শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪
র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার কথিত মডেল মরিয়ম আক্তার মৌ একে একে ১১টি বিয়ে করেছেন বলে তথ্য পেয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ। আর সেসব স্বামীদের কাছ থেকে হাতিয়েছেন অঢেল সম্পদ।
মাদক মামলায় গ্রেপ্তারের পর মডেল মৌয়ের সঙ্গে ভিআইপিদের সংশ্লিষ্টতা খতিয়ে দেখছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। একই সঙ্গে অঢেল সম্পদের উৎস খুঁজে দেখছেন তারা। এরইমধ্যে তার বাসার সিসিটিভি ফুটেজও সংগ্রহ করেছে পুলিশ।
ডিবির তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, মৌ ১১টি বিয়ে করেছেন। তার সর্বশেষ স্বামী একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালক। ধনাঢ্যদের ফাঁদে ফেলে তিনি বিয়ে করতেন। বিপুল পরিমাণ সম্পদ হাতিয়ে নেওয়ার পর আরেকজনের সঙ্গে বিয়ের পিঁড়িতে বসতেন।
গত রোববার রাতে আরেক মডেল পিয়াসার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গ্রেপ্তার করা হয় মৌকে। দৃশ্যমান কোনো আয়ের উৎস না থাকলেও মোহাম্মদপুরে পাঁচতলা আলিশান বাড়ি রয়েছে তার। নেক্সাস, পাজেরো ও টয়োটা ব্র্যান্ডের তিনটি দামি গাড়িও আছে তার।
মৌ মডেলিং পেশার আড়ালে ব্ল্যাকমেইলিং করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিতেন বলে অভিযোগ পেয়েছেন তদন্ত সংশ্লিষ্টরা। মাদক ও অনৈতিক ব্যবসায় তার সংশ্লিষ্টতার কিছু প্রমাণ ইতোমধ্যে গোয়েন্দাদের হাতে এসেছে।
মৌয়ের নিয়ন্ত্রণে অর্ধশত সুন্দরী তরুণী রয়েছেন। তাদের দিয়েই ধনী ব্যক্তিদের ফাঁদে ফেলে ভিডিও ধারণ করতেন। টাকা না দিয়ে ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিতেন। এভাবে অনেকের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে জানায় গোয়েন্দা পুলিশ।
এদিকে মাদক মামলায় গ্রেপ্তার মডেল পিয়াসা ও মৌয়ের সঙ্গে ভিআইপিদের সংশ্লিষ্টতা খতিয়ে দেখছে গোয়েন্দা পুলিশ। এ দুই মডেলকে ব্যবহার করে সংঘবদ্ধ অপরাধের বিষয়টিও তদন্ত করছেন তারা। বিশ্লেষণ করা হচ্ছে পিয়াসা ও মৌয়ের বাসা থেকে উদ্ধার হওয়া সিসিটিভি ফুটেজ ও আলামত।
বারিধারার ৯ নম্বর সড়কের ৩ নম্বর বাড়ি। ৫ম তলার অভিজাত ভবনটির ২য় তলার ফ্ল্যাটের ভাড়া প্রতি মাসে ২ লাখ ১৫ হাজার টাকা। এম আর গ্রুপের পরিচালক পরিচয়ে ২ বছরের চুক্তিতে ফ্ল্যাটটি ভাড়া নিয়েছিলেন মডেল ফারিহা মাহবুব পিয়াসা। অগ্রিম পরিশোধ করেছিলেন আরও কয়েক লাখ টাকা।
রোববার (১ আগস্ট) রাতে ফ্ল্যাটটিতে অভিযান চালিয়ে গোয়েন্দা পুলিশ ইয়াবা, বিদেশি মদ, সিসা তৈরির কাঁচামাল জব্দ করে। পার্টির নামে উচ্চবিত্ত শ্রেণীর ব্যক্তিদের বাসায় ডেকে এনে তাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ছবি ও ভিডিও ধারণ করে ব্ল্যাকমেইল করে টাকা আদায় ছিল পিয়াসার কাজ।
ঢাকা মহানগর (উত্তর) গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মো. হারুন অর রশিদ বলেন, এদেরকে কারা এ পেশায় এনেছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তারা মার্সিডিজ, বিএমডব্লিউ গাড়ি ব্যবহার করছে, ৫ হাজার স্কয়ার ফিটের বাসায় একা থাকছে। সেখানে মদের বার, সিসার বার তৈরি করছে। তাদের আয়ের উৎসটা কোথায়? তা আমরা খতিয়ে দেখছি।
ইতোমধ্যে পিয়াসার ফ্ল্যাটের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। গ্রেপ্তারের পর অনেক ভুক্তভোগীই পুলিশের দ্বারস্থ হচ্ছেন বলে জানিয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ।