মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪

পুলিশের গুলিতে মায়ের কাছেই চলে গেল শিশু আব্দুল্লাহ..

মাত্র ৯ বছর বয়সে মা হারিয়ে মাতৃহীন আব্দুল্লাহ বাবা আর বোনদের স্নেহে ভালোই ছিলো। পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা তাকে একটু বেশিই আদর করতো। কিন্ত গত ৫ আগস্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে পুলিশের গুলিতে সকল বাঁধন ছিন্ন করে চলে গেলো শিশু আব্দুল্লাহ আল মুস্তাকিন (১৩)। পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে যেন হারিয়ে যাওয়া শিশু প্রাণ তার মায়ের কাছেই চলে গেল।আব্দুল্লাহ আল মুস্তাকিন কুষ্টিয়ার চর থানাপাড়া এলাকার চা দোকানী লোকমান হোসেন (৫৫) ও মৃত হ্যাপি খাতুনের একমাত্র পুত্র। চার ভাইবোনের মধ্যে সে সবার ছোট। চার বছর আগে মা মারা যাওয়ার পর থেকে বোনরাই তার দেখাশোনা করতো।আব্দুল্লাহ'র বাবা লোকমান হোসেন (৫৫) বাসসকে বলেন, আমি ৪ আগস্ট অসুস্থ হয়ে বড় বাজার এলাকার তোফাজ্জল ক্লিনিকে চিকিৎসা নিচ্ছিলাম। আমার ছেলে আব্দুল্লাহ ৫ আগস্ট দুপুরের দিকে আমাকে বলে আব্বু বাড়িতে যাচ্ছি। বাড়ির কাছাকাছি গেলে সে জানতে পারে তার দুই চাচা আন্দোলনে গেছে। এই কথা শুনে চাচাকে খুঁজতে আব্দুল্লাহ শহরের থানার মোড়ে গেলে পুলিশের এসআই সাহেব আলী খুব কাছ থেকে আমার ছেলেকে গুলি করে। আমার ছেলে শহীদ হয়। এ সময় পুলিশের সাথে আওয়ামী লীগের অনেক নেতা-কর্মী ছিলো। সন্তান হারানোর বেদনায় বিমূঢ় পিতা লোকমান হোসেন বলেন, আমি আমার একমাত্র পুত্রকে হারিয়েছি, তবুও আামি এখন গর্ববোধ করি আমার ছেলের জীবন বৃথা যায়নি। ওর জীবনের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বৈরাচার মুক্ত হয়েছে।লোকমান হোসেন বলেন, আমার ছেলেকে যে পুলিশ ও যারা প্রকাশ্যে মারলো তাদের অনেকের নামে এখনও মামলা হয়নি। এখন আমার চাওয়া আমার ছেলে হত্যার সাথে প্রকৃতঅর্থেই যারা জড়িত মামলায় তাদের নাম যুক্ত করা হোক, তাদের শাস্তি হোক।নিহতের বড় বোন মীরা (১৯) বলেন, আব্দুল্লাহ আমাদের তিন বোনের একমাত্র ভাই। সবার ছোট ছিলো এবং আমাদের খুব আদরের ছিলো। ওকে হারিয়ে আমরা এখন শূন্যতার সাগরে ভাসছি। যেদিকে তাকাই ওর স্মৃতি মনে পড়ে। আমার ভাই দেশের জন্য জীবন দিয়েছে, এটাই আমাদের একমাত্র সান্ত্বনা। এখন আমাদের একমাত্র চাওয়া আমরা যেন আমাদের ভাইয়ের হত্যার বিচার পাই।আব্দুল্লাহ'র চাচা শফি মণ্ডল বলেন, আমরা প্রথম থেকেই বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। গত ৫ আগস্টও আমরা ১ দফা দাবিতে আন্দোলনে গিয়েছিলাম। আমাদের খুঁজতে সেদিন আমার ভাতিজা গিয়েছিলো থানার মোড়ে। সেখানেই এক এসআই ও আওয়ামী লীগের নেতাদের গোলাগুলির মধ্যে পড়ে আমার ভাতিজা, গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায়। আমরা এই হত্যার বিচার চাই। যে সকল আসামি মামলার বাইরে রয়েছে তাদের এই হত্যা মামলায় যুক্ত করার দাবি জানাই।এ বিষয়ে কুষ্টিয়া জজ কোর্টের অ্যাডভোকেট শামিম উল হাসান অপু বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছে তাদের হত্যার বিচার হওয়া খুবই জরুরি ও গুরুত্বপূর্ণ। কারণ যাদের জীবনের বিনিময়ে এই নতুন বাংলাদেশ, তাদের হত্যার সাথে জড়িতদের বিচার হতে হবে। এসময় তিনি আরও বলেন, যারা হত্যার সাথে জড়িত কিন্তু এজাহারে বাদ পড়েছে তদন্ত কর্মকর্তা তদন্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করার আগে তাদের নাম অন্তর্ভুক্ত করতে পারে।এ ব্যাপারে কুষ্টিয়া জেলা পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান বলেন, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সময়ে নিহত-আহতের ব্যাপারে যে মামলাগুলো হয়েছে, সেসব মামলায় কিছু আসামি গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আসামিরা বেশিরভাগই আত্মগোপনে থাকায় সবাইকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। তবে আমাদের কার্যক্রম চলছে।উল্লেখ্য, আব্দুল্লাহ হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত এসআই সাহেব আলীকে ঐ দিনের পর আর এলাকায় দেখা যায়নি।

