সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪
পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে বাবার ঘর ও ধর্ম ত্যাগ করে প্রেমিককে বিয়ে করেছেন এক কলেজছাত্রী। তবে এ ঘটনায় কলেজছাত্রীর বাবা তার প্রেমিকের বিরুদ্ধে অপহরণ মামলা দিয়েছেন। মামলার পর প্রেমিকের চাচাকে ধরে নিয়ে গেছে পুলিশ। তবে ওই কলেজছাত্রীর দাবি তিনি ১৮ বছর হওয়ার পর নিজ জ্ঞানে ও সচেনতনভাবেই ধর্ম ত্যাগ করে বিয়ে করেছেন।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাতে কলেজছাত্রীর প্রেমিককে প্রধান আসামি করে ছয় জনের নামে মির্জাগঞ্জ থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলায় রাতেই প্রদান আসামির চাচাকে উপজেলার পূর্ব সুবিদখালী নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে ।
কলেজছাত্রী জানান, বৃহস্পতিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বরিশালের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে এফিডেভিটের মাধ্যমে হিন্দু ধর্ম থেকে ধর্মান্তরিত হয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। পরে বরিশালের এক মসজিদের ইমামের মাধ্যমে কালেমা পাঠ করে মুসলিম হন, নামও পরিবর্তন করেন। এরপর বরিশাল জেলা চৌমাথা বাজার নিকাহ্ রেজিস্ট্রার কার্যলয়ে ইসলামি শরিয়াহ অনুযায়ী প্রেমিককে বিয়ে করেন তিনি।
সংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, আমাকে কেউ বাধ্য করেনি, আমি নিজ ইচ্ছায় ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে বিয়ে করেছি। মুসলমানদের ধর্মীয় রীতিনীতি এবং আচার অনুষ্ঠান ছোটবেলা থেকেই আমার ভালো লাগতো। তাদের ছেলে-মেয়েদের সঙ্গে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নিতাম। তিন বছর আগে স্কুলজীবনের সহপাঠীর সঙ্গে ভালোবাসার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তখন বয়স ১৮ না হওয়ায় আমি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ বা তাকে বিয়ে করতে পারিনি। দীর্ঘ তিন বছরের বেশি সময় সম্পর্কের বিষয়টি গোপন রেখেছি। এখন আমার বয়স ১৮ হয়েছে, তাই মুসলমান হয়ে বিয়ে করেছি।
ওই কলেজছাত্রী সুবিদখালী সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী। তার বাবা ঢাকায় চাকরি করেন। তার একজন ভাই রয়েছে। মির্জাগঞ্জ উপজেলার সুবিদখালীতে একটি ভাড়া বাসায় থেকে তিনি লেখাপড়া করতেন। তার প্রেমিকও একই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী। তার বাড়ি দেউলী-সুবিদখালী ইউনিয়নের পূর্ব সুবিদখালী গ্রামে।
তবে কলেজছাত্রীর বাবার অভিযোগ, ‘আমার মেয়েকে অপহরণ করা হয়েছে। অভিযুক্ত যুবককে প্রধান আসামি করে তার বড়ভাই ও বাবাসহ ছয় জনের নামে বৃহস্পতিবার রাতে মির্জাগঞ্জ থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেছি। মামলা নম্বর- ১০৫/২১ । তবে আমার মেয়ে ধর্মান্তরিত হয়েছে কিনা নিশ্চিত জানা নাই।’
অভিযুক্ত যুবকের বড়ভাইয়ের সঙ্গে কথা হয় মোবাইলফোনে। তিনি বলেন, ‘আদালতে এফিডেভিটের মাধ্যমে ওই করেজছাত্রী ধর্ম পরিবর্তন করেন। পরে মুসলিম রীতি অনুযায়ী আমার ভাইয়ের সঙ্গে বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। এর বেশি কিছু জানি না।’
মির্জাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মহিববুল্লাহ বলেন, কলেজছাত্রী অপহরণের ঘটনায় ছয় জনকে আসামি করে ছাত্রীর বাবা মামলা করেছেন। প্রাথমিক তদন্তে ওই কিশোরী সনাতন ধর্ম থেকে মুসলিম হওয়ার বিষয়টি জানা গেছে। এজাহারভুক্ত পাঁচ নম্বর আসামি এবং অভিযুক্ত যুবকের চাচাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ভিকটিমকে উদ্ধারসহ বাকি আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে বলে জানান তিনি।