শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪
গানিস্তানের পাঞ্জশির উপত্যকায় সশস্ত্র গোষ্ঠী তালেবান যোদ্ধাদের সঙ্গে সংঘর্ষে ন্যাশনাল রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট(এনআরএফ) মুখপাত্র ফাহিম দাশতি এবং আহমাদ শাহ মাসুদের ভাগ্নে জেনারেল আব্দুল ওয়াদুদ জারা নিহত হয়েছেন।
আফগানিস্তানের পাঞ্জশির উপত্যকায় সশস্ত্র গোষ্ঠী তালেবান যোদ্ধাদের সঙ্গে সংঘর্ষে ন্যাশনাল রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট(এনআরএফ) মুখপাত্র ফাহিম দাশতি এবং আহমাদ শাহ মাসুদের ভাগ্নে জেনারেল আব্দুল ওয়াদুদ জারা নিহত হয়েছেন। ইরানের সংবাদ মাধ্যম পার্সটুডে জানায়, রোববার( ৫ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় রাতে আহমাদ মাসুদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় প্রতিরোধ ফ্রন্ট তাদের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে।
ফাহিম দাশতি আফগানিস্তানে একজন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তিনি ছিলেন একাধারে সাংবাদিক, রাজনৈতিক বিশ্লেষক, আহমাদ শাহ মাসুদের এক সময়কার প্রেস সচিব এবং আফগানিস্তান সাংবাদিক ইউনিয়ের সাবেক সভাপতি।
ফাহিম দাশতি ও জেনারেল ওয়াদুদ কীভাবে নিহত হয়েছেন তা স্পষ্ট নয় তবে তারা একটি হামলায় একসঙ্গে নিহত হয়েছেন। আহমাদ মাসুদ এক টুইটার বার্তায় লিখেছেন, “আহমাদ শাহ মাসুদের ওপর হামলায় ফাহিম দাশতির চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল এবং এবার পাঞ্জশিরে আরেক হামলায় তিনি প্রাণ হারালেন।”
এর আগে আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় পাঞ্জশির উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী জাতীয় প্রতিরোধ ফ্রন্টের কমান্ডার আহমাদ মাসুদ যুদ্ধবিরতির ব্যাপারে আলোচনার যে প্রস্তাব দিয়েছিলেন তালেবান তা নাকচ করে দিয়েছে।
তালেবানের রাজনৈতিক দপ্তরের মুখপাত্র মোহাম্মাদ নাঈম ওই প্রস্তাব নাকচ করে দিয়ে বলেছেন, এখন আর আলোচনায় বসার কোনো সুযোগ নেই। রোববার (৫ সেপ্টেম্বর) রাতে নাঈম বলেন, আহমাদ মাসুদ আমাদের শান্তির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করার পর এখন আর আলোচনায় বসার কোনো সুযোগ নেই।
এর কয়েক ঘণ্টা আগে আহমাদ মাসুদ ফেসবুকে পোস্টে বলেছিলেন, পাঞ্জশির, কাপিসা, পারওয়ান ও আন্দারাবে তালেবান হামলা বন্ধ করলে প্রতিরোধ ফ্রন্টও যুদ্ধ বন্ধ করতে রাজি আছে। তিনি এ ব্যাপারে তালেবানের সঙ্গে আলোচনায় বসতে নিজের প্রস্তুতির কথা ঘোষণা করেন।
এর আগে গত কয়েকদিন ধরে তালেবান ঘোষণা করে আসছিল যে, পাঞ্জশিরের কমান্ডারদের সঙ্গে আলোচনা ব্যর্থ হয়েছে। ফলে সামরিক শক্তি প্রয়োগ করে ওই উপত্যকা দখল করা হবে।
গত পাঁচদিন ধরে তালেবানের পক্ষ থেকে পাঞ্জশির উপত্যকা দখলের অভিযান চলছে। গতকাল রোববার বিকেলে তালেবান দাবি করেছে, তারা ওই উপত্যকার প্রায় পুরো অংশ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নিয়েছে।
আহমদ শাহ মাসুদকে ‘পাঞ্জশিরের সিংহ‘ বলা হতো। ১৯৮০ এর দশকে তিনি সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে লড়াই করেন। এরপর ১৯৯০ এর দশকে তিনি লড়াই করেন তালেবানের বিপক্ষে। ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর নাইন ইলেভেন ঘটনার দুইদিন আগে তিনি আল-কায়েদার হামলায় নিহত হন। তখন তার ছেলে আহমাদ মাসুদ ছিলেন ১২ বছর বয়সী কিশোর। আহমাদ মাসুদ ঘোষণা করেন, তিনি বেঁচে থাকতে ওই উপত্যকায় তালেবানের আধিপত্য মেনে নেবেন না।