বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪

এখনো বহাল তবিয়তে চাঁদাবাজ-সম্রাট শ্রমিক লীগ সভাপতি রকিব

চাঁদাবাজি করে আঙুল ফুলে কলাগাছে পরিণত হওয়া কুমিল্লা উত্তর জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি রকিব উদ্দিন এখনো রয়েছেন বহাল তবিয়তে। ১৫ বছর একচ্ছত্র চাঁদাবাজি করে হয়েছেন অঢেল সম্পদের মালিক। স্থানীয়দের অভিযোগ, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দাউদকান্দি এলাকার পরিবহণ, নৌপথ, বালুমহাল, মাদক এবং ফেরিঘাটের কোটি কোটি টাকার চাঁদাবাজির একক নিয়ন্ত্রণ তার হাতে। তার রয়েছে নিজস্ব ক্যাডার বাহিনী। দাউদকান্দি সদরের দোনারচরের বাসিন্দা রকিব একজন শীর্ষ লাঠিয়াল এবং চাঁদাবাজির মাধ্যমে হয়ে উঠেছেন প্রভাবশালী। তার কাছে স্থানীয় সংসদ-সদস্যসহ জনপ্রতিনিধিরাও ছিলেন এক রকম জিম্মি। আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলেও শীর্ষ চাঁদাবাজ খ্যাত রকিব এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন। সদরের প্রভাবশালী হওয়ায় বিএনপির নেতাকর্মীরাও তার সঙ্গে ঝামেলায় জড়াতে চান না। এলাকাবাসী জানান, রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হলেও রকিবের চাঁদাবাজি বন্ধ হয়নি। বিএনপির কতিপয় নেতাকর্মীকে ভাগবাঁটোয়ারা দিয়ে এখনও চাঁদাবাজি চালিয়ে যাচ্ছেন শ্রমিক লীগ নেতা রকিব। সম্প্রতি ছাত্র-জনতার আন্দোলনে একাধিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তাই এলাকায় থাকলেও নিজেকে কিছুটা আড়াল করে রেখেছেন এই শীর্ষ চাঁদাবাজ। সরেজমিন ঘুরে জানা গেছে, ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর দাউদকান্দির সাবেক এমপি সুবিদ আলী ভূঁইয়ার লাঠিয়াল হিসাবে রকিবকে বেছে নেন। তখন সে ছিল মূলত ছিঁচকে মাস্তান। অর্থনৈতিক অবস্থা ছিল নাজুক। সুবিদ আলী ভূঁইয়ার প্রশ্রয়ে সে অল্পদিনেই দাউদকান্দি টোল প্লাজা থেকে শুরু করে পরিবহণ সেক্টর, নৌপথ, ফেরিঘাট, বালুমহালে চাঁদাবাজি শুরু করে। এসব চাঁদাবাজির নিয়ন্ত্রণ বৈধ করতে বাগিয়ে নেয় কুমিল্লা উত্তর জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতির পদ। গড়ে তোলে বিশাল ক্যাডার বাহিনী। তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুললেই অপমান-অপদস্ত, মারধর করা হতো। চাঁদাবাজির এসব সেক্টর নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি পুলিশ প্রশাসনের অদৃশ্য নিয়ন্ত্রণ চলে আসে তার হাতে। পুলিশকে মাসোহারা দিতেন নিয়মিত। দাউদকান্দির বাস, ট্রাক, সিএনজি, মাইক্রোবাস, লেগুনা স্ট্যান্ড, বালুমহালের নিয়ন্ত্রণ, দাউদকান্দির নতুন ফেরিঘাটের চাঁদাবাজি, বালুবাহী ট্রাকের