শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪
টোকিও অলিম্পিকের আর্টিস্টিক জিমন্যাস্টিক্সে প্রথমবারের মতো ইসরায়েলকে পদক এনে দিয়েছেন আর্টেম ডলগোপিয়াট। তিনি যখন পোডিয়ামে ওঠেন তখন অলিম্পিকের রীতি অনুযায়ী ইসরায়েলের জাতীয় সংগীত বাজানো হয়। ঠিক তখনই নড়েচড়ে বসেন ভারতীয় দর্শকেরা। তারা ফিরে যান ১৯৯৬ সালে, বলিউড সিনেমার একটি গানের সুরে, ইন্টারনেটে শুরু হয় তুমুল আলোচনা সমালোচনা।
ইসরায়েলের জাতীয় সংগীতের সুর চুরির অভিযোগ!
ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের দাবি, ইসরায়েলের জাতীয় সংগীতের সুরের সঙ্গে ১৯৯৬ সালে মুক্তি পাওয়া বলিউড সিনেমা ‘দিলজ্বলে’র একটি গান ‘মেরা মুলক মেরা দেশ’ এর সুর মিলে গেছে! সিনেমাটির এই গানটির সুর করেছিলেন বলিউডের বিখ্যাত সুরকার অনু মালিক। বিষয়টি মুহূর্তে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারকীরা সবাই অনু মালিকের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের জাতীয় সংগীতের সুর চুরির অভিযোগ করেন।
জানা যায়, দিলজ্বলে সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন অজয় দেবগণ, সোনালি বেন্দ্রে ও অমরেশ পুরি। সিনেমাটিতে মোট ৮টি গান ছিল। তারমধ্যে ‘মেরা দেশ মেরা মুল্ক’ গানটি ২টি ভার্সনে উপস্থাপন হয়। গানটি যে ইসরায়েলের জাতীয় সংগীতের সুরের নকল গত ২০ বছরে সেটি কেউ খেয়াল করেননি। টোকিও অলিম্পিকের আসরেই বিষয়টি সামনে আসে। এরপরই অনু মালিককে নিয়ে শুরু হয় ট্রল।
একজন টুইটার ব্যবহারকারী ট্রল করে লিখেছেন, অনু মালিক আপনি কিনা শেষ পর্যন্ত ইসরায়েলের জাতীয় সঙ্গীতকেও ছাড়লেন না!
প্রসঙ্গত, গত শতকের নব্বইয়ের দশকে অসংখ্য সুপারহিট গানের সুর করেছেন অনু মালিক।
এর আগেও গানের সুর চুরির অভিযোগে সমালোচিত হয়েছিলেন ৬১ বছর বয়সী এই সংগীত পরিচালক। ‘মার্ডার’ সিনেমার ‘কাহো না কাহো’, ‘আকেলে হাম আকেলে তুম’ চলচ্চিত্রের ‘দিল মেরা চুরায়া কিঁউ’, ‘ইশক’ চলচ্চিত্রের ‘নিঁদ চুরায়ি মেরি’, ‘মান’ চলচ্চিত্রের ‘নাশা ইয়ে পেয়ার কা নাশা হ্যায়’ ইত্যাদি গানের সুর চুরির অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
প্রসঙ্গত, অনু মালিকের প্রকৃত নাম আনোয়ার সরদার মালিক। তিনি ভারতীয় সংগীত পরিচালক, সুরকার ও সঙ্গীতশিল্পী। মূলত বলিউড সিনেমার জন্য গান ও সুর তৈরি করেন তিনি। ১৯৮০ সালে সুর দেওয়ার মাধ্যমে বলিউডের সঙ্গে যুক্ত হন অনু মালিক। সেটি দারুণ সাফল্য পাওয়ার পর ‘স্যার’, ‘ফির তেরি কাহানি ইয়াদ আয়ে’, ‘বাজীগ‘, ‘ম্যাঁয় খিলাড়ি তু আনাড়ি’, ‘আকেলে হাম আকেলে তুম’, ‘বিরাসত’, ‘ইশ্ক’, ‘বর্ডার’ ‘সোলজার‘, জানম সমঝা করো’, ‘হাম আপকে দিল মেঁ রেহতে হ্যায়’, ‘বাদশা’, ‘হাসিনা মান যায়েগি’, ‘বিবি নাম্বার ওয়ান’, ‘হর দিল জো প্যায়ার করেগা’, ‘ম্যাঁয় হুঁ না’, ‘ফিদা’, ‘অজনবি’, ‘ইয়াদে’, ‘অশোক’সহ অসংখ্য সিনেমার গানে সুর দিয়েছেন তিনি।
তার কালজয়ী বিভিন্ন গানের জন্য অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননাও পেয়েছেন তিনি। ২০১৮ সালে তার বিরুদ্ধে যৌন কেলেঙ্কারির অভিযোগও উঠেছিল।