মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪

উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে সংস্কার চাই…..

উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে সংস্কার চাই

বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। দেশের সর্বস্তরের শিক্ষাকে সব স্তরের জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়ার উদ্দেশ্যে জাতীয় সংসদ কর্তৃক প্রণীত আইন অনুযায়ী ১৯৯২ সালের ২১ অক্টোবর বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাউবি) জন্ম।

গত তিন দশকে সফলতার সঙ্গে যাত্রা শুরু করলেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে এখনো প্রত্যাশিত সাফল্য আসেনি। প্রত্যাশিত, কাঙ্ক্ষিত সাফল্য না আসার অন্যতম কিছু কারণ রয়েছে বলে আমি মনে করি।

অসহনীয় সেশনজট: বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষাক্ষেত্রে একটা অন্যতম মারাত্মক ভয়াবহ সমস্যা হচ্ছে অসহনীয় সেশনজট। সময়মতো পরীক্ষা অনুষ্ঠিত না হওয়া, ফল প্রকাশে বিলম্ব, দূরদর্শিতা পরিকল্পনার অভাবে প্রায় সব প্রোগ্রামে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে, যা মোটেই কাম্য নয়।

স্থগিত ‘স্কুল অব ল’: বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন কর্তৃক ২০০৫ সালে ‘স্কুল অব ল’ চালু করা হয়। পরবর্তীকালে বিশেষ কোনো কারণ ছাড়াই রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলকভাবে স্বতন্ত্র অনুষদ ‘স্কুল অব ল’ স্থগিত করা হয় এবং সামাজিকবিজ্ঞান মানবিক ও ভাষা স্কুলের অধীনে ন্যস্ত করা হয়।

মাত্রাতিরিক্ত সেমিস্টার ফি: বাউবি একটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হওয়া সত্ত্বেও এখানে প্রোগ্রামগুলোতে মাত্রাতিরিক্ত সেমিস্টার ফি নেওয়া হয়। যেটা প্রায় অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় চার-পাঁচগুণ বেশি। অথচ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের পেছনে টাকা ব্যয় না করে রক্তচোষার মতো চুষে খাচ্ছে। শত শত কোটি টাকা সরকারি ফান্ডে জমা দেয়।সনদ জালিয়াতির ঘটনা: সম্প্রতি গণমাধ্যমে বাউবি আইন প্রোগ্রামে মাত্র ৭০ হাজার টাকায় সনদ জালিয়াতির ঘটনার চিত্র উঠে আসে, যা বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। তা ছাড়া অতীতেও বাউবিতে সনদ বিক্রির অভিযোগ এসেছে। এমনকি ভর্তি পরীক্ষার অনিয়মের তথ্যও উঠে এসেছে।

শিক্ষার্থীদের পরিচয় সংকট: অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য; বাউবির শিক্ষার্থীদের ব্যাপক পরিচয় সংকট রয়েছে। কীভাবে পড়ানো হয়, কোথায় পড়ানো হয়—এসব সম্পর্কে অধিকাংশ মানুষ জানেই না।

শিক্ষার্থী হয়রানি: বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী হয়রানি একটা নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে গেছে। সনদ উত্তোলনের সময় হয়রানি, অধিকাংশ সার্টিফিকেটে নামের বানানে ভুল, পরীক্ষার ফলে সমন্বয়হীনতাসহ বহুবিধ সমস্যা রয়েছে।

গবেষণা ও পৃষ্ঠপোষকতার অনীহা: বাউবিতে অনার্স, মাস্টার্স, এমফিল, পিএচডির মতো উচ্চশিক্ষার প্রোগ্রামগুলোতে গবেষণা তেমন হয় না বললেই চলে। এ ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ব্যাপক অনীহা এবং পৃষ্ঠপোষকতার অভাব অন্যতম দায়ী। এ ছাড়া সেমিনার, কর্মশালা কিংবা শিক্ষার্থীদের জন্য কোনো শিক্ষামূলক অনুষ্ঠান লক্ষ করা যায় না। এমন অবস্থায় আমরা শিক্ষার্থীরা আশা করি, উপরোক্ত সমস্যাগুলো সমাধান করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এক নতুন উদ্যমে যাত্রা শুরু করবে। শিক্ষার্থীবান্ধব, দুর্নীতিমুক্ত এক আধুনিক বাউবির যাত্রা শুরু হবে। এটাই হোক বাউবির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অঙ্গীকার।

শিক্ষার্থী আইন প্রোগ্রাম

বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়

আরো পড়ুন ...

আর্কাইভ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১
১৩১৫১৬
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭৩০৩১