মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪

তাহিরপুরে, ৪ হাজার একক জমি জলাবদ্ধতার কারণে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে’দেখার যেন কেউ নেই।”

তাহিরপুরে, ৪ হাজার একক জমি জলাবদ্ধতার কারণে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে'দেখার যেন কেউ নেই।"

মুরাদ মিয়া,সুনামগঞ্জঃ

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার মাটিয়ান হাওরে,ধীরে ধীরে পলি মাটি জমে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা,আর এর ফলে (প্রায় ৪ হাজার) একক ফসিল জমি অনাবাদিতে পরিণত হয়েছে । হাজার হাজার মন ধান উৎপাদন থেকে বঞ্চিত কৃষক।

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (বাউবি) এর নীতি মালায় উল্লেখ রয়েছে, ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণে, ছয় ইঞ্চি মাটি ভরাটের পরপর হেমার কিংবা ভারি যন্ত্রের দ্বারা চাপ প্রয়োগের পর আবার মাটি ভরাট করতে, কিন্তু তা করে, বড় বড় মাটির ধলা দিয়েই, মাটির উপর মাটি ফেলে উঁচু স্তুপ তৈরি করে শেষ বাধেঁর কাজ । এসব অপরিকল্পিত বাঁধ নির্মাণের মাটি, পাহাড়ি ঢলের সামান্য স্রোতের আঘাতে, ভরাট করা মাটি ভেঙে ছুড়ে নিয়ে যায় নদী কিংবা নালায়, আর এ-সবের স্তুপ জমে, পানির নিস্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। এর ফলে উপজেলার মাটিয়ান হাওরের বোয়াল মারার খালা (গাং) নদীর পূর্ব তীর বা( তরং গ্রামের মৃত মস্তফা আখঞ্জী দাইড়) নামক স্থান হইতে বড় খাল পর্যন্ত (প্রায় ২কিলোঃ মিটার) নালা ভরাট হয়ে গেছে । এ ফলে পানি নিস্কাশনের পথ বন্ধ। এসবের কারণে আবাদী জমি, অনাবাদিতে। রোপণ করতে পারছেন না কৃষক। কৃষক ভাগ্যে নেমে এসেছে দুর্ভোগ ।

ভুক্তভোগীদের তথ্য মতে জানা যায়, উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের কৃষকদের জীবন কে অমাবস্যার অন্ধকারে ডেকে নিয়ে গেছে। একমাত্র বোর ফসলের জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। ঐসব কৃষক পরিবার, চাষাবাদ থেকে আজ বঞ্চিত। এগুলো হলো, উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের তরং, শিবরামপুর, বেতাগড়া, মাটিয়ান, কদমতলী, তেলীগাও কামালপুর, ছিলানীতাহিরপুর, নয়াবন্দ, দলইগাঁও, কুড়ের পাড়সহ, দক্ষিণ বড়দল ইউনিয়নের বড়দল, সদর ইউনিয়নের রতনশ্রী, দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়নের শ্রীপুর, উমেদপুরসহ আরও অনেক।

মাটিয়ান হাওর মৌজাসহ কয়েকটি মৌজা মিলে, (প্রায়) ৪ হাজার একক জমিতে পানি আটকে রয়েছে। যার ফলে, ২৫/৩০হাজার মন ধান উৎপাদন থেকে বঞ্চিত কৃষক। মাত্র ২কিলোঃ মিটার নালা খনন করে, নিষ্কাশনের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারলেই, কৃষি চাষাবাদের ব্যয়বার কমে গিয়ে, কৃষকের মুখে ফিরে আসত হাসি।

নিন্মাঞ্চল হওয়ায় এসব জমিতে বোর ধান চাষাবাদ ছাড়া অন্য কোন চাষাবাদ করা যায় না। কিন্তু বিগত ১৪/১৫ বছর ধরে চাষের উপযোগী না থাকায়, এসব জমিতে আবাদ করতে পারছেন না কৃষকরা। এর ফলে দারিদ্রতার কষাঘাতে ভুক্তভোগী পরিবার।

পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না করে দিলে, অনেক কৃষক জমি থাকতেও, ভূমিহীন হয়ে পড়বে। নামে মাত্র রবে মালিক। আয়ের উৎস হাড়াবে কৃষক। আর এর প্রভাব পড়বে, সরকারের রাজস্ব খাতে।

স্থানীয়রা জানায়, গত কয়েক বছর ধরে এ উপজেলায় অপরিকল্পিতভাবে ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ ও নদীর নাব্যতা হাড়ানোর কারণে এসব জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। হাওর বা বিল, নালার পানি,
নদীতে বাহির হওয়ার পথ বন্ধ রয়েছে ।

ভুক্তভোগী তরং গ্রামের কৃষক মাসুক আখঞ্জী জানান, আমিসহ এলাকাবাসীী লোকজন মিলে , জলাবদ্ধতা দূরীকরণে, নালা পানি নিষ্কাশনের জন্য, ইউনিয়ন পরিষদ, কৃষি অধিদপ্তর ও উপজেলা প্রশাসনের নিকট লিখিত আবেদন করেছি। তিনি আরও শেখ হাসিনা সরকার,কৃষক বান্ধব সরকারের এ- আমলেও যদি, কৃষকের দুর্ভোগ পোহাত হয়। তা হলে কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে, অসহায় কৃষক পরিবার। কৃষকের মঙ্গলে, মানবতার জননী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র কাছে জোর দাবি জানাই, অনতিবিলম্বে এর সুব্যবস্থা করুন।

উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলী হায়দার এর কাছে- এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন,এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে, নালা খননের জন্য,একটি আবেদন এসেছে পরিষদে। আমি জনগণের স্বার্থে, আমার স্বাদমতো যে কোনো কাজ করব।এনজিও, ও সরকারের উর্ধতন কতৃপক্ষের কাছে অবগত করে,খাল সংস্কার এবং নদীর সঙ্গে ড্রেন করে অতিসত্বর পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করার সার্বিক ভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাব।

এ ব্যাপারে তাহিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাসান উর দৌলা এর কাছে জানতে চাইলে, তিনি বলেন,খনন করার কাজ আমাদের অধিদপ্তরের নয়। তবে
উপজেলার খনন কমিটির সাথে আলাপ করে, কৃষকের সুবিধার্ত্বে, ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য, উর্ধতন কতৃপক্ষকে- এ বিষয়ে অবহিত করব। তিনি আরও বলেন এবছর মাটিয়ান হাওরে ৩ হাজার ১শত ৫০ হেক্টর জমিতে বোর ধান চাষাবাদ করা লক্ষ্য মাত্র ধরা হয়েছে।

এ ব্যাপারে,তাহিরপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা সুপ্রভাত চাকমা এর কাছে জানতে অফিসিয়ালি মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন করেও ফোন না ধরায় উনার বক্তব্য জানা যায়নি।

আরো পড়ুন ...

আর্কাইভ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১
১৩১৫১৬
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭৩০৩১