বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪
দুনিয়া ও আখিরাতে সুখী হওয়ার মূলনীতি হলো সত্কর্ম করা। আর সত্কর্মশীল ব্যক্তিরাই উভয় জগতে সুখী জীবনের অধিকারী হয়ে থাকে। তবে এ সুখ লাভ করার জন্য শর্ত হলো পরকালে আল্লাহর সামনে হিসাব দেওয়ার বিষয়ে দৃঢ় বিশ্বাস স্থাপন করা, যা ঈমানের গুরুত্বপূর্ণ একটি স্তম্ভ। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘পুরুষ হোক নারী হোক, মুমিন অবস্থায় যে সত্কর্ম সম্পাদন করে, আমি তাকে উত্তম জীবন দান করব এবং অবশ্যই তাদেরকে তাদের কৃতকর্মের চেয়ে উত্তম পুরস্কারে ভূষিত করব।’ (সুরা : নাহল, আয়াত : ৯৭)
নিম্নে পৃথিবীতে সুখ লাভে আখিরাত বিশ্বাসের কয়েকটি দিক এবং এর সুফল উল্লেখ করা হলো—
ইসলামের বিধানাবলি স্বাচ্ছন্দ্যে গ্রহণ করামুমিনের জন্য দুনিয়া ও আখিরাতে সুখী ও উত্তম জীবনের অধিকারী হওয়ার বড় একটি উপায় হলো, ইসলামের বিধানাবলি স্বাচ্ছন্দ্যে গ্রহণ করা। পাশাপাশি যেকোনো অপরাধের পর নিজেকে অপরাধীর কাঠগড়ায় দাঁড় করানো, অনুতপ্ত হওয়া এবং আল্লাহর দিকে ফিরে আসা। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহ বলেন, হে বিশ্বাসীরা, তোমরা আনুগত্য করো আল্লাহর এবং আনুগত্য করো রাসুলের ও তোমাদের নেতাদের। অতঃপর যদি কোনো বিষয়ে তোমরা বিতণ্ডা করো, তাহলে বিষয়টি আল্লাহ ও রাসুলের দিকে ফিরিয়ে দাও।
যদি তোমরা আল্লাহ ও আখিরাতের প্রতি বিশ্বাসী হয়ে থাকো। এটাই কল্যাণকর ও পরিণতির দিক দিয়ে সর্বোত্তম।’
(সুরা : নিসা, আয়াত : ৫৯)
এখানে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের ফায়সালা মেনে নেওয়ার জন্য আখিরাত বিশ্বাসকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। কেননা আখিরাতের স্বার্থেই মানুষ দুনিয়াবি স্বার্থ ত্যাগ করে।
ভালো ও নেক কাজে একাগ্রতা তৈরি করা
ভালো ও নেক কাজে ধারাবাহিক একাগ্রতা তৈরি করা দুনিয়া ও আখিরাতে সাফল্য লাভের মাধ্যম। ইরশাদ হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি আখিরাতের ফসল কামনা করে আমরা তার জন্য তার ফসল বাড়িয়ে দিই। আর যে ব্যক্তি দুনিয়ার ফসল কামনা করে, আমরা তাকে তা থেকে কিছু দিয়ে থাকি। কিন্তু আখিরাতে তার জন্য কোনো অংশ থাকে না।’ (সুরা : শুরা, আয়াত : ২০)
এ প্রসঙ্গে নবী (সা.) বলেন, ‘আখিরাত যে ব্যক্তির একমাত্র চিন্তার বিষয় হবে, আল্লাহ তার অন্তরকে অভাবমুক্ত করে দেন।
তার বিক্ষিপ্ত বিষয়গুলোকে সমাধান করে দেন। আর দুনিয়া তার কাছে তুচ্ছ হয়। পক্ষান্তরে দুনিয়া যার একমাত্র চিন্তার বিষয় হবে, আল্লাহ তার অভাবসমূহ সামনে এনে দেন। আর তার সমস্যাগুলোকে বিক্ষিপ্ত করে দেন। অথচ তার নিকট কিছুই আসে না অতটুকু ব্যতীত, যতটুকু তার তাকদিরে নির্ধারিত আছে।’
(তিরমিজি, হাদিস : ২৪৬৫)
আখিরাতের প্রতি মানুষকে আহ্বান করা
খন্দকের যুদ্ধে পরিখা খননরত প্রচণ্ড ক্ষুধাতাড়িত সাহাবিদের উৎসাহ দিয়ে পেটে পাথর বাঁধা রাসুল (সা.) নিম্নোক্ত কবিতা গেয়ে বলেন, ‘হে আল্লাহ, কোনো আরাম নেই আখিরাতের আরাম ছাড়া। অতএব, তুমি ক্ষমা করো আনসার ও মুহাজিরদের।’ (বুখারি, হাদিস : ৪০৯৮)
এখানে নবীজি সাহাবাদের আখিরাতের প্রতি আহ্বান করেছেন, যাতে তাঁরা দুনিয়ার ওপর তা প্রাধান্য দিয়ে চিরস্থায়ী কল্যাণ লাভ করেন।