চাঁদাবাজিসহ পরিবহণ খাতের সব চাঁদাবাজির নিয়ন্ত্রণ এখনো রকিবের হাতেই। অভিযোগ রয়েছে, ১৫ বছর ধরে শ্রমিক লীগের নামে দাউদকান্দির নতুন ফেরিঘাটে প্রতি ট্রাক থেকে ৫শ টাকা, নৌপথে বালুবাহী প্রতি বাল্কহেড থেকে ২ হাজার টাকা, শহীদ নগর বাসস্ট্যান্ডের প্রতি লেগুনা থেকে ১০০ টাকা, টোল প্লাজা কাউন্টার এলাকার প্রতি লেগুনা থেকে ১০০ টাকা করে চাঁদা আদায় করছে রকিব বাহিনী। তাছাড়া গৌরীপুর বাস স্ট্যান্ডে সব ধরনের যানবাহন থেকে চাঁদা আদায়। ইলিয়টগঞ্জ স্ট্যান্ডের বাস, ট্রাক ও সিএনজি থেকে চাঁদা আদায় করছে এই চাঁদাবাজ। রকিবের চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণে সেকেন্ডম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন, সবজিকান্দির দিলবার চৌধুরী, রাকেশ, ব্যাগ হৃদয়, মাহফুজ, রানা, মিন্টু, পিন্টু, শান্ত, মেরাজ, জাকির, সজীবসহ অর্ধশতাধিক ক্যাডার। লেগুনা চালক ইমরান হোসেন বলেন, শ্রমিক লীগের নামে রকিব উদ্দিন ১৫ বছর ধরে সব স্ট্যান্ড থেকে চাঁদা আদায় করছেন। প্রতি লেগুনা থেকে প্রতিদিন তিনি ১০০ টাকা করে চাঁদা আদায় করেন। বাল্কহেড চালক খোকন মিয়া বলেন, বালুভর্তি প্রতি বোটে রকিবকে দুই হাজার টাকা করে দিতে হয়। এখনো দিচ্ছি। ঘাটের নিয়ন্ত্রণ এখনো রকিবের লোকজনের হাতেই রয়েছে। দাউদকান্দির মাদকের সেক্টরও রয়েছে তার নিয়ন্ত্রণে। রকিবের ইশারায় চলে মাদকের ব্যবসা। মাদক ব্যবসায়ীদের তাকে কমিশন দিয়েই এলাকায় মাদকের কারবার করতে হয়। রকিবের কাছে একপর্যায়ে সাবেক এমপি সুবিদ আলী ভূঁইয়াও কোণঠাসা হয়ে পড়েন। পরে ২০২৪ সালের নির্বাচনে ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুর এমপি নির্বাচিত হলে তাকেও বাধ্য হয়ে রকিবকে বেছে নিতে হয়। বহাল তবিয়তে থাকে তার চাঁদাবাজির সাম্রাজ্য। ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে ক্যাডার বাহিনী এবং অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মারমুখী ভূমিকায় ছিলেন রকিব। বহু শিক্ষার্থীসহ বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীদের অত্যাচার-নির্যাতন এবং হয়রানির অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। কিন্তু রহস্যজনক কারণে এখনো বহাল তবিয়তে এই আলোচিত চাঁদাবাজ। ছাত্র আন্দোলনে একাধিক হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থেকেও সে রয়েছে বহাল তবিয়তে। স্থানীয়রা জানান, বিএনপির কতিপয় নেতাকর্মীকে ভাগবাঁটোয়ারা দিয়ে চাঁদাবাজির সব সেক্টরের নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখেছে রকিব। বালুবাহী ট্রাকচালক আবু বকর বলেন, রকিবের লোকজনকে চাঁদা না দিয়ে কোনো বালুর ট্রাক মহাল থেকে বের হতে পারে না। টোলপ্লাজার পাশে শ্রমিক লীগের অফিস ছিল। সেখানে তার আস্তানা ছিল। ৫ আগস্ট তার অফিস ভেঙে ফেলা হয়েছে। কিন্তু তার লোকজন এখনো চাঁদা আদায় করছেন। শুনেছি তারা নাকি এখন বিএনপির কয়েকজনকে ম্যানেজ করে চাঁদা আদায় করছেন। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে শূন্য থেকে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছে। তার উল্লেখযোগ্য সম্পদের মধ্যে রয়েছে, শ্যালক মাহফুজের সঙ্গে ঢাকার কাজলায় যৌথভাবে নির্মাণাধীন ১২তলা টাওয়ার, দোনারচরে ৫ তলা বাড়ি, গাজীপুরে বাড়ি ও জমি, দাউদকান্দি বিশ্বরোড টোল প্লাজা এলাকায় ১০টি দোকান, এলাকায় কৃষি জমি, প্লটসহ রয়েছে অঢেল সম্পদ। দাউদকান্দি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মহিউদ্দিন শিকদার বলেন, শ্রমিক লীগ সভাপতি রকিব উদ্দিন ছিলেন সাবেক এমপি সুবিদ আলী ভূঁইয়া পরিবারের ঘনিষ্ঠজন। তিনি পরিবহণ সেক্টর নৌপথ ফেরিঘাট নিয়ন্ত্রণ করতেন সেটা সঠিক। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে চরম সুবিধাভোগী একজন মানুষ রকিব। পরিবহণ ও নৌপথের জিপি এবং চাঁদাগুলো তিনিই আদায় করতেন। দাউদকান্দি পৌরসভার ৫ ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর বিল্লাল হোসেন সুমন বলেন, রকিব উদ্দিন তার ক্যাডার বাহিনী দিয়ে এখনো পরিবহণ এবং নৌপথের চাঁদাবাজির সাম্রাজ্য ধরে রেখেছে। ৫ আগস্টের পর তাকে প্রকাশ্যে দেখা না গেলেও আশপাশে থেকেই তার লোকজন দিয়ে চাঁদা আদায় করছে। ১৫ বছর ধরে সে পরিবহণ এবং নৌপথে চাঁদাবাজির একটি সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছে। এখন সে অঢেল সম্পদের মালিক। কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এএফএম তারেক মুন্সি বলেন, বিএনপির কোনো নেতাকর্মী চাঁদাবাজির সঙ্গে সম্পৃক্ত হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাছাড়া আওয়ামী লীগের কোনো দুর্নীতিবাজকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিলেও সাংগঠনিক বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। রকিব উদ্দিনের মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন এবং হোয়াটসঅ্যাপে অসংখ্যবার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। দাউদকান্দি থানার ওসি জুনায়েদ চৌধুরী বলেন, আমি সদ্য যোগদান করেছি। রকিব উদ্দিনের বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছি। চাঁদাবাজি এবং মাদকের সঙ্গে জড়িত থাকলে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। তাছাড়া তার বিরুদ্ধে যেসব মামলা হয়েছে সেগুলোর তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

চাঁদাবাজি করে আঙুল ফুলে কলাগাছে পরিণত হওয়া কুমিল্লা উত্তর জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি রকিব উদ্দিন এখনো রয়েছেন বহাল তবিয়তে। ১৫ বছর একচ্ছত্র চাঁদাবাজি করে হয়েছেন অঢেল সম্পদের মালিক। স্থানীয়দের অভিযোগ, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দাউদকান্দি এলাকার পরিবহণ, নৌপথ, বালুমহাল, মাদক এবং ফেরিঘাটের কোটি কোটি টাকার চাঁদাবাজির একক নিয়ন্ত্রণ তার হাতে। তার রয়েছে নিজস্ব ক্যাডার বাহিনী।

দাউদকান্দি সদরের দোনারচরের বাসিন্দা রকিব একজন শীর্ষ লাঠিয়াল এবং চাঁদাবাজির মাধ্যমে হয়ে উঠেছেন প্রভাবশালী। তার কাছে স্থানীয় সংসদ-সদস্যসহ জনপ্রতিনিধিরাও ছিলেন এক রকম জিম্মি। আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলেও শীর্ষ চাঁদাবাজ খ্যাত রকিব এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন। সদরের প্রভাবশালী হওয়ায় বিএনপির নেতাকর্মীরাও তার সঙ্গে ঝামেলায় জড়াতে চান না। এলাকাবাসী জানান, রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হলেও রকিবের চাঁদাবাজি বন্ধ হয়নি। বিএনপির কতিপয় নেতাকর্মীকে ভাগবাঁটোয়ারা দিয়ে এখনও চাঁদাবাজি চালিয়ে যাচ্ছেন শ্রমিক লীগ নেতা রকিব। সম্প্রতি ছাত্র-জনতার আন্দোলনে একাধিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তাই এলাকায় থাকলেও নিজেকে কিছুটা আড়াল করে রেখেছেন এই শীর্ষ চাঁদাবাজ। সরেজমিন ঘুরে জানা গেছে, ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর দাউদকান্দির সাবেক এমপি সুবিদ আলী ভূঁইয়ার লাঠিয়াল হিসাবে রকিবকে বেছে নেন। তখন সে ছিল মূলত ছিঁচকে মাস্তান। অর্থনৈতিক অবস্থা ছিল নাজুক। সুবিদ আলী ভূঁইয়ার প্রশ্রয়ে সে অল্পদিনেই দাউদকান্দি টোল প্লাজা থেকে শুরু করে পরিবহণ সেক্টর, নৌপথ, ফেরিঘাট, বালুমহালে চাঁদাবাজি শুরু করে। এসব চাঁদাবাজির নিয়ন্ত্রণ বৈধ করতে বাগিয়ে নেয় কুমিল্লা উত্তর জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতির পদ। গড়ে তোলে বিশাল ক্যাডার বাহিনী। তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুললেই অপমান-অপদস্ত, মারধর করা হতো। চাঁদাবাজির এসব সেক্টর নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি পুলিশ প্রশাসনের অদৃশ্য নিয়ন্ত্রণ চলে আসে তার হাতে। পুলিশকে মাসোহারা দিতেন নিয়মিত। দাউদকান্দির বাস, ট্রাক, সিএনজি, মাইক্রোবাস, লেগুনা স্ট্যান্ড, বালুমহালের নিয়ন্ত্রণ, দাউদকান্দির নতুন ফেরিঘাটের চাঁদাবাজি, বালুবাহী ট্রাকের চাঁদাবাজিসহ পরিবহণ খাতের সব চাঁদাবাজির নিয়ন্ত্রণ এখনো রকিবের হাতেই। অভিযোগ রয়েছে, ১৫ বছর ধরে শ্রমিক লীগের নামে দাউদকান্দির নতুন ফেরিঘাটে প্রতি ট্রাক থেকে ৫শ টাকা, নৌপথে বালুবাহী প্রতি বাল্কহেড থেকে ২ হাজার টাকা, শহীদ নগর বাসস্ট্যান্ডের প্রতি লেগুনা থেকে ১০০ টাকা, টোল প্লাজা কাউন্টার এলাকার প্রতি লেগুনা থেকে ১০০ টাকা করে চাঁদা আদায় করছে রকিব বাহিনী। তাছাড়া গৌরীপুর বাস স্ট্যান্ডে সব ধরনের যানবাহন থেকে চাঁদা আদায়। ইলিয়টগঞ্জ স্ট্যান্ডের বাস, ট্রাক ও সিএনজি থেকে চাঁদা আদায় করছে এই চাঁদাবাজ। রকিবের চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণে সেকেন্ডম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন, সবজিকান্দির দিলবার চৌধুরী, রাকেশ, ব্যাগ হৃদয়, মাহফুজ, রানা, মিন্টু, পিন্টু, শান্ত, মেরাজ, জাকির, সজীবসহ অর্ধশতাধিক ক্যাডার।

লেগুনা চালক ইমরান হোসেন বলেন, শ্রমিক লীগের নামে রকিব উদ্দিন ১৫ বছর ধরে সব স্ট্যান্ড থেকে চাঁদা আদায় করছেন। প্রতি লেগুনা থেকে প্রতিদিন তিনি ১০০ টাকা করে চাঁদা আদায় করেন। বাল্কহেড চালক খোকন মিয়া বলেন, বালুভর্তি প্রতি বোটে রকিবকে দুই হাজার টাকা করে দিতে হয়। এখনো দিচ্ছি। ঘাটের নিয়ন্ত্রণ এখনো রকিবের লোকজনের হাতেই রয়েছে। দাউদকান্দির মাদকের সেক্টরও রয়েছে তার নিয়ন্ত্রণে। রকিবের ইশারায় চলে মাদকের ব্যবসা। মাদক ব্যবসায়ীদের তাকে কমিশন দিয়েই এলাকায় মাদকের কারবার করতে হয়।

