বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪
অনিয়ম সমন্বয়হীনতা গাফিলতি ।
উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন: চার মাস আগে এক কোটি ২৮ লাখ টাকা ব্যয়ে আমানত শাহ মেরামতের পরও তলদেশে ফাটল ও অসংখ্য ছিদ্র ।
পদে পদে অনিয়ম, অদক্ষতা, সমন্বয়হীনতা ও গাফিলতিতে গত চার মাসে পাঁচবার ফেরি দুর্ঘটনা ঘটেছে। অগ্নিকাণ্ডসহ দুর্ঘটনার ঝুঁকিতে রয়েছে আরও অনেক ফেরি। সর্বশেষ ২৭ অক্টোবর মানিকগঞ্জের পাটুরিয়ায় রো রো ফেরি আমানত শাহ ডুবে যাওয়ার ঘটনায় এসব কারণসহ আরও কিছু বিষয় চিহ্নিত করা হয়েছে। একই কারণে শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ী রুটের চারটি ফেরি পদ্মা সেতুতে আঘাতের ঘটনা ঘটেছে।
ফেরি পরিচালনাকারী রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহণ করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) আর্থিক ও প্রশাসনিক অনিয়ম এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গাফিলতির কারণেই মূলত ফেরিগুলোর এ অবস্থা তৈরি হয়েছে। এতে সেগুলোর ইঞ্জিনের আয়ুষ্কাল ও সক্ষমতা কমে যাচ্ছে। এছাড়া এই সংস্থার ৫৩টি ফেরির মধ্যে ৫০টিরই ফিটনেস সনদ নেই। অথচ ওইসব ফেরিতেই প্রতিনিয়ত যাত্রীবাহী ও পণ্যবাহী গাড়ি পারাপার করা হচ্ছে। বাকি তিনটির ফিটনেস সনদ রয়েছে। ফেরি দুর্ঘটনায় নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয় গঠিত উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে পাওয়া গেছে উল্লিখিত সব তথ্য। তবে তদন্ত প্রতিবেদনে সরাসরি কাউকে দায়ী করে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়নি। তদন্ত কমিটির সদস্যরা মঙ্গলবার (১৬ নভেম্বর) নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরীর কাছে এ প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। এ কমিটি শাহ আমানত ফেরিসহ অন্য ফেরিগুলোর বর্তমান পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেছে। দুর্ঘটনা এড়াতে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি-তিন ক্যাটাগরিতে সুপারিশ করেছে।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে নৌসচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী যুগান্তরকে বলেন, ‘কাল (মঙ্গলবার) প্রতিবেদন পেয়েছি। এর আগেও ফেরির একটি কমিটির প্রতিবেদন আমাদের কাছে আছে। দুটি প্রতিবেদন নিয়ে বিআইডব্লিউটিসি, বিআইডব্লিউটিএসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর কর্মকর্তাদের নিয়ে একটি ওয়ার্কপ্ল্যান তৈরি করব। সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিআইডব্লিউটিসিতে সমন্বয়হীনতার গভীরতা কতটুকু, তা যাচাই করে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
জানা যায়, ২৭ অক্টোবর আমানত শাহ ফেরি দুর্ঘটনার পর নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়ের সুলতান আব্দুল হামিদকে প্রধান করে সাত সদস্যের এ কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটিতে বিআইডব্লিউটিসির পরিচালক (কারিগরি) মো. রাশেদুল ইসলাম, বিআইডব্লিউটিএ পরিচালক (আইসিটি) রকিবুল ইসলাম তালুকদার, নৌপরিবহণ অধিদপ্তরের নটিক্যাল সার্ভেয়ার ক্যাপ্টেন সাঈদ আহমেদসহ বিভিন্ন সংস্থা এবং বুয়েটের সদস্য রাখা হয়। কমিটিকে আমানত শাহসহ সম্প্রতি ফেরি দুর্ঘটনাগুলোর কারণ অনুসন্ধান ও মানোন্নয়নে সুপারিশ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়।
যে কারণে পাঁচবার ফেরি দুর্ঘটনা : জানা যায়, তদন্ত প্রতিবেদনে আমানত শাহ ফেরিডুবি ও পদ্মা সেতুতে চারবার আঘাতের ঘটনায় বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম, সমন্বয়হীনতা ও গাফিলতির থাকা বিষয়টি উঠে এসেছে। আমানত শাহ দুর্ঘটনার বিষয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই ফেরিতে অসংখ্য ছিদ্র ছিল। সেটির বামদিকের তলদেশে দুই থেকে আড়াই ইঞ্চি পরিমাণ ছিদ্র দিয়ে পানি প্রবেশ করে। এতে ফেরিটি কাত হয়ে গেলে পানির ওপরের লেভেলে থাকা অন্য ছিদ্রগুলো দিয়েও দ্রুত পানি প্রবেশ করতে থাকে। এছাড়া বালাস্ট (নৌযানের ভারসাম্য রক্ষার জন্য নেওয়া পানির স্থান) ট্যাংকগুলোয় প্রবেশের মুখগুলো নাটবল্টুর মাধ্যমে বন্ধ রাখা উচিত। কিন্তু কখনোই এগুলো বন্ধ করা হয়নি। বালাস্ট ট্যাংকের পানির পরিমাণ যাচাই করার মতো অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি অগ্রাহ্য করেছেন সংশ্লিষ্টরা। এ কারণে ফেরির তলদেশে বামদিকের ছিদ্র দিয়ে দ্রুতগতিতে পানি ঢুকে এক কম্পার্টমেন্ট থেকে আরেক কম্পার্টমেন্টে চলে যায়। এতে ফেরিটি কাত হয়ে যায়। তখন ডেকের ওপরের অনেক ছিদ্র থাকায় এবং ম্যানহোল খোলা থাকায় সেগুলো দিয়েও পানি প্রবেশ করে। ফলে ফেরিটি ভারসাম্য হারায় এবং ডানদিকের যানবাহনগুলো বামদিকে চলে আসায় খুব কম সময়ে কাত হয়ে ডুবে যায়।
বিআইডব্লিউটিসি সূত্রে জানা যায়, থ্রি এঙ্গেল মেরিন নামক একটি বেসরকারি ডকইয়ার্ডে গত জুনে ফেরিটি ১ কোটি ২৭ লাখ ৮৭ হাজার টাকা ব্যয়ে মেরামত করা হয়। ওই সময়ে ফেরির প্রপালশন (পাখা) সিস্টেম পরিবর্তন করা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফেরির তলদেশের কোনো কাজ হয়নি, স্যান্ড ব্ল্যাস্টও করা হয়নি। ওয়েল্ডিংয়ের কাজে দুর্বলতা রয়েছে। যথাযথভাবে ডকিং করা হলে ফেরির পাশে বিদ্যমান একাধিক ছিদ্র মেরামত করা হতো। ফলে এসব দিয়ে দ্রুতগতিতে পানি ভেতরে প্রবেশ করতে পারত না। এছাড়া জাহাজের ব্যালাস্টিং-ডিব্যালস্টিংয়ের কাজেও গাফিলতি ছিল।
আরও জানা যায়, গত জুলাই ও আগস্টে শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ী রুটে চলা চারটি ফেরি পদ্মা সেতুতে আঘাত করে। ওইসব ফেরির চালকদের কারোরই যথাযথ প্রশিক্ষণ নেই। বিআইডব্লিউটিএ মৌখিকভাবে নির্দিষ্ট রুট দিয়ে চলতে বললেও তেল বাঁচাতে সংক্ষিপ্ত (শর্টকাট) পথে ফেরি চালিয়েছিলেন চালকরা। এছাড়া এ সংস্থার কোনো ফেরি নিয়ম অনুযায়ী রক্ষণাবেক্ষণ করা হয় না। পাশাপাশি অধিক বয়সি ফেরি ও দুর্বল ইঞ্জিন দিয়ে চালানো, নদীতে স্রোত ও ঘূর্ণি থাকাসহ বিভিন্ন কারণ খুঁজে পেয়েছে তদন্ত কমিটি। কাকলী ফেরিতে ত্রুটি থাকার কথা চিঠি দিয়ে জানানোর পরও তা মেরামত না করেই গাড়ি পারাপারে নিয়োজিত রাখে বিআইডব্লিউটিসি। সেটি পদ্মা সেতুতে আঘাতও করে। এ ঘাটে সবকটি দুর্ঘটনা স্রোতের অনুকূলে চলাচলের সময়ে ঘটে।
পদে পদে অনিয়ম : তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, বিআইডব্লিউটিসির পদে পদে অনিয়ম রয়েছে। সরকারি এ সংস্থাটির ৫৩টি ফেরির মধ্যে ৪০ বছরের বেশি বয়সি ফেরি রয়েছে ২০টি। নিয়ম অনুযায়ী এসব ফেরি আর ফিটনেস সনদ পাবে না। এছাড়া ৩৩টি ফেরির বয়স ৪০ বছরের কম। এসব ফেরির মধ্যে মাত্র তিনটি হালনাগাদ সার্ভে রয়েছে। বাকিগুলোর নেই। নিয়ম অনুযায়ী, হালনাগাদ সার্ভে সনদ ছাড়া নৌযান চলাচল আইনত অপরাধ। কিন্তু এসব ফেরি সার্ভে করিয়ে ফিটনেস সনদ হালনাগাদ করেননি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
মেরামত সংক্রান্ত অনিয়মের বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ ব্যাপারে কোনো গাইডলাইন নেই। ফলে ফেরির ইঞ্জিন ও মেশিনারিজ মেরামতের ক্ষেত্রে রুটিন বা পিরিয়ডিক্যাল মেরামত সঠিকভাবে হয় না। নিয়মিত লুব অয়েল বরাদ্দ নেওয়া হয়। কিন্তু তা সঠিকভাবে ইঞ্জিনে দেওয়া হয় না। এতে ইঞ্জিনের আয়ুষ্কাল কমে যায়। প্রতি পাঁচ বছরে দুইবার পুরো ডকিং করার নিয়ম থাকলেও তা করা হয় না। এতে ছোট ছোট সমস্যা থেকে একপর্যায়ে বড় সমস্যা দেখা দেয়। তখন পুনর্বাসনের নামে বিপুল টাকা ব্যয় করা হয়েছে, যা যথাযথ নয়। এতে আশানুরূপ ফল পাওয়া যায়নি। আমানত শাহ ফেরির মেরামত প্রসঙ্গে উল্লেখ করা হয়েছে, অভিজ্ঞ ও সনদধারী ওয়েল্ডার দিয়ে মেরামত করা হয়নি। ফেরির বডির লোহার প্লেটে ওয়েল্ডিং করার সময়ে ডাবলার অর্থাৎ প্লেটের ওপর প্লেট লাগানো হয়, যা ঘর্ষণে খুলে যেতে পারে। এছাড়া প্লেটের গুরুত্ব যাচাই করে যথাযথ গ্যাজিং করা হয়নি।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ফেরি নিয়মিত পরিদর্শনের কথা থাকলেও তা করা হয় না। ফেরিতে লগ বুক থাকা সত্ত্বেও তা নিয়মিত ও যথাযথভাবে পূরণ করা হয় না। বেশির ভাগ ফেরির ইঞ্জিনে লগ বইয়ের প্রচলন নেই। ফলে ফেরি পরিচালনায় অস্বচ্ছতা থেকে যায় এবং দুর্ঘটনা-পরবর্তী তদন্তে সঠিক তথ্য পাওয়া যায় না।
প্রশাসনিক অনিয়ম ও গাফিলতি তুলে ধরে প্রতিবেদনে বলা হয়, ফেরির চালক ও ঘাটে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ইউনিফর্ম পরেন না। এতে যাত্রীরা তাদের কাছ সহযোগিতা চাইতে পারেন না। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা দায়িত্ব ও কর্তব্য অনুযায়ী নিয়মিতভাবে ঘাট, ডক ও ফেরি পরিদর্শন করেন না। ফেরি পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের সঙ্গে সরাসরি জড়িত এ সংস্থার তিনটি বিভাগ-মেরিন, প্রকৌশল ও বাণিজ্যিক বিভাগের মধ্যে কাজের সমন্বয় নেই। ফেরিঘাটের সঙ্গে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সমন্বয়ে ঘাটতি রয়েছে। এছাড়া সব বিভাগের নবম গ্রেডের ঊর্ধ্বের কর্মকর্তাদের চার্টার অব ডিউটি রয়েছে। অন্যান্য গ্রেডের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জব ডেসক্রিপশন বা জব স্পেসিফিকেশন নেই। এমনকি নো রোস্টার ডিউটি বা কাজের আদেশ নেই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তদন্ত কমিটির একজন কর্মকর্তা যুগান্তরকে বলেন, বিআইডব্লিউটিসিতে প্রশাসনিক কোনো শৃঙ্খলা নেই। মন্ত্রণালয়ের তদারকিতেও ঘাটতি রয়েছে। ২০২০ সালের ৭ ডিসেম্বর সংস্থাটির চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন সৈয়দ তাজুল ইসলাম। একই সঙ্গে তিনি পরিচালক (প্রশাসন) পদে এবং ৩৫ জলযান ক্রয়সংক্রান্ত প্রকল্পেরও পরিচালক। তিনি উদাহরণ টেনে বলেন, পরিচালক প্রশাসন হিসাবে একই ব্যক্তি ফাইল তোলেন এবং চেয়ারম্যান হিসাবে তিনিই তা নিষ্পত্তি করেন। প্রকল্প পরিচালক হিসাবে তিনি টেন্ডারের ক্রয়প্রস্তাব করেন আবার সংস্থাপ্রধান হিসাবে তা অনুমোদনও দেন। এভাবে চলতে থাকায় সংস্থার ভেতরে অনিয়মই নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়ে প্রতিমাসে বিআইডব্লিউটিসির আর্থিক ও প্রশাসনিক বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও চলতি বছরে একবারও হয়নি।
