শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪
হিলিতে আমদানি ঊর্ধ্বমুখী রপ্তানি তলানিতে ।
দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরে ভারতীয় বিভিন্ন পণ্য আমদানি বেড়েছে। তবে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা আর বন্দরের অব্যবস্থাপনার কারণে বাংলাদেশের বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি তলানিতে ঠেকেছে। বাণিজ্যভিত্তিক এ বন্দর দিয়ে একমাত্র রপ্তানি খাতেই বছরে কোটি কোটি ডলার আয় করা সম্ভব বলছেন সংশ্লিষ্টরা।কিন্তু বিভিন্ন জটিলতা ও সুযোগ-সুবিধার অভাবে ডলার আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।
হিলি কাস্টমসের তথ্যমতে, গত পাঁচ বছরে ভারত থেকে ৮৫ লাখ ৫৬ হাজার মেট্রিক টন বিভিন্ন পণ্য আমদানি হয়েছে এ বন্দর দিয়ে। যার আর্থিক মূল্য ১১ হাজার ৩৮৯ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। যা থেকে রাজস্ব আয় হয়েছে ১১৯৬ কোটি টাকা। একই সময়ে এ বন্দর দিয়ে বাংলাদেশি বিভিন্ন পণ্য ভারতে রপ্তানি হয়েছে মাত্র ৭৩ হাজার ২৬ মেট্রিক টন। যার মূল্য ৪৮৩ কোটি টাকা।
বন্দর সূত্রে জানা গেছে, ভারত থেকে হিলি স্থলবন্দরে বিভিন্ন পণ্য আমদানির জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো বাংলাদেশে থাকলেও ভারতের অভ্যন্তরে রপ্তানি পণ্য পরীক্ষা-নিরীক্ষার কোনো ব্যবস্থা নেই।
বাংলাদেশ থেকে রপ্তানিযোগ্য পণ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে-কলা, পেঁয়াজের ফুলকা, আলুসহ সব ধরনের সবজি, পোশাক কারখানার ঝুঁট কাপড়, পাটের তৈরি বস্তা ইত্যাদি। এসব পণ্যের ভারতীয় বাজারে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তবে বন্দর সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কিছু সমস্যার কারণে ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশ থেকে ভারতে চাহিদা অনুযায়ী পণ্য রপ্তানি করতে পারছেন না। সমস্যাগুলোর সমাধান করা গেলে মাসে কোটি কোটি ডলারের পণ্য বাংলাদেশ থেকে ভারতে রপ্তানি করা সম্ভব বলছেন তারা।
হিলি স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানি গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশিদ হারুন জাগো নিউজকে বলেন, ভারতের বাজারে বাংলাদেশি অনেক পণ্যের চাহিদা রয়েছে। তবে ভারতের ওপারে কাস্টমসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা না থাকায় পণ্য রপ্তানির পরে ছাড় করতে অনেক বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। এ কারণেই মূলত বাংলাদেশি বিভিন্ন পণ্য রপ্তানিতে ব্যবসায়ীরা নিরুৎসাহিত হচ্ছেন।
বন্দরের রপ্তানিকারক ফেরদৌস রহমান বলেন, সমস্যা সমাধানে ভারতীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আমরা বারবার বৈঠক করেছি। এখনো আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। তবে তারা আমাদের শুধু আশ্বাসই দিয়ে যাচ্ছেন।
তিনি আরও বলেন, হিলিতে একটি জুট মিল রয়েছে। মিলটিতে যে বস্তা তৈরি হয় সেগুলো হিলি হয়ে ভারতে পাঠানো সম্ভব হচ্ছে না। বেশি খরচে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারতে পাঠাচ্ছে মিল কর্তৃপক্ষ। দুই দেশের বাণিজ্যিক আলোচনা চালিয়ে যদি সমস্যাগুলো সমাধান করা যায় তাহলে রপ্তানি অনেকাংশে বৃদ্ধি পাবে।
হিলি কাস্টমসের উপ-কমিশনার কামরুল ইসলাম বলেন, সম্প্রতি হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে আমদানি অনেকটা বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে সে তুলনায় রপ্তানি অনেকাংশে কম। রপ্তানি বৃদ্ধি করতে আমরা উচ্চ পর্যায়ে কথা বলেছি। আশা করছি খুব দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে।