বুধবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৪
এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মুন্সীগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাজেরা বেগম নামক এক নারীর মৃত্যু হয়েছে।
রোববার (৩ নভেম্বর) বেলা ১২টার দিকে ওই রোগীর মৃত্যু হয়। পরে তার মৃত্যুর খবরে হাসপাতালে ছুটে আসেন স্বজনরা। এ সময় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ এনে নার্স ও কর্মীদের মারধর করেছেন স্বজনরা। এতে দুইজন নার্সসহ চারজন আহত হন।
মৃত হাজেরা বেগম মুন্সীগঞ্জ মিরকাদিম পৌরসভার পশ্চিমপাড়া গ্রামের মোশারফ হোসেনের স্ত্রী।
মৃতের স্বজনরা অভিযোগ করেন, শনিবার (২ নভেম্বর) বিকেলে হাজেরা বেগমকে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে এলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি রাখার পরামর্শ দেন কর্তৃপক্ষ। কিন্তু হাসপাতালে ভর্তির পর রোগীকে যথাযথ চিকিৎসা দিতে অবহেলা করা করে তারা। হাসপাতালের নার্স ও অন্যান্য স্টাফরা যথাযথ সেবা প্রদান করেনি। এ কারণে রোগীর মৃত্যু হয়েছে।এ বিষয়ে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আবু হেনা মোহাম্মদ জামাল জানান, হাসপাতালে বর্তমানে রোগীর চাপ অনেক বেশি। কর্মীরা তাদের সাধ্যের মধ্যে সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। তবুও যেহেতু স্বজনদের অভিযোগ রয়েছে তাই ঘটনা তদন্তে হাসপাতালের কার্ডিওলজি কনসালটেন্ট ডা. মাহমুদুল হাসানকে প্রধান করে চার সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এ ছাড়া হাসপাতালের নার্স ও কর্মীদের মারধরের ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ করা হবে বলেও জানান তিনি।
বর্তমানে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ৩৫ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ভর্তি রয়েছে।
প্রসঙ্গত ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে শুক্রবার (১ নভেম্বর) সকাল ৮টা থেকে শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। চলতি বছর এক দিনে ডেঙ্গুতে এটি সর্বোচ্চ সংখ্যায় মৃত্যু হলো। এসময়ে দেশে এ রোগ নিয়ে আরও ৯৬৬ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাদের নিয়ে এ বছর ভর্তি রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৩ হাজার ১৬৫ জনে।
সাধারণত নভেম্বরে ডেঙ্গুজ্বরে সংক্রমণ কমে যায়। আর সংক্রমণ কমে আসার ফলে কমে যায় মৃত্যুর সংখ্যাও। কিন্তু চলতি মাসের শুরুতেই মৃত্যুর এই ঊর্ধ্বগতি জনস্বাস্থ্যবিদ এবং চিকিৎসকদের ভাবিয়ে তুলেছে। অক্টোবরজুড়ে ডেঙ্গুতে সংক্রমণ বেশি থাকার কারণে এ রোগে আক্রান্ত হওয়া জটিল রোগীদের মৃত্যু হচ্ছে। এখন সংক্রমণ কমাতে যেমন তৎপরতা দরকার, তেমনি দরকার চিকিৎসাব্যবস্থা আরও ঢেলে সাজানো।
২০২৩ সালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সবচেয়ে বেশি ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়। এ রোগে সবচেয়ে বেশি ১৭০৫ জনের মৃত্যুও হয় ওই বছর।