শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪

সুবর্ণচরে ভূয়া দলীল করে স্বামীর জায়গা দখলের অভিযোগ স্ত্রীর বিরুদ্ধে

সুবর্ণচরে ভূয়া দলীল করে স্বামীর জায়গা দখলের অভিযোগ স্ত্রীর বিরুদ্ধে

মোঃ ইমাম উদ্দিন সুমন, নোয়াখালী প্রতিনিধিঃ

নোয়াখালী সুবর্ণচরে স্বামীর সাক্ষর জাল করে ভূয়া দলীল করে স্ত্রীর নামে সম্পত্তি দখলের অভিযোগ করেছেন
ভুক্তভোগী স্বামী হাফেজ সোহরাব হোসেন।

ভুক্তভোগী চরজুবলী ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড উত্তর কচ্চপিয়া গ্রামের মৃত হাজি
আজহারুল হকের পুত্র সোহরাব হোসেন বলেন, ১৯৯০ সালে ১ লক্ষ টাকা দেনমোহরে
ধার্য মর্মে চর আমান উল্যাহ ইউনিয়ন ৯নং ওয়ার্ডের নয়া পাড়া গ্রামের মৃত
রুহুল আমিন মাষ্টারের মেয়ে নাসরিন আক্তার লুবনাকে বিয়ে করেন। ১৯৯৩ সালে
তাদের ঘরে এক মেয়ে ফাহিমা এবং ১৯৯৪ সালে ১ ছেলে সন্তান সোহানুর রহমান
সম্পদের জন্ম হয়। জীবিকার তাগিদে ১৯৯৫ সালে মালেশিয়া চলে যান সোহরাব
হোসেন। পরিবারের সুখের কথা ভেবে ১৯৯৭ সালে চর জুবলী ইউনিয়নের ৮ নং
ওয়ার্ডের বাসিন্ধা বেলায়েত হোসেন এবং মোঃ নুর হোসেন থেকে উত্তর কচ্চপিয়া
মৌজার ২২৮ নং খতিয়ানের দাগ নং ১১৮৯ এবং ১২০৭ দাগে মোট ৩৮ শতক ৮৩ পয়েন্ট
জায়গা ৫০ হাজার টাকা দিয়ে ক্রয় করে ঘর বাড়ি করেন। বর্তমানে ঐ জমির হাল
খতিয়ান নং ১৩৫৪, দাগ নং ৪৫১৪ এবং হোল্ডিং নং ১৩৫৩ যার খাজনাসহ যাবতীয়
কাগজপত্র অনলাইনেও সোহরাবের নামে রয়েছে।

১৯৯৯ সালে দেশে আসলে স্ত্রী নাসরিন আক্তার লুবনা নানা বিষয় নিয়ে বিবেদ
শুরু করেন সোহরাবের সাথে এ নিয়ে সংসারে ঝগড়া ঝাটি শুরু। স্ত্রীর এসব
আচোরনে বিরক্ত হয়ে সোহরাব হোসেন ২০০৫ সালে আরেকটি বিয়ে করেন বর্তমানে ঐ
ঘরে তার ২ টি শিশু সন্তান রয়েছে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে পারিবারিক কলহ শুরু
করেন নাসরিন আক্তার লুবনা।

এর পর ২০১৫ সালে স্ত্রী নাসরিন আক্তার সোহরাবের দ্বিতীয় পরিবারের
সন্তানদের যেন সম্পত্তির ভাগ না পায় সে জন্য লুবনা সোহরাবের সই জাল করে
একটি ভূয়া দলীল করে এবং সে ভূয়া দলীলের বলে ঐ সম্পত্তি ছেলে সোহানুর
রহমান সম্পদ এবং মেয়ে ফাহিমার নামে দলীল করে দেন চতুর লুবনা বেগম।

