শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪

চলতি বোরো মৌসুমে শঙ্কা থাকলেও ব্যস্ত সময় পাড় করছেন কুড়িগ্রামের বোরো চাষিরা

চলতি বোরো মৌসুমে শঙ্কা থাকলেও ব্যস্ত সময় পাড় করছেন কুড়িগ্রামের বোরো চাষিরা

কুড়িগ্রাম সংবাদদাতাঃ
চলতি বোরো মৌসুমে বিদ্যুৎ, ডিজেল, সার ও কীটনাশকসহ কৃষি খাতে সব কিছুর মূল্য বেড়ে যাওয়ায় অনেকটা শঙ্কা থাকলেও দেশের উত্তরের জেলা কুড়িগ্রামে বোরো চাষবাদে ব্যস্ত সময় পাড় করছেন চাষিরা।
জেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, টানা এক সপ্তাহ থেকে এই অঞ্চলে কিছুটা শীত ও ঠান্ডার তীব্রতা কমে যাওয়ায় জেলাজুড়ে কৃষকরা সকালে শীতের মধ্যেও মাঠে বোরো চাষে ব্যস্ত হয়ে পাড় করছেন। তবে গত বছরের চেয়ে এই বছর বোরো চাষে খরচ বেড়ে যাওয়ায় চরম শঙ্কাও দেখা দিয়েছে তাদের মধ্যে। বিদ্যুৎ, ডিজেল ও সার কীটনাশকের দাম হু-হু-করে বেড়ে যাওয়ায় অনেকটা বিপাকে চাষিরা। এই অঞ্চলের প্রধান ফসল বোরো। তাই চোখে-মুখে দুশ্চিন্তার ভাঁজ থাকলেও বোরো চাষে মাঠে নেমেছেন তারা। কেউ জমি হাল-চাষে ব্যস্ত আবার কেউ বীজতলা থেকে চারা তুলতে ব্যস্ত আবার কেউ জমিতে চারা রোপনে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। এভাবে প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চাষিরা বোরো চাষে কট্টর পরিশ্রম করেই যাচ্ছেন। তবে উৎপাদিত ধানের ন্যায্য বাজার মূল্য পেলে লাভের মুখ দেখবেন বলে জানান বোরো চাষিরা।
ফুলবাড়ী উপজেলার কৃষক  কাসেম ও নিতিন চন্দ্র রায় জানান, বিদ্যুৎ,সার তেলসহ কৃষি খাতে সব কিছুর মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় এ বছর বোরো চাষে খরচ বেড়েছে। ফলে এ বছর ১ বিঘা জমিতে ডিজেল চালিত শ্যালো মেশিনের পানির ভাড়া ১৫০০ টাকা ও বিদ্যুৎ চালিত সেচের পানির ভাড়া ২২০০ থেকে ২৫০০ টাকা।
তারা আরও জানান, সার ও কীটনাশকসহ কৃষি খাতে সব ধরনের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় আমরা চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছি। গত বছর ১ বিঘা জমিতে বোরো চাষাবাদে খরচ হয়েছে ৮ থেকে ৯ হাজার টাকা। এই বছর ১ বিঘা জমিতে বোরো চাষাবাদে খরচ বেড়ে ১২ হাজার থেকে ১৩ হাজার টাকা।
তবে তাদের দাবি, ধানের দাম কমপক্ষে ১২০০ থেকে ১৩০০ টাকা মন হলে লাভের মুখ দেখতে পারবে কৃষকরা। তা না হলে কৃষকের লোকসান গুনতে হবে।
এ বিষয়ে জেলার খড়িবাড়ী বাজারের সার ও কীটনাশক ব্যবসায়ী হাবিবুর রহমান ও ওবায়দুল ইসলাম জানান, গত বছর ইউরিয়া সারের সরকার নির্ধারিত মূল্য ছিল ৮০০ টাকা ও টিএসপি ৮০০ টাকা। এই বছর সরকারিভাবে ইউরিয়া সারের মূল্য ১১০০ টাকা ও টিএসপি সারের মূল্য ১১০০ টাকা। সেই সঙ্গে কীটনাশকের কার্টুন গত বছর ছিল ৫ হাজার টাকা। এ বছর ৮ হাজার টাকা বলে জানান তারা। তারা সামান্য লাভ নিয়ে বিক্রি করছেন।
এ ব্যাপারে ফুলবাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিলুফা ইয়াছমিন জানান, এই উপজেলায় চলতি বোরো মৌসুমে ১০ হাজার ১৩৫ হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে কৃষকরা জমিতে বোরো রোপন করেছে। যেভাবে চাষিরা বোরো চাষে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন আশা করছি আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে এই উপজেলায় বোরো চাষাবাদ শেষ হবে।
তিনি আরও বলেন, এই বছর উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে ৭ হাজার কৃষককে সার, বীজসহ বিভিন্ন ধরনের সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। এ ছাড়াও কৃষকদের খরচ কমাতে এ ডাব্ল ডি পদ্ধতিসহ বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে কৃষকরা আশানুরুপ ফলনের পাশাপাশি ভালো দামও পাবে বলে আমার বিশ্বাস।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিপ্লব কুমার মোহন্ত জানান, চলতি বোরো মৌসুমে জেলার ৯টি উপজেলায় ১ লাখ ১৬ হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ পর্যন্ত জেলাজুড়ে ১৬ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষাবাদ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ভালো ফলনের পাশাপাশি ভালো দামও পাবেন চাষিরা।

আরো পড়ুন ...

আর্কাইভ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১৩১৫
১৬১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭
৩০