সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪
ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’র প্রভাবে সাগর উত্তাল রয়েছে। জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে। কিন্তু ঘূর্ণিঝড়ের মাঝে উত্তাল সাগরে ঝুঁকিপূর্ণভাবে পানিতে নেমেছেন পর্যটকরা। লাইফগার্ড কর্মীদের নির্দেশনাও মানছেন না। আর ঘূর্ণিঝড় অশনি মোকাবিলায় প্রস্তুত বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসক।
সোমবার (৯ মে) দুপুরে পুরো আকাশ জুড়ে কালো মেঘ, নিচে সাগর উত্তাল ঢেউ। চারদিকে জোরালো বাতাসে নড়ছে গাছপালা। মাঝে মাঝে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। আর বালিয়াড়িতে সতর্কতামূলক মাইকিং করছে লাইফগার্ড কর্মীরা।
জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়েও বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশাল বিশাল ঢেউ আঘাত করছে তীরে। কিন্তু তার মাঝেই উত্তাল ঢেউয়ে ঝুঁকি নিয়ে সমুদ্রস্নানে ব্যস্ত হাজারও পর্যটক। লাইফগার্ড কর্মীরা সতর্ক করলেও মানছে না তাদের নির্দেশনা। তবে পর্যটকরা বলছে, ঘূর্ণিঝড় নিয়ে তারা কোনো নির্দেশনা পায়নি।
নারায়ণগঞ্জ থেকে আগত পর্যটক সোয়েব আহমেদ বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের বিষয়টি জানি না। সৈকতের প্রবেশের সময়ও কোনো নির্দেশনা পায়নি। আর লাইফগার্ড কর্মীরাও কেউ কিছু বলেনি। তাই সাগরে নেমে পরিবার পরিজন নিয়ে গোসল করছি। তবে ঘূর্ণিঝড়ের বিষয়টি জানলে সাগরে নামতাম না।
আরেক পর্যটক রহিম উদ্দিন বলেন, অনেক দূর থেকে এসেছি, ঘূর্ণিঝড় অশনির কারণে ২ নম্বর সংকেত সেটাও জানি। কিন্তু দূর থেকে এসে সমুদ্রে গোসল করবো না, তাই কি হয়! তাই এসে গোসল করছি।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সাগর উত্তাল থাকায় পর্যটকদের সতর্ক করতে প্রচারণা চলছে, তবে সতর্ক সংকেত বাড়লে কঠোর হবে বলে জানান লাইফগার্ড কর্মীরা।
সী সেইফ লাইফগার্ড কর্মী মোহাম্মদ শুক্কুর বলেন, কোনো নির্দেশনা এখনো পায়নি। তবে সাগর উত্তাল দেখে পর্যটকদের হাটু পানিতে গোসল করার জন্য বার বার মাইকিং করছি এবং পর্যটকদের সতর্ক করছি। তবে পর্যটকরা মানতে চায় না। যদি সতর্ক সংকেত বাড়ে তাহলে যা নির্দেশনা আসবে তাই পালন করব।
এদিকে সোমবার দুপুরে ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতিমূলক সভা কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ বলেন, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৫৭৬টি আশ্রয়কেন্দ্র। জেলার ৮ হাজার ৬০০ স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রয়েছে। পুলিশ, আনসার, কোস্টগার্ড, রেডক্রিসেন্ট প্রস্তুত রয়েছে। ঘূর্ণিঝড় প্রবল হলে ৫ লক্ষাধিক মানুষকে নিরাপদে আশ্রয় দেওয়া সম্ভব হবে।
আবহাওয়ার সর্বশেষ বুলেটিন অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড় অশনি কক্সবাজার সমুদ্র বন্দর থেকে এক হাজার ২০ কিলোমিটার দক্ষিণ দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছে। যার প্রভাবে ২ নম্বর দূরবর্তী হুশিয়ারি সংকেত জারি রয়েছে।