বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪
জাকির হোসেন , বানারীপাড়া(বরিশাল) প্রতিনিধিঃ
বরিশালের বানারীপাড়ার চাঞ্চল্যকর গণধর্ষণের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার এক নম্বর আসামী সোহাগকে (২৪) গ্রেফতার করা হয়েছে। উপজেলার সলিয়াবাকপুর ফজলুল হক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেনীর এক ছাত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনার ৮দিন পরে ১৯ জুন সোমবার ভোর সাড়ে ৬ টায় বরিশাল লঞ্চ টার্মিনাল থেকে বানারীপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এসএম মাসুদ আলম চৌধুরীর নেতৃত্বে র্যাব-পুলিশের যৌথ অভিযানে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ধর্ষণের ঘটনায় মামলা দায়েরের পর সোহাগ এলাকা ছেড়ে ঢাকায় গিয়ে আত্মগোপন করে। ঢাকা থেকে সুরভী-৭ লঞ্চে সোমবার ভোরে বরিশাল এসে টার্মিনালে নামার পরেই সে গ্রেফতার হয়। ওইদিন বিকালে সোহাগকে বানারীপাড়া থানা থেকে বরিশালে জেলহাজতে পাঠানো হয়। মামলার অপর আসামী মেহেদী (২৭) ও প্রবাসীর স্ত্রী রুবিনা আক্তার ছবিকে (৩৮) গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে ওসি জানান।
প্রসঙ্গত,১১ জুন উপজেলার সলিয়াবাকপুর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের শাখারিয়া গ্রামের প্রবাসী শহিদুল ইসলাম শহিদের স্ত্রী রুবিনা আকতার ছবির (৩৮) সঙ্গে প্রতিবেশী ভাড়াটিয়া খোকন বেপারির স্ত্রী নার্গিস বেগমের সুসম্পর্ক রয়েছে। ১১ জুন রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে প্রবাসীর স্ত্রী ছবি বাসায় একা দাবি করে নার্গিস বেগমের মেয়ে দশম শ্রেনীর ওই ছাত্রীকে তার সঙ্গে ঘুমানোর জন্য অনুরোধ করেন। মায়ের সম্মতিতে তার সঙ্গে ঘুমাতে গেলে রাত ১২ টার দিকে রুবিনা আক্তার ছবি ওই ছাত্রীকে ঘুম থেকে জাগিয়ে নিয়ে যায় সেনাবাহিনীতে চাকরি করা পাশ্ববর্তী জাকির হোসেন’র ঘরে। গত ৩/৪ বছর ধরে একই গ্রামের ইয়াছিন নামের এক যুবককে দায়িত্ব দেয়া হয় ঐ ঘরসহ সম্পত্তি রক্ষনাবেক্ষনের। ছবির নিয়ে এসে ইয়াসিনের সহায়তায় ঐ ঘরে একই গ্রামের জলিল হাওলাদারের পূত্র সোহাগ (২৩) ও সায়েদ মোল্লার পুত্র মেহেদীর (২৭) হাতে তুলে দেয়। পাহাড়ায় থাকে ইয়াসিন ও ছবি।
এসময় সে ভয়ে ডাক চিৎকার দিতে গেলে তার ওড়না দিয়ে মুখ বেধে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে একটি কক্ষে নিয়ে ওই দুই লম্পট তাকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে তা ভিডিও ধারণ করে রাখে। ওই ঘরের মালিক জাকির হোসেন তার কর্মস্থলে পরিবার নিয়ে বসবাস করেন। সে সুযোগে ইয়াসিন ঐ ঘরে বিভিন্ন ধরনের অপকর্ম করে আসছিল। রুবিনা আক্তার ছবি ও ইয়াছিন ধর্ষকদের সহযোগিতা করে গরীব অসহায় মেয়েটির এমন সর্বনাশ করায় এলাকা জুড়ে তোলপাড় চলছে। তারা এলাকায় মাদক ব্যবসায়ী ও সেবী বখাটে যুবক হিসেবে পরিচিত এবং ইয়াসিনের সহায়তায় ঐ ঘরের দীর্ঘদিন যাবৎ মাদক সেবন ও বিক্রয়ের কর্মকান্ড পরিচালিত হতো। ধর্ষনের সাথে ২ জন সহযোগী অপরাধী থাকা সত্ত্বে ও একজন আসামী না হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে এলাকায় চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। পাশাপাশি ঘটনার দিন থেকে একটি শ্রেনী ইয়াছিনকে বাঁচাতে সর্বোচ্চ চেষ্টা তদ্ববির করে আসছে
১২ জুন সোমবার রাতে ভিকটিমের মা নার্গিস বেগম বাদী হয়ে একই গ্রামের সোহাগ (২৪), মেহেদী (২৭) ও প্রবাসীর স্ত্রী রুবিনা আক্তার ছবিকে আসামী করে এ ব্যপারে বানারীপাড়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। ঘটনার পরপরেই আসামীরা আত্মগোপন করেন।