ঝুঁকিতে অন্য ফেরিগুলো : তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফেরিতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ও যোগাযোগ সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি-ওয়াকিটকি, জিপিএস, ভিএইচএফ, রাডার ইকো-সাউন্ডার নেই। ৪০ বছরের কম বয়সি আয়ুষ্কাল থাকা ৩৩টি ফেরির মধ্যে ২৯টিতে রাডার নেই। এবং চারটি ফেরিতে রাডার থাকলেও তা নষ্ট। ২১টি ফেরিতে জিপিএস আছে। ৮টি ফেরিতে জিপিএস নেই এবং চারটির জিপিএস নষ্ট। ইকো-সাউন্ডার ১৪টি ফেরিতে আছে, ১২টি ফেরিতে নেই এবং ৭টিতে নষ্ট।
দুর্ঘটনার আশঙ্কা ব্যক্ত করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১০টি ফেরি পরিদর্শন করে কমিটির সদস্যরা দেখতে পেয়েছেন কিছু কিছু ফেরির বিভিন্ন পাম্পে লিকেজ আছে এবং ইঞ্জিন রুমের তলায় পানি জমে আছে। আবার কোনোটির মেইন ইঞ্জিনের এগজস্ট পাইপ উন্মুক্ত। সেখানে এসবেস্টস ক্লথ বা অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল বা অন্য কোনো তাপনিরোধক থাকার কথা থাকলেও তা নেই। এভাবে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় ওইসব ফেরি চলছে। উন্মুক্ত এগজস্ট পাইপে তেলের ছিটেফোঁটায় আগুন লাগার আশঙ্কা আছে। এছাড়া ফেরির জন্য লুব অয়েল বরাদ্দ থাকলেও তা নিয়মিতভাবে পরিবর্তন করা হয়নি। এভাবে ইঞ্জিনের আয়ুষ্কাল কমে যেতে পারে। ইঞ্জিনের ওভারহেলিংয়ের বিষয়ে সচেতনতার অভাব রয়েছে।
যাত্রী নিরাপত্তার বিষয়ে বলা হয়েছে, নৌযানে ফার্স্ট এইড কিট সংরক্ষণ করা হয় না। প্রাথমিক চিকিৎসা সংক্রান্ত কোনো প্রশিক্ষণ নেই কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। ফেরি দুর্ঘটনায় পড়লে তা দ্রুত কর্তৃপক্ষকে জানানোর মাধ্যম নেই। জরুরি অবস্থায় শুধু মোবাইল ফোনের ওপর নির্ভরশীল হতে হয়। শুধু একটি যোগাযোগমাধ্যমের ওপর নির্ভরশীল থাকা বিপজ্জনক। এছাড়া ফেরি চলাচলের সময়ে কর্মচারীরা ফেরির বাসস্থানের ভেতরে অবস্থান করেন। ফেলে দুর্ঘটনার খবর পেতে ও ব্যবস্থা নিতে সময়ক্ষেপণ হয়।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে বিআইডব্লিউটিসির বিদায়ি চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. তাজুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, এখানে দীর্ঘদিনের কিছু সমস্যা আছে সত্য। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে দুর্ঘটনায় কমিটির প্রতিবেদনেও কিছু সুপারিশ এসেছে। সেগুলো বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। রক্ষণাবেক্ষণে অনিয়ম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রতিবেদনে এ বিষয়ে যা এসেছে, তার অনেক কিছুই সত্য। আগামী দিনে রক্ষণাবেক্ষণ মনিটরিংয়ে মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি রাখা হবে।
সূত্র : https://www.jugantor.com/todays-paper/first-page/489489/