বৃহস্পতিবার, ৮ মে ২০২৫
কুলাউড়া প্রতিনিধি :
ভাগ্যবদলের আশায় ওলিউর রহমান ছুটে যান চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে। শ্রমিক হিসেবে কাজ পান বিএম কনটেইনার ডিপোতে। লক্ষ্য পরিবার-পরিজনের মুখে হাসি ফুটানোর। কিন্তু তার সেই স্বপ্ন ডানা মেলতে পারেনি।
বিএম কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে লাইভ করার সময় বিস্ফোরিত হয়ে মারা যায় ওলিউর রহমান (২৩)। স্থানীয়রা তাকে নয়ন নামে চেনেন। নয়নের গ্রামের বাড়ি কুলাউড়া উপজেলার কর্মধা ইউনিয়নের ফটিগুলী গ্রামে।
তার বাবা আশিক আলী। পরিবারের ৪ ভাই ও ২ বোনের মধ্যে সে বড়। দরিদ্র পরিবারে বেড়ে ওঠা নয়ন প্রায় ৪ মাস পূর্বে একই গ্রামের বাসিন্দা মামুন মিয়ার মাধ্যমে চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড বিএম কনটেইনার ডিপোতে শ্রমিকের কাজে যোগ দেন। মামুনও ওই জায়গায় ঠিকাদার হিসেবে কাজ করতো বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়।
জানা গেছে, শনিবার (৪ জুন) রাত সাড়ে ৯টার দিকে চট্টগ্রামের বিএম কনটেইনার ডিপোতে হঠাৎ আগুনের ঘটনা ঘটে। এ সময় লাইভে থেকে সবাইকে আগুনের খবর দিচ্ছিল অলিউর। হঠাৎ অনেক শব্দে বিস্ফোরণ হলে হাতের মোবাইল ছিটকে যায় ওলিউরের।
তারপর চারদিকের আহাজারি, চিৎকার শোনা গেলেও ওলিউর রহমান কোথায় কি অবস্থায় আছে তা জানা যায়নি। এদিকে রোববার সকালে পরিবারের কাছে খবর আসে ওলিউর মারা গেছে। তার মৃত্যুতে পরিবারসহ গোটা এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। ভাগ্য বদলের আশায় ৪ মাস পূর্বে সীতাকুণ্ডে কাজে যায় ওলিউর। বড় ছেলের আকস্মিক মৃত্যুতে বাকরুদ্ধ বাবা আশিক আলীসহ স্বজনরা।
ওলিউর রহমানের সহকর্মী রুয়েল বলেন, আমরা ওই সময় খাবারের জন্য ডিপো থেকে চলে আসি। কিন্তু ফেইসবুকে লাইভ করার জন্য ওলিউর সেখানে থেকে যায়। তার লাইভ ভিডিও দেখেই তা নিশ্চিত হই।
তিনি আরও বলেন, ওলিউর আর বেঁচে নেই। তার ক্ষতবিক্ষত মরদেহ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রয়েছে। রাত আনুমানিক ২টার দিকে নিহত ওলিউর রহমানের লাশ চট্টগ্রামের মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসেন উদ্ধারকর্মীরা।
ওলিউর রহমানের চাচা সুন্দর আলী জানান, রোববার রাতে ওলিউরের মরদেহ আমরা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে রিসিভ করবো।
কর্মধা ইউপির চেয়ারম্যান মুহিবুল ইসলাম আজাদ বলেন, দরিদ্র এই পরিবারের উপার্জনকারী মারা যাওয়ায় সত্যিই পরিবারটি বিপাকে পড়েছে।