রকিবের কাছে একপর্যায়ে সাবেক এমপি সুবিদ আলী ভূঁইয়াও কোণঠাসা হয়ে পড়েন। পরে ২০২৪ সালের নির্বাচনে ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুর এমপি নির্বাচিত হলে তাকেও বাধ্য হয়ে রকিবকে বেছে নিতে হয়। বহাল তবিয়তে থাকে তার চাঁদাবাজির সাম্রাজ্য। ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে ক্যাডার বাহিনী এবং অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মারমুখী ভূমিকায় ছিলেন রকিব। বহু শিক্ষার্থীসহ বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীদের অত্যাচার-নির্যাতন এবং হয়রানির অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। কিন্তু রহস্যজনক কারণে এখনো বহাল তবিয়তে এই আলোচিত চাঁদাবাজ। ছাত্র আন্দোলনে একাধিক হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থেকেও সে রয়েছে বহাল তবিয়তে।

স্থানীয়রা জানান, বিএনপির কতিপয় নেতাকর্মীকে ভাগবাঁটোয়ারা দিয়ে চাঁদাবাজির সব সেক্টরের নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখেছে রকিব। বালুবাহী ট্রাকচালক আবু বকর বলেন, রকিবের লোকজনকে চাঁদা না দিয়ে কোনো বালুর ট্রাক মহাল থেকে বের হতে পারে না। টোলপ্লাজার পাশে শ্রমিক লীগের অফিস ছিল। সেখানে তার আস্তানা ছিল। ৫ আগস্ট তার অফিস ভেঙে ফেলা হয়েছে। কিন্তু তার লোকজন এখনো চাঁদা আদায় করছেন। শুনেছি তারা নাকি এখন বিএনপির কয়েকজনকে ম্যানেজ করে চাঁদা আদায় করছেন।

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে শূন্য থেকে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছে। তার উল্লেখযোগ্য সম্পদের মধ্যে রয়েছে, শ্যালক মাহফুজের সঙ্গে ঢাকার কাজলায় যৌথভাবে নির্মাণাধীন ১২তলা টাওয়ার, দোনারচরে ৫ তলা বাড়ি, গাজীপুরে বাড়ি ও জমি, দাউদকান্দি বিশ্বরোড টোল প্লাজা এলাকায় ১০টি দোকান, এলাকায় কৃষি জমি, প্লটসহ রয়েছে অঢেল সম্পদ।

দাউদকান্দি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মহিউদ্দিন শিকদার বলেন, শ্রমিক লীগ সভাপতি রকিব উদ্দিন ছিলেন সাবেক এমপি সুবিদ আলী ভূঁইয়া পরিবারের ঘনিষ্ঠজন। তিনি পরিবহণ সেক্টর নৌপথ ফেরিঘাট নিয়ন্ত্রণ করতেন সেটা সঠিক। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে চরম সুবিধাভোগী একজন মানুষ রকিব। পরিবহণ ও নৌপথের জিপি এবং চাঁদাগুলো তিনিই আদায় করতেন।

দাউদকান্দি পৌরসভার ৫ ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর বিল্লাল হোসেন সুমন বলেন, রকিব উদ্দিন তার ক্যাডার বাহিনী দিয়ে এখনো পরিবহণ এবং নৌপথের চাঁদাবাজির সাম্রাজ্য ধরে রেখেছে। ৫ আগস্টের পর তাকে প্রকাশ্যে দেখা না গেলেও আশপাশে থেকেই তার লোকজন দিয়ে চাঁদা আদায় করছে। ১৫ বছর ধরে সে পরিবহণ এবং নৌপথে চাঁদাবাজির একটি সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছে। এখন সে অঢেল সম্পদের মালিক।

কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এএফএম তারেক মুন্সি বলেন, বিএনপির কোনো নেতাকর্মী চাঁদাবাজির সঙ্গে সম্পৃক্ত হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাছাড়া আওয়ামী লীগের কোনো দুর্নীতিবাজকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিলেও সাংগঠনিক বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রকিব উদ্দিনের মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন এবং হোয়াটসঅ্যাপে অসংখ্যবার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। দাউদকান্দি থানার ওসি জুনায়েদ চৌধুরী বলেন, আমি সদ্য যোগদান করেছি। রকিব উদ্দিনের বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছি। চাঁদাবাজি এবং মাদকের সঙ্গে জড়িত থাকলে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। তাছাড়া তার বিরুদ্ধে যেসব মামলা হয়েছে সেগুলোর তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরো পড়ুন ...

আর্কাইভ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১৩১৫
১৬১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭
৩০