রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪
বিরামপুর (দিনাজপুর) থেকে মিজানুর রহমান মিজান ঃ
দিনাজপুর জেলার বিরামপুর উপজেলা শহরের বিভিন্ন মোড় ও গ্রামাঞ্চালের হাট বাজারগুলোতে সুস্বাদু তাল শাঁস বিক্রির দুম পড়েছে। মৌসুমি বিক্রেতারা বিভিন্ন এলাকার গাছ থেকে অপরিপক্ক (কচি) তাল নিয়ে এসে তাল শাঁস বিক্রির পসরা সাজিয়ে বসেছে। আর জৈষ্ঠ্যের গরমে অস্থির ক্রেতারা তাল শাঁস খেয়ে স্বস্তির পাওয়ার চেষ্টা করছেন।
বিরামপুর পৌর শহরের জনতা ব্যাংক মোড়ের তাল শাঁস বিক্রেতা সাদ্দাম হোসেন বলেন, তিনি তিলকপুর এলাকা থেকে অপরিপক্ক তাল নিয়ে এসেছেন। সেই তাল থেকে শাঁস বের করে প্রতি পিচ তাল শাঁস ৭/৮ টাকা দরে বিক্রি করছেন। গত বছর ৪/৫ টাকা দরে তাল শাঁস বিক্রি করলেও এবার তালের দাম বৃদ্ধি ও পরিবহন খরচ বেড়ে যাওয়ায় বেশি দামে তাল শাঁস বিক্রি করছেন।
সুস্বাদু এই তাল শাঁসের চাহিদার কারণে শহরের বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে এবং গ্রামাঞ্চালের হাট-বাজারে এখন তাল শাঁস বিক্রির ধুম পড়েছে। এতে মৌসুমি বিক্রেতারা বাড়তি আয় করছেন। ক্রেতারাও স্বস্তিতে স্বাদ গ্রহণ করতে পারছেন।
বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ শ্যামল কুমার রায় জানান, গরমের দিনে তাল শাঁস পানি শূণ্যতা দূর করে। এতে বিভিন্ন ধরণের উপকারী ভিটামিন রয়েছে। তাল শাঁস শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। চোখের দৃষ্টি শক্তি ও মুখের রুচি বাড়ায়।
এছাড়াও গ্রীষ্মের এই দিনে এশিয়ার দেশেগুলোতে কাঁচা তালের শাঁস খুবই প্রিয় একটি খাবার। তালের শাঁসকে নারিকেলের মতই পুষ্টিকর বলে বিবেচনা করা হয়। গরমের এই দিনে অনেকের হাতে পৌঁছে যায় কচি তালের শাঁস।
মিষ্টি স্বাদের মোহনীয় গন্ধে ভরা প্রতি ১০০ গ্রাম তালের শাঁসে রয়েছে ৮৭ কিলোক্যালরি, ৮ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, জলীয় অংশ ৮৭.৬ গ্রাম, আমিষ .৮ গ্রাম, ফ্যাট .১ গ্রাম, কার্বোহাইড্রেটস ১০.৯ গ্রাম, খাদ্যআঁশ ১ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ২৭ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ৩০ মিলিগ্রাম, লৌহ ১ মিলিগ্রাম, থায়ামিন ০৪ গ্রাম, রিবোফাভিন .০২ মিলিগ্রাম, নিয়াসিন .৩ মিলিগ্রাম, ভিটামিন সি ৫ মিলিগ্রাম। এসব উপাদান আপনার শরীরকে নানা রোগ থেকে রক্ষা করাসহ রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে।
তালের শাঁসের স্বাস্থ্য উপকারিতা
১. গরমের দিনে তালের শাঁসে থাকা জলীয় অংশ পানিশূন্যতা দূর করে। প্রাকৃতিকভাবে দেহকে রাখে ক্লান্তিহীন।
২. তালে থাকা ভিটামিন সি ও বি কমপ্লেক্স আপনার পানিপানের তৃপ্তি বাড়িয়ে দেয়। খাবারে রুচি বাড়িয়ে দিতেও সহায়তা করবে।
৩. তালে থাকা ভিটামিন এ দৃষ্টিশক্তিকে উন্নত করে।
৪. তালে থাকা এন্টি অক্সিডেন্ট শরীরকে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়।
৫.তাল বমিভাব আর বিস্বাদ দূর করতে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
৬. তালে থাকা উপকারী উপদান আপনার ত্বকের যত্ন নিতে সক্ষম।
৭. কচি তালের শাঁস লিভারের সমস্যা দূর করতে সহায়তা করে।
৮.কচি তালের শাঁস রক্তশূন্যতা দূরীকরণে দারুণ ভূমিকা রাখে।
৯. তালের শাঁসে থাকা ক্যালসিয়াম হাড় গঠনে দারুণ ভূমিকা রাখে।