সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪
রাজধানীতে চলার পথে হঠাৎ সামনে হাজির হয়ে অপরিচিত কেউ একজন সালাম দিয়ে শুরু করেন কুশল বিনিময়। টার্গেট ব্যক্তির সঙ্গে কুশল বিনিময় করতে করতেই চারপাশ থেকে ঘিরে ধরেন আরও কয়েকজন। পরে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ছিনিয়ে নেওয়া হয় টাকা-পয়সা। ছিনতাইকারী এই চক্রটি ‘সালাম পার্টি’ নামে পরিচিত। চক্রের সাতজনকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশ বলছে, পুরো রাজধানীতেই রয়েছে তাদের নেটওয়ার্ক।
সম্প্রতি সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়ে রাজধানীতে সংঘটিত এমন এক ছিনতাইয়ের ঘটনা। তাতে দেখা যায়, রিকশা থেকে নেমে একজন পেছনে থাকা রিকশাটিকে গতিরোধ করছেন। তার সঙ্গে যোগ দেন আরেকজন। পাশে বিদ্যুতের খুঁটির আড়ালে থাকা রিকশার আরোহীর সঙ্গে কথোপকথন। ৩০ সেকেণ্ড পর রিকশাটিকে চলে যেতে দেখা যায়। দুই আরোহীসহ রঙ সাইড দিয়ে চলে যায় অন্য রিকশাটিও।
গেল ১৯ জুলাই ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলামকে রাজধানীর শান্তিনগর মোড়ে রিকশা থামিয়ে প্রথমে সালাম দিয়ে তার সঙ্গে ভাব জমাতে চায় কয়েকজন। পরে তার গলায় ছুরি ধরে ছিনিয়ে নেয় সঙ্গে থাকা টাকা।
সাইফুল ইসলাম বলেন, হঠাৎ করে পাশ থেকে একজন লোক আমাকে সালাম দিল। সালাম দিয়ে বলে- ভাই কেমন আছেন। এরপর হ্যান্ডশেক করতে চায়। আমি বললাম- কেন আপনার সঙ্গে হ্যান্ডশেক করব, আমি তো আপনাকে চিনি না। সে আমাকে বলে- ‘জোরে কথা বলবি না, আমি এখানকার স্থানীয়, তোর কাছে যা যা আছে সব দিয়ে দে’।
সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে পুলিশ এই ঘটনার পেছনে রয়েছে সালাম পার্টির সম্পৃক্ততা পায়। গ্রেপ্তার করা হয় চক্রের ৬ সদস্যকে।
রাজধানীর দৈনিক বাংলা মোড়, শান্তিনগর, পল্টন ও মতিঝিল চক্রটির একাধিক টিমের সন্ধান পেয়েছে পুলিশ। কোনো এলাকায় ছিনতাই করতে তারা টার্গেট ব্যক্তিকে সালাম দিয়ে পথরোধ করে। কুশল বিনিময় করতে গিয়ে দেখানো হয় অস্ত্রের ভয়।
পুলিশ বলছে, রাজধানীজুড়েই রয়েছে তাদের নেটওয়ার্ক। সালাম পার্টির সদস্যদের বিরুদ্ধে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলারও তথ্য পেয়েছে পুলিশ।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মতিঝিল জোনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার আবুল হাসান বলেন, গ্রেপ্তাররা প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছে যে, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় তারা এমন বহু ঘটনা ঘটিয়েছে। এরা সাধারণত এলাকা ভাগ করে, নিজেদের মধ্যে সমন্বয় করে এই কাজগুলো করে থাকে।
চক্রের বাকি সদস্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে ডিএমপির এই কর্মকর্তা।