ভূয়া দলীলের বিষয়টি জানতে পেরে সোহরাব হোসেন বাদী হয়ে ২০১৭ সালে যুগ্ন
জেলা জজ আদালতে দলীলের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন মামলা নং ১৩১/২০১৭।
২০২১ সালে মামলা নং ৩৪২ /২০২১ মামলার সাক্ষর পরিক্ষা করার জন্য আদালত
সিআইডি ‘ঢাকা ফরেনসিক ল্যাবরেটরি বিভাগে প্রেরণ করেন। ভূয়া দলীলের সাথে
সোহরাবের আঙ্গুলের চাপের মিল নেই মর্মে সিআইডি ফরেনসিক প্রতিবেদনে উল্লেখ
করা হয়। বর্তমানে কোর্টে মামলাটি চলমান এবং রায়ের অপেক্ষায় আছে বলে
জানান সোহরাব হোসেন।

হাফেজ সোহরাব হোসেন আরো বলেন, একটি কুচক্রী মহলের ইন্ধনে আমার বর্তমান
পরিবারের সন্তানদের সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করে বর্তমানে আমার ক্রয়কৃত
পুরো সম্পত্তি দখল করে ঘরবাড়ী নির্মাণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে লুবনাসহ
চক্রটি। আমি ঐসকল কুচক্রি মহলের বিচার চাই এবং জাল দলীল সৃজনকারি এবং
জবরদখলকারিদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত শাস্তির দাবী জানাই। এখন আমার ২ সংসারে ৪
জন ছেলে মেয়ে যদি সম্পত্তির মালিক হয় তাহলে ৪ জন সকলে সমানভাবে পাবে
কিন্তু একপক্ষ জোর করে সম্পত্তি ভোগ করবে অন্যরা পাবেনা সেটা হতে দেয়া
হবেনা।

লুবনার আপন ভাই নুরুল আমিন বাবু বলেন, জায়গটি আমার বোন জামাই সোহরাব
কিনেছে তিনি সহজ সরল মানুষ, বিষয়টি আমরা সামাজিকভাবে সমাধানের চেষ্টা
করেছি কিন্তু সোহরাব আরেকটি বিয়ে করার কারনে তৃতীয় একটি পক্ষের
কুমন্ত্রনার কারনে আমার বোন লুবনার সাথে মিট করা সম্বব হয়নি।

২ জুন শুক্রবার সরজমিনে সোহরাবের বাড়ীতে গেলে অভিযুক্ত নাসরিন আক্তার
লুবনাকে পাওয়া যায়নি, তবে ঐ বাড়ীতে থাকা সোহরাবের মেয়ে ফাহিমার স্বামী
সেলিম বলেন, আমার শ্বাশুড়ি বিয়ে বাড়িতে গেছে আসতে ৩/৪ দিন সময় লাগবে।
জায়গা আমার শ্বশুর সোহরাব হোসেন কিনেছেন কথা সত্য কিন্তু তিনি আমার
শ্বাশুড়ির নামে দলীল করে দিয়েছে, সিআইডির প্রতিবেদনে দলীলের সাক্ষরে মিল
নেয় দেখানো হলে তিনি আরো বলেন এ বিষয়ে কোর্টে মামলা চলমান কোর্টের রায়
আসা পর্যন্ত আমরা কিছুই বলতে পারবোনা।

নাসরিন আক্তার লুবনাকে একাধিকবার ফোন করা হলে তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

তবে সোহরাব হোসেনের প্রবাসী পুত্র সোহানুর রহমান সম্পদের সাথে মুঠো ফোনে
যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, জায়গা আমার বাবা কিনেছেন তবে সেটি আমার মায়ের
নামে দলীল করে দিয়েছেন আমার মা আমাদের নামে দলীল করেন, এখন আমার বাবা যদি
তার পক্ষে কোর্টে রায় পায় আমরা জায়গা ছেড়ে দিবো সমস্যা নাই।

অসহায় হাফেজ সোহরাব হোসেন এসব অনিয়মকারি দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে
সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।

আরো পড়ুন ...

আর্কাইভ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১৩১৫
১৬১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭
৩০