সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪
যুক্তরাষ্ট্রের লুইজিয়ানা অঙ্গরাজ্যের উপকূলে আছড়ে পড়েছে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় আইডা। ঝড়ের কারণে লুইজিয়ানা ও এর আশপাশের অঞ্চলগুলোতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। অঙ্গরাজ্যটিতে এখন পর্যন্ত একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। খবর আল–জাজিরার।
নিহত ওই ব্যক্তি লুইজিয়ানার নিউ অরলিন্স শহরের বাসিন্দা। শেরিফ কার্যালয় বলছে, নিহত ব্যক্তির ওপর একটি গাছ ভেঙে পড়লে তিনি আহত হন। পরে তাঁর মৃত্যু হয়। তবে প্রাথমিকভাবে ওই ব্যক্তির পরিচয় জানা যায়নি।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়, স্থানীয় সময় গতকাল রোববার আঘাত হানার সময় আইডার গতি ছিল ঘণ্টায় ১৫০ মাইল। আইডাকে ‘চার ক্যাটাগরির’ ঘূর্ণিঝড় হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। তবে এখন ঘূর্ণিঝড়টি দুর্বল হয়ে ‘দুই ক্যাটাগরিতে’ পরিণত হয়েছে বলে রোববার জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার (এনএইচএস)। ঝড়ের গতি কমে ১১০ মাইলে দাঁড়িয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সম্পর্কে এখনো বিস্তারিত জানা যায়নি। যুক্তরাষ্ট্রে ২০০৫ সালে হারিকেন ক্যাটরিনার আঘাতে ১ হাজার ৮০০ মানুষ মারা যায়। আশঙ্কা করা হচ্ছে, আইডায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ওই রকমই হবে।
ঘূর্ণিঝড়ের জেরে লুইজিয়ানার ৭ লাখ ৫০ হাজারের বেশি ঘরবাড়ি বিদ্যুৎ-বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম বিবিসি। বিদ্যুৎ নেই অঙ্গরাজ্যটির নিউ অরলিন্স শহরের কোথাও। আপৎকালীন অবস্থায় জেনারেটরের মাধ্যমে সেখানে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, এ অবস্থা স্বাভাবিক হতে কয়েক সপ্তাহ সময় লেগে যাবে।
ঘূর্ণিঝড়ের জেরে সমস্যার মুখে পড়েছে নিউ অরলিন্সের টেলিযোগাযোগব্যবস্থা। সেখানে জরুরি সহায়তা নম্বরে কল করতে পারছেন না অনেক বাসিন্দা। এমন অবস্থায় সহায়তার জন্য লোকজনকে নিকটবর্তী ফায়ার স্টেশন অথবা পুলিশ কর্মকর্তার কাছে যাওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে বলে এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে সংবাদমাধ্যম সিএনএন।
এবারের ঘূর্ণিঝড়ে বেশি সংকটের মধ্যে রয়েছে লুইজিয়ানার হাসপাতালগুলো। এর আগে এ ধরনের বিপর্যয়ের সময় হাসপাতালগুলো থেকে রোগীদের সরিয়ে নেওয়া হতো। তবে এবার করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে পরিস্থিতি ভিন্ন। রোগীর চাপে হাসপাতাল এখনো প্রায় ভর্তি। তাদের সরিয়ে নেওয়ার মতো কোনো জায়গা নেই বলে জানিয়েছেন লুইজিয়ানার গভর্নর জন বেল এডওয়ার্ডস।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার আগেই ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে কয়েক হাজার মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। যারা এখনো সেখানে রয়ে গেছে, তাদের ঘূর্ণিঝড় শেষ হওয়া পর্যন্ত নিরাপদ জায়গায় আশ্রয় নিতে বলেছে কর্তৃপক্ষ।