সিনিয়র জুনিয়র দ্বন্দ্বে নারায়ণগঞ্জে স্কুলছাত্র খুন

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার ইসদাইরে সিনিয়র জুনিয়র দ্বন্দ্বের জেরে ছুরিকাঘাতে স্কুলছাত্র ধ্রুব চন্দ্র দাস (১৬) হত্যার ঘটনায় ১০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

বুধবার (১৮ মে) রাতে নিহতের বাবা মাধব চন্দ্র দাস বাদী হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় এ মামলা দায়ের করেন। মামলায় হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গ্রেফতার ছয়জনসহ ১০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

আসামিরা হলেন- ফতুল্লা থানার ইসদাইর বাজার এলাকার মিঠুর ছেলে ইয়াসিন (১৬), ইসদাইর উকিলের বাড়ির লিটন দাসের ছেলে পিয়াশ দাস (১৬), বলয় চন্দ্র রায়ের ছেলে রিপন (১৭), উজ্জ্বল চন্দ্র দাসের ছেলে রুদ্র চন্দ্র দাস (১৬), বিমল চন্দ্র শিলের ছেলে অন্তু চন্দ্র শীল (১৬), শ্যামল চন্দ্র দাসের ছেলে জয় চন্দ্র দাস (১৭), প্রান্তোষের ছেলে প্রভাত (১৬), একই এলাকার তুহিন (২১), ফয়সাল (২১) ও হিমেল (১৯)।

মামলায় বাদী উল্লেখ করেন- তার একমাত্র ছেলে ধ্রুব চন্দ্র দাস ফতুল্লা থানার ইসদাইর এলাকায় রাবেয়া হোসেন উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির ছাত্র। সোমবার (১৭ মে) সন্ধ্যার সময় তার ছেলে নিজ বাসায় বসে লেখাপড়া করছিল। রাত আটটার দিকে ছেলের সহপাঠী রিপন ও রুদ্র চন্দ্র দাস বাসায় এসে তাদের অপর এক সহপাঠীর জন্মদিনের গিফট কেনার কথা বলে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে যায়।

রাত সাড়ে আটটার দিকে রাবেয়া স্কুলের সামনে রাস্তায় পৌঁছালে ধ্রুবর সহপাঠী রিপন, রুদ্র চন্দ্র দাস ও অভিযুক্ত আসামিরা এবং অজ্ঞাতনামা আরও ২/৩ জন হাতে ছোরা, চাকু, সুইচ গিয়ার, লোহার পাইপ ইত্যাদি দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে পরিকল্পিতভাবে ধ্রুবকে এলোপাতাড়ি আঘাত করে। এক পর্যায়ে হাতে থাকা লোহার পাইপ দিয়ে ধ্রুবকে এলোপাতাড়ি পেটায় তারা।

এ সময় অভিযুক্ত ইয়াসিন তার হাতে থাকা ছুরি দিয়ে ধ্রুবকে ছুরিকাঘাত করে। ফলে রাস্তায় পড়ে যায় ধ্রুব। খবর পেয়ে বাদীর ছোট ভাই মিঠুন চন্দ্র দাস ও তুষার ঘটনাস্থলে গিয়ে রক্তাক্ত জখম অবস্থায় ধ্রুবকে উদ্ধার করে প্রথমে সদরের নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে (ভিক্টোরিয়া) নিয়ে গেলে চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দেন।

তবে অবস্থা আশঙ্কা হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য আহত ধ্রুবকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। পরে বাদীসহ স্বজনরা ধ্রুবকে অ্যাম্বুলেন্স যোগে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে রাত সোয়া ১০টার দিকে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনার পর পরই পুলিশ ছয়জনকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- ফতুল্লা থানার ইসদাইর এলাকার মো. মিঠুর ছেলে ইয়াসিন (১৫), ইসদাইর উকিল বাড়ির লিটন দাসের ছেলে পিয়াস দাস (১৫), ইসদাইর বটতলার বিমল চন্দ্র শীলের ছেলে অন্ত চন্দ্র শীল (১৫), পূর্ব ইসদাইর বুড়ির দোকানের বলয় চন্দ্রের ছেলে রিপন, ইসদাইর বাজার এলাকার শ্যামল চন্দ্র দাসের ছেলে জয় চন্দ্র দাস (১৭) ও বুড়ির দোকান এলাকার উজ্জ্বল চন্দ্র দাসের ছেলে রুদ্র চন্দ্র দাস (১৬)।

মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ রিয়াজুল হক দিপু জানান, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পুলিশ ইতোমধ্যে এজাহার নামীয় ছয় আসামিকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। অন্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।