বৃহস্পতিবার, ১ মে ২০২৫

মাদারীপুরে পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রম চালু হয়নি আইএইচটি ভবন: নষ্ট হচ্ছে জিনিসপত্র

মাদারীপুরে পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রম চালু হয়নি আইএইচটি ভবন: নষ্ট হচ্ছে জিনিসপত্র

কাজী নাফিস ফুয়াদ, মাদারিপুর প্রতিনিধিতঃ

মাদারীপুরে ৩২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেনকোলোজি’র বহুতল ভবনটি তিন বছরেও পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রম চালু করা সম্ভব হয়নি। বরং এরই মধ্যে নষ্ট হচ্ছে মূল্যবান জিনিসপত্র। এতে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে চলতি শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হওয়া প্রায়ই দুইশো শিক্ষার্থীর জীবন। আর প্রতিষ্ঠান থেকে দক্ষ জনবল তৈরী না হওয়ায় মানসম্মত সেবা থেকে বিরত জেলাবাসী। অন্যদিকে জনবল সংকটের দোহাই দিয়ে দায় এড়ানোর চেষ্টা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ব্যক্তির। আর জেলা প্রশাসন থেকে বিষয়টি নজরে নেয়ার আশ্বাস জেলা প্রশাসকের।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কেউ মেঝেতে বিছানা গুঁছিয়ে বই পড়ছেন। কেউ বা আবার ক্যাম্পাসের বাহিরে ঘুরাঘুরি করছেন। এই চিত্র মাদারীপুর ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেনকোলোজি’র। আছে লাখ লাখ টাকার আসবাবপত্র। রয়েছে কম্পিউটার, লিফট, শিক্ষার্থীদের আবাসিক ও অনাবাসিকসহ নানাসহ সুবিধা। অথচ, উদ্বোধনের তিন বছরেও পূর্ণাঙ্গ চালু করা সম্ভ হয়নি আইএইচটি’র কার্যক্রম। এতে চলতি শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হওয়ায় প্রায়ই দুইশো শিক্ষার্থীর জীবন এখন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

প্রতিষ্ঠানের তত্ত্বাবধায়ক এনায়েত বিন আলী বলেন, মাদারীপুর পৌরসভার সৈয়দারবালী মৌজায় ৩২ কোটি ৮২ লাখ ব্যয়ে ৮ তলাবিশিষ্ট ভবনটি নির্মাণ করে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। পরে ২০২০ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারী এটির উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। এটি চালু হলে ৪ বছর মেয়াদী কোর্সে প্যাথলোজিস্ট, মেডিকেল ল্যাব নেকটিশিয়ান, ডেন্টাল, ফিজিওথেরাপী, স্বাস্থ্য পরিদর্শকসহ বিভিন্ন শাখায় শত শত শিক্ষার্থী ভর্তি হয়ে এখান থেকে উর্ত্তীণ হলে বাড়বে কর্মসংস্থান। গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে ক্লাস শুরুর কথা ছিল প্রতিষ্ঠানটিতে। তবে এখনো পুরোপুরি ক্লাস চালু হয়নি। অবশ্য পুরোদমে প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম চালাতে পদক্ষেপ নেয়ার কথা জানায় প্রতিষ্ঠানের এ কর্মকর্তারা।

রেডিওলজি বিভাগের ছাত্র হাসানুর রহমান বলেন, ‘আবাসিক হলে বিদ্যুৎ না থাকায় আমরা পাশের বাসা থেকে ভাড়ায় বিদ্যুৎ এনেছি। যে কারণে আমাদের পড়াশুনা করতে ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। এছাড়া এক রুমে তিন-চার জন থাকতে হয়। কোনরকমে থাকি তবে পড়াশুনার ব্যবস্থা নেই বললেই চলে।’

আরেক শিক্ষার্থী আরিদুর রহমান বলেন, ‘পানি নেই পুরো ক্যাম্পাস আর আবাসিক হলগুলোতে যে কারণে আমাদের বাহিরে এসে টিউবয়লের পানি ব্যবহার করতে হয়। শিক্ষক না থাকায় ক্লাসও ঠিক মতো হয় না। এভাবে চলছে আমাদের শিক্ষা কার্যক্রম ভেঙ্গে পড়বে। তাই দ্রুত এসব সমাধানের দাবী জানাই।’

এদিকে ভবনটির ৯ লাখ ১০ হাজার টাকা ভুতুড়ে বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকায় সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে ওজোপাডিকো। তাই বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুনের। তিনি বলেন, ‘কিছু অব্যবস্থাপনার কথা আমি শুনেছি। খুবই দ্রুত এর সমাধানের জন্যে স্বাস্থ্য বিভাগে কথা বলা হবে। সাময়িকভাবে শিক্ষার্থীদের সহ্য করে থাকতে হবে। আশা রাখি খুব শীধ্রই সমাধান হয়ে যাবে।’
শিক্ষার্থীদের পদচারনায় পুরো ক্যাম্পাসটি মুখরিত থাকার কথা, কিন্তু এখন কেবলই সুনাশান নিরবতা। কবে পূর্ণাঙ্গ চালু হবে এই প্রতিষ্ঠানটি সেটিই এখন দেখার বিষয়।

আরো পড়ুন ...

আর্কাইভ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১৩১৫১৬
১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭৩০
৩১