মাত্র ৯ বছর বয়সে মা হারিয়ে মাতৃহীন আব্দুল্লাহ বাবা আর বোনদের স্নেহে ভালোই ছিলো। পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা তাকে একটু বেশিই আদর করতো। কিন্ত গত ৫ আগস্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে পুলিশের গুলিতে সকল বাঁধন ছিন্ন করে চলে গেলো শিশু আব্দুল্লাহ আল মুস্তাকিন (১৩)। পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে যেন হারিয়ে যাওয়া শিশু প্রাণ তার মায়ের কাছেই চলে গেল।আব্দুল্লাহ আল মুস্তাকিন কুষ্টিয়ার চর থানাপাড়া এলাকার চা দোকানী লোকমান হোসেন (৫৫) ও মৃত হ্যাপি খাতুনের একমাত্র পুত্র। চার ভাইবোনের মধ্যে সে সবার ছোট। চার বছর আগে মা মারা যাওয়ার পর থেকে বোনরাই তার দেখাশোনা করতো।আব্দুল্লাহ’র বাবা লোকমান হোসেন (৫৫) বাসসকে বলেন, আমি ৪ আগস্ট অসুস্থ হয়ে বড় বাজার এলাকার তোফাজ্জল ক্লিনিকে চিকিৎসা নিচ্ছিলাম। আমার ছেলে আব্দুল্লাহ ৫ আগস্ট দুপুরের দিকে আমাকে বলে আব্বু বাড়িতে যাচ্ছি। বাড়ির কাছাকাছি গেলে সে জানতে পারে তার দুই চাচা আন্দোলনে গেছে। এই কথা শুনে চাচাকে খুঁজতে আব্দুল্লাহ শহরের থানার মোড়ে গেলে পুলিশের এসআই সাহেব আলী খুব কাছ থেকে আমার ছেলেকে গুলি করে। আমার ছেলে শহীদ হয়। এ সময় পুলিশের সাথে আওয়ামী লীগের অনেক নেতা-কর্মী ছিলো। সন্তান হারানোর বেদনায় বিমূঢ় পিতা লোকমান হোসেন বলেন, আমি আমার একমাত্র পুত্রকে হারিয়েছি, তবুও আামি এখন গর্ববোধ করি আমার ছেলের জীবন বৃথা যায়নি। ওর জীবনের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বৈরাচার মুক্ত হয়েছে।লোকমান হোসেন বলেন, আমার ছেলেকে যে পুলিশ ও যারা প্রকাশ্যে মারলো তাদের অনেকের নামে এখনও মামলা হয়নি। এখন আমার চাওয়া আমার ছেলে হত্যার সাথে প্রকৃতঅর্থেই যারা জড়িত মামলায় তাদের নাম যুক্ত করা হোক, তাদের শাস্তি হোক।নিহতের বড় বোন মীরা (১৯) বলেন, আব্দুল্লাহ আমাদের তিন বোনের একমাত্র ভাই। সবার ছোট ছিলো এবং আমাদের খুব আদরের ছিলো। ওকে হারিয়ে আমরা এখন শূন্যতার সাগরে ভাসছি। যেদিকে তাকাই ওর স্মৃতি মনে পড়ে। আমার ভাই দেশের জন্য জীবন দিয়েছে, এটাই আমাদের একমাত্র সান্ত্বনা। এখন আমাদের একমাত্র চাওয়া আমরা যেন আমাদের ভাইয়ের হত্যার বিচার পাই।আব্দুল্লাহ’র চাচা শফি মণ্ডল বলেন, আমরা প্রথম থেকেই বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। গত ৫ আগস্টও আমরা ১ দফা দাবিতে আন্দোলনে গিয়েছিলাম। আমাদের খুঁজতে সেদিন আমার ভাতিজা গিয়েছিলো থানার মোড়ে। সেখানেই এক এসআই ও আওয়ামী লীগের নেতাদের গোলাগুলির মধ্যে পড়ে আমার ভাতিজা, গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায়। আমরা এই হত্যার বিচার চাই। যে সকল আসামি মামলার বাইরে রয়েছে তাদের এই হত্যা মামলায় যুক্ত করার দাবি জানাই।এ বিষয়ে কুষ্টিয়া জজ কোর্টের অ্যাডভোকেট শামিম উল হাসান অপু বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছে তাদের হত্যার বিচার হওয়া খুবই জরুরি ও গুরুত্বপূর্ণ। কারণ যাদের জীবনের বিনিময়ে এই নতুন বাংলাদেশ, তাদের হত্যার সাথে জড়িতদের বিচার হতে হবে। এসময় তিনি আরও বলেন, যারা হত্যার সাথে জড়িত কিন্তু এজাহারে বাদ পড়েছে তদন্ত কর্মকর্তা তদন্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করার আগে তাদের নাম অন্তর্ভুক্ত করতে পারে।এ ব্যাপারে কুষ্টিয়া জেলা পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান বলেন, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সময়ে নিহত-আহতের ব্যাপারে যে মামলাগুলো হয়েছে, সেসব মামলায় কিছু আসামি গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আসামিরা বেশিরভাগই আত্মগোপনে থাকায় সবাইকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। তবে আমাদের কার্যক্রম চলছে।উল্লেখ্য, আব্দুল্লাহ হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত এসআই সাহেব আলীকে ঐ দিনের পর আর এলাকায় দেখা যায়নি।

আরো পড়ুন ...

আর্কাইভ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১
১৩১৫১৬
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭৩০৩১