শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪
মিজানুর রহমান মিজান, বিরামপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ
দিনাজপুর জেলার বিরামপুরে এক দুস্থ নারীর চিকিৎসার অনুদানের ৫০ হাজার টাকা পাইয়ে দিতে ঘুস নেওয়ার অভিযোগে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর রাজন সৌরভকে সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
গত বুধবার (২৫ জানুয়ারি) বিকালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, বিরামপুর উপজেলা শাখা ছাত্রলীগের পক্ষ থেক এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা তানভীর রাজন সৌরভ বিরামপুর উপজেলার ৬নং জোতবানি ইউনিয়নের কসবা সাগরপুর গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে এবং উপজেলার ৬নং জোতবানি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক।
বিরামপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক ও সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘অসুস্থ ওই নারীর কাছ থেকে বিভিন্ন অজুহাতে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর রাজন সৌরভের টাকা নেওয়ার ঘটনাটি ইতোমধ্যে আমি অবগত হয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করার জন্য তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। তবে ঘটনার সত্যতা প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাঁকে সাময়িকভাবে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, ভুক্তভোগী আঞ্জুয়ারা বেগম বিরামপুর উপজেলার ২নং কাটলা ইউনিয়নের ফুলডাঙ্গা আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে বসবাস করেন।
আঞ্জুয়ারা বেগমের স্বামী মারা গেছেন। এরপর থেকে স্থানীয় বাজারের একটি দোকান থেকে কাপড় কিনে তা বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে বাড়ি বাড়ি ঘুরে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন। বর্তমানে তিনি মেরুদণ্ডের হাড়ের সমস্যা ও কিডনি রোগে ভুগছেন।
ভুক্তভোগী আঞ্জুয়ারা বেগম অভিযোগ করে বলেন, কয়েক মাস আগে আশ্রয়ণে আসেন সৌরভ। সেখানে এক দোকানির কাছে এ এলাকার অসুস্থ লোকের তালিকা জানতে চান। পরে দোকানদার আঞ্জুয়ারাকে পরিচয় করিয়ে দেন। সৌরভ এমপি মহোদয়ের কাছ থেকে চিকিৎসার অনুদানের ৫০ হাজার টাকা পাইয়ে দিতে বিভিন্ন অজুহাতে ১৪ হাজার ৬০০ টাকা নেন আঞ্জুয়ারার কাছ থেকে।
এরপর কয়েকমাস হয়ে গেলেও অনুদানের টাকা দেননি আঞ্জুয়ারাকে। অবশেষে আঞ্জুয়ারা তার দেওয়া ১৪ হাজার টাকা ফেরত চাইলেও টালবাহানা করতে করতে একপর্যায়ে হুমকি দিতে থাকেন সৌরভ। পরে বিয়ষটি সাংবাদিককে জানাতে চাইলে টাকা ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দিলেও টাকা ফেরৎ দেয়নি সৌরভ।
অপরদিকে আশ্রয়ণ প্রকল্পের আরেক নারী উজির সরকারের স্ত্রী সাবিনা বেগম জানান, তানভীর রাজন সৌরভ অনুদানের টাকা পাইয়ে দিতে চেয়ে আমার কাছেও তিন হাজার টাকা নেয়েছেন।
এসব অভিযোগ অস্বীকার করে ছাত্রলীগ নেতা তানভীর রাজন সৌরভ বলেন, ‘আসলে আমি তাঁর কাছে ১০ হাজার টাকার মতো ধার নিয়েছিলাম। তবে মানুষজন তাঁকে বিভিন্নভাবে প্রভাবিত করে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।’
এ বিষয়ে ২নং নম্বর কাটলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও কাটলা ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. ইউনুস আলী মন্ডল বলেন, আমার জানামতে চিকিৎসাসহ যে কোনো অনুদানের টাকা পেতে কোনো ঘুসের প্রয়োজন হয় না। অসহায় ব্যক্তির টাকা নিয়ে সে কাজটি ভালো করেননি।