই হাড়ভাঙ্গা খাটুনির আজাবের মধ্যে আবদ্ধ থাকত না।
এভাবেই আল্লাহর আদেশে জিনদের মাধ্যমে নির্মিত হয় আল-আকসা মসজিদ।