বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪
মোস্তাফিজুর রহমান সুজনঃ
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় স্থানীয় রাজনৈতিক আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগ সম্পাদকের পায়ের রগ কেটে দেয়া সহ তাকে হত্যা চেষ্টায় উপর্যুপরী কুপিয়ে গুরুতর জখম করেছে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা।
এসময় তাকে বাঁচাতে আসায় স্থানীয় এক ব্যবসায়ী সহ অপর দু’জনকে কুপিয়েছে সন্ত্রাসীরা। গতকাল বৃহ¯পতিবার শেষ বিকেলে উপজেলার ধানখালী ইউনিয়নের কলেজ বাজারে এ সশস্ত্র হামলার ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রেরণ করার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক আশংকাজনক অবস্থায় ছাত্রলীগ সম্পাদক জয়নাল মৃধা ও বারেক চৌকিদারকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন।
এ ঘটনায় কলাপাড়া থানা পুলিশ সন্ত্রাসী শাহাবুদ্দিন হাওলাদার (৪০), রাকিবুল হাওলাদার (২৭) ও মিঠু হাওলাদার (২০)কে গ্রেফতার করে আজ শুক্রবার দুপুরে কলাপাড়া সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী, পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার বিকেলে ধানখালী কলেজ বাজারে ইফতারী সামগ্রী কিনতে আসে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সম্পাদক জয়নাল মৃধা। এসময় শাহাবুদ্দিন হাওলাদার ও স্বজল চৌকিদারের নেতৃত্বে একদল সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী জয়নালকে হত্যার পরিকল্পনায় এলোপাথারি ভাবে কোপাতে শুরু করে। একপর্যায় মাটিতে ফেলে তার ডান পায়ের রগ কেটে দেয় সন্ত্রাসীরা।
ভিকটিম জয়নালের আর্তচিৎকারে তাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসায় স্থানীয় ব্যবসায়ী আমির হোসেন ও বারেক চৌকিদার কে কুপিয়েছে সন্ত্রাসীরা। এসময় আতংক ছড়িয়ে পড়ায় স্থানীয়রা দিগবিদিক হয়ে ছোটা ছুটি শুরু করায় বাজারের দোকান পাট বন্ধ হয়ে যায়। ঘটনার পর পর অভিযানে নামে কলাপাড়া থানা পুলিশ এবং তিন সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করে। ধানখালীর সদ্য নির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান শাহজাদা পারভেজ টিনু মৃধা ও সাবেক চেয়ারম্যান রিয়াজ উদ্দিন তালুকদারের নির্বাচনী বিরোধ সহ দলীয় কোন্দলের জেরে এ সশস্ত্র হামলার ঘটনা ঘটে। এ সশস্ত্র হামলার ঘটনায় উভয় পক্ষের অন্তত: ১০ জন আহত হয়।
আহত ছাত্রলীগ সম্পাদক জয়নাল মৃধার ভাই মামুন মৃধা (২৫) বলেন, আমার ভাইকে হত্যার জন্য এ হামলা করা হয়েছে। বর্তমানে তার অবস্থা সংকটাপন্ন। আমি ন্যায় বিচার চাই।
কলাপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. হাসিবুল হসলাম নাহিদ বলেন, মারামারির ঘটনায় দু’জনকে গতকাল চিকিৎসা সেবা দিয়েছি। এদের মধ্যে জয়নালের শরীরে একাধিক জখম রয়েছে। তার অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কলাপাড়া থানার পুলিশ উপ-পরিদর্শক মো. হুমায়ুন বলেন, এ ঘটনায় ২২ জনের নামে থানায় মামলা রুজু করা হয়েছে। এজাহার নামীয় ৩জনকে গ্রেফতারের পর আজ শুক্রবার দুপুরে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
কলাপাড়া থানার ওসি মো. জসিম বলেন, ঘটনার পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে। অপর আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশ তৎপর রয়েছে। আইন শৃংখলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে এবং অপরাধীর বিচার নিশ্চিতে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আহত অপর পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছিল।