সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪
কুড়িগ্রাম সংবাদদাতাঃ
আর কোথাও নদী নাই? বালু নাই? চিলমারীর খনিজসম্পদগুলোই তোলা লাগবে কেন? আমাদের এখানে কি কারখানা হবে না?’ এমন সব প্রশ্ন রেখে বক্তব্য দেন ঐতিহ্যবাহী চিলমারী বন্দর থেকে কুড়িগ্রাম শহরে গিয়ে মানববন্ধনে অংশ নেওয়া কৃষক, ছাত্র ও স্থানীয় বাসিন্দারা। মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে কুড়িগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে ঘণ্টাব্যাপী এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে অবৈধভাবে বালু তোলা বন্ধের দাবিতে এ মানববন্ধনের আয়োজন করে রেল-নৌ, যোগাযোগ ও পরিবেশ উন্নয়ন গণকমিটির চিলমারী উপজেলা শাখা।
মানববন্ধনে অংশ নিয়ে স্কুল শিক্ষক রহমত আলী বলেন, ‘বালুর দরকার আছে। সেগুলো কোদাল দিয়ে তুললে অসুবিধা কী? নৌকা দিয়ে তুললে অসুবিধা কী? কৃষক ও কৃষি ধ্বংস করে কয়েকটা লোক টাকাঅলা হচ্ছে, এটি চলতে দেওয়া যায় না।’
আয়োজক কমিটির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক জামিউল ইসলাম বিদ্যুৎ বলেন, ‘বালুদস্যুরা চিলমারীর ব্রহ্মপুত্র নদের যে পয়েন্টগুলোতে বালু তোলে, সেগুলো খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের চিহ্নিত এলাকা। এই এলাকার বালুই মোটা বালু বলে পরিচিত। যার একটনের বাজার ৫ লাখ টাকা। কিন্তু বালুদস্যুরা ব্যক্তিস্বার্থে তা বিক্রি করছে মাত্র ৩শ টাকায়।’
এই বক্তা আরও বলেন, ‘জবাবদিহিহীন ব্যবস্থা থাকায় কৃষক জমি হারাচ্ছে, পশু-পাখি-মাছ আবাস হারাচ্ছে। বাংলাদেশ নিজেকে হারাচ্ছে।’
সংগঠনের সাবেক সহ-সভাপতি সহকারী অধ্যাপক আবদুল কাদের বলেন, ‘অবৈধ বালু উত্তোলনের বিরোধিতা করায় বছরখানেক আগে চিলমারী নৌপুলিশের একজন এসআইকে বদলি করা হয়েছে। অবৈধ বালু উত্তোলনের কারণে হাজার হাজার বিঘা আবাদি জমি ও বসতভিটা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে এবং হচ্ছে। এর ফলে শত শত পরিবার নিঃস্ব হচ্ছে। অবিলম্বে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধের জোর দাবি জানাই।’
মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করেন, আগে জেলা পরিষদের অধীনে ৩ কোটি টাকার চিলমারী ঘাটের যা ভাড়া ছিল, বিআইডব্লিউটিএ’র ১০ লাখ টাকার ঘাট হওয়ার পরেও আগের ভাড়াই চলছে। উল্টো জোড়গাছ হাটে নৌকা ভিড়লেও ভাড়া নিচ্ছে। এই চক্রই আজ বালুদস্যু হিসেবে হাজির হয়েছে। কিন্তু তাদের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে পারছে না।
অবিলম্বে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করা না হলে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলার ঘোষণা দেন বক্তারা।