বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪
গাজীপুরে সীরাত সেমিনারে বক্তারা বলেছেন, বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য আজ শহীদ মীর কাশেম আলীর মতো ব্যবসায়ীদের খুবই প্রয়োজন। মীর কাশেম আলী শুধু ব্যবসা করার জন্যই ব্যবসা করেননি, তিনি হালাল অর্জনের পথ বাতলে দিয়েছেন। জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান হিসেবে তাকে পুরস্কৃত করার কথা ছিল। কিন্তু বিগত ফ্যাসিবাদী সরকার তাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসি দিয়ে অসৎ ব্যবসায়ীদের পুরস্কৃত করেছে।
শনিবার (১৯ অক্টোবর) সকালে বাংলাদেশ উম্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় অডিটোরিয়ামে আয়োজিত সীরাত সেমিনারে বক্তারা এ কথা বলেন।
বক্তারা আরো বলেন, আমাদের ব্যবসায়ীদের মধ্যে সততার অভাব রয়েছে। ব্যবসায়ীদের মধ্যে তাকওয়া থাকতে হবে। তাদেরকে রাসূল সা:-এর আখলাক গ্রহণ করতে হবে।
ইন্ডাস্ট্রিয়ালিস্টস অ্যান্ড বিজনেসমেন ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন (আইবিডব্লিউএফ) গাজীপুর মহানগর শাখা এ সেমিনারের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন আল-মানারাত ইউনিভার্সিটির সাবেক ভিসি ড. মো: চৌধুরী মাহমুদ হাসান এবং প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ শায়খ জামাল উদ্দিন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্ত্য রাখেন আইবিডব্লিউএফের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহা. জামাল উদ্দিন। ‘বিশ্ব নবী মোহাম্মদ সা: ও তাঁর ব্যবসানীতি’ বিষয়ক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের সাবেক ডিন ড. মাহফুজুর রহমান।
আইবিডব্লিউএফ গাজীপুর মহানগর শাখার সভাপতি মো: গোলাম মোস্তফার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মো: হাবিবুল কিবরিয়া ইমরানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন সাবেক নৌপরিবহন সচিব শেখ এ কে এম মোতাহারুল ইসলাম, আইবিডব্লিউএফ গাজীপুর শাখার উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য আবু সাঈদ মো: ফারুক, মো: হোসেন আলী, মো: আফজাল হোসাইন, সালাহউদ্দিন আইয়ুবী, আবু সিনা মোহাম্মদ মামুন ও ইসলামী ব্যাংক বোর্ড বাজার শাখাপ্রধান লুৎফর রহমান। এছাড়া সীরাত সেমীনারে উপস্থিত ছিলেন, মফিজুর রহমান, মাহবুবুর রহমান, মাওলানা তাজ উদ্দিন আহাম্মদ, মোহাম্মদ শাহজাহান, তাজউদ্দিন তাজ, মো. খালেদ মিয়া, জাহাঙ্গীর আলম, মাওলানা আল আমিন, আব্দুল ওয়াহাব, মোতাহার হোসেন মোহোন, আলামিন বিজয়, খন্দকার মাসুম বিল্লাহ, দিদারুল ইসলাম দিপু, আসাদুজ্জামান, আয়াতুল্লাহ ফয়েজ প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. মো: চৌধুরী মাহমুদ হাসান বলেন, ব্যবসায়ীদেরকে রাসূল সা:- এর আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে ব্যবসা পরিচালনা করতে হবে। প্রতিটি কাজে মহান আল্লাহর কাছে জবাবদিহি করতে হবে এবং এই পৃথিবীই আমার শেষ ঠিকানা নয়, দুনিয়ার কৃতকর্মের জন্য পরকালে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে এই বিশ্বাস অন্তরে পোষণ করতে হবে।
তিনি বলেন, আমাদের ব্যবসায়ীদের সততার অভাব রয়েছে। সকল অসত্য পরিহার করে ব্যবসায়ীদের তাকওয়া অর্জন করে প্রকৃত মুত্তাকি হতে হবে। সকল লোভ লালসা পরিহার করে ইনসাফভিত্তিক বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠায় ব্যবসায়ীদের এগিয়ে আসতে হবে। ব্যবসায়ীদের সততায় ক্রেতারা ইসলাম গ্রহণ করবে তাদেরকে এমন গুণাবলী অর্জন করতে হবে।
অনুষ্ঠানের প্রধান বক্তা শায়খ জামাল উদ্দিন ব্যবসায়ীদেরকে রাসূল সা:-এর অনুকরণে ব্যবসা পরিচালনার আহ্বান জানিয়ে বলেন, রাসূল সা: ১৭ বছর বয়স থেকে ৪২ বছর বয়স পর্যন্ত ব্যবসা করেছেন। রাসূল সা:- এর আদর্শে ব্যবসায়ীদের মধ্যে চারটি গুলাবলী থাকতে হবে। তা হলো, জিকির (সব সময় আল্লহকে স্মরণে রাখা), নিয়মিত নামাজ পড়া, যাকাত দেয়া ও নিজের ভেতর পরকালে জবাবদিহির ভয় থাকা। এই চারটি গুলাবলী থাকলে মহান আল্লাহ ব্যবসায়ীদের রিজিক ও মর্যাদা বহুগুণ বাড়িয়ে দিবেন।
তিনি বলেন, মীর কাশেম আলী ও দরবেশদের (সালমান এফ রহমান) মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে। দেশের উন্নয়নের জন্য মীর কাশেম আলীর মতো ব্যবসায়ীদের এখন খুব প্রয়োজন। আর দেশ ধ্বংসের জন্য এক দরবেশই যথেষ্ট। মীর কাশেম আলী শুধু ব্যবসাই করেননি, তিনি হালাল উপার্জনের পথ বাতলে দিয়ে গেছেন। কিন্তু বিগত ফ্যাসিবাদী সরকার জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান হিসেবে তাকে পুরস্কৃত করার পরিবর্তে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে দেশদ্রোহী কাজ করেছে। একইসাথে দরবেশ তথা অসৎ ব্যবসায়ীদের লুটপাটের সুযোগ করে দিয়েছে।