সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় দুই রাজ্য আসাম ও মেঘালয়ে টানা কয়েকদিন বৃষ্টির প্রভাবে ভারত ছাড়াও বাংলাদেশের সিলেট, সুনামগঞ্জসহ বিভিন্ন অঞ্চলে ব্যাপক বন্যা দেখা দিয়েছে।
এরই মধ্যে ভারতের রাজ্যদুটিতে নতুন করে অতিভারি বর্ষণের পূর্বাভাস দিয়েছে দেশটির আবহাওয়া বিভাগ (আইএমডি)। এতে বাংলাদেশের বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হওয়ার আশঙ্কা আছে। বাংলাদেশ সরকারের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের পূর্বাভাসে এমনটিই জানানো হয়েছে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের হিসাবে, দেশের সবগুলো প্রধান নদ-নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়া আগামী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী, দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং ভারতের আসাম, মেঘালয় ও হিমালয় পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গের স্থানসমূহের মাঝারি ভারি থেকে অতিভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে আগামী ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র-যমুনা, গঙ্গা-পদ্মা, সুরমা, কুশিয়ারা, তিস্তা, ধরলা, দুধকুমারসহ সব প্রধান নদ-নদীর পানি আরও বৃদ্বি পেতে পারে।
ফলে আগামী ২৪ ঘণ্টায় সিলেট, সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোণা, লালমনিরহাট, রংপুর, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, জামালপুর জেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। এছাড়া একই কারণে এই সময়ের মধ্যে টাঙ্গাইল, মুন্সীগঞ্জ ও শরীয়তপুর জেলার নিম্নাঞ্চলে বন্যা সৃষ্টির আশঙ্কা প্রকাশ করেছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।
প্রসঙ্গত, ভারতের আসাম ও মেঘালয়ের রেকর্ড বৃষ্টি চরম দুর্ভোগ নিয়ে এসেছে বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকায়। গত এক সপ্তাহ ডুবে রয়েছে সিলেট ও সুনামগঞ্জ। পাহাড়ি ঢল আর টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত জনজীবন। অবর্ণনীয় দুর্দশার মধ্যে লাখ লাখ বাসিন্দা। ঘরে-বাইরে পানিতে থইথই। খাবার নেই, বিদ্যুৎ নেই। যোগাযোগবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে দুর্গত এলাকা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মৌসুমের তৃতীয় দফা বন্যায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে সিলেট ও সুনামগঞ্জের অন্তত ৪০ লাখ মানুষ। এছাড়া দুজনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। এরমধ্যে একজন এসএসসি পরীক্ষার্থী স্রোতের টানে ভেসে গেছে। আরেকজন বয়স্ক ব্যক্তি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছেন।
সিলেট-সুনামগঞ্জে যে বন্যা চলছে তা ১২২ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান।