শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪
বরিশাল বিভাগে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা শনাক্তের সংখ্যার দিক থেকে নতুন রেকর্ড হয়েছে। এ সময়ে বিভাগে ২ হাজার ৯৯২ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৮৯১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ সময়ে করোনা পজিটিভ ও উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন ১২ জন। এর আগের ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের এই সংখ্যা ছিল ৬০০ এবং করোনায় ও উপসর্গ নিয়ে ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, বরিশাল বিভাগে করোনার প্রথম ঢেউ শুরু হয় গত বছরের ৯ এপ্রিল। প্রথম ঢেউয়ের সময় বিভাগে এক দিনে সর্বোচ্চ শনাক্তের সংখ্যা ছিল গত বছরের জুনে, ২৪৩। এবার মে মাসে দ্বিতীয় ঢেউ শুরুর পর ৭ জুলাই এক দিনে সর্বোচ্চ ৬২২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছিল। এরপর ১১ জুলাই তা ৭১০ এবং গত ২৪ ঘণ্টায় তা ৮৭৯ জনে পৌঁছাল। ১৩ জুলাই এই বিভাগে মঙ্গলবার ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজার ৮৫৫ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৮৭৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছিল, যা ছিল বিভাগে এক দিনে সর্বোচ্চ সংক্রমণের রেকর্ড। কিন্তু গত ২৪ ঘণ্টায় তা আরও বেড়ে ৮৯১ হলো।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, মারা যাওয়া ১৩ জনের ৩ জন পজিটিভ রোগী মারা যান বরগুনা, পটুয়াখালী ও ভোলা জেলায় একজন করে। এ ছাড়া ৯ জন মারা যান উপসর্গ নিয়ে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডের আইসোলেশনে। উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া নতুন ৯ নিয়ে এই হাসপাতালে এ পর্যন্ত উপসর্গে মারা যান ৬৬৯ জন।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, নতুন শনাক্ত হওয়া ৮৯১ জনের মধ্যে বরিশাল জেলায় নতুন সর্বোচ্চ ৪০৯ জন নিয়ে মোট ১১ হাজার ৩৯৪ জন, পটুয়াখালী জেলায় নতুন ১২৩ জন নিয়ে মোট ৩ হাজার ৩২৯ জন, ভোলা জেলায় নতুন ৬২ জনসহ মোট ২ হাজার ৬৪৮ জন, পিরোজপুর জেলায় নতুন ১৪০ জনসহ মোট ৩ হাজার ৭০৪ জন, বরগুনা জেলায় নতুন ৬৬ জন নিয়ে মোট আক্রান্ত ২ হাজার ২৯২ জন ও ঝালকাঠি জেলায় নতুন ৯১ জন শনাক্ত নিয়ে মোট সংখ্যা ৩ হাজার ৪১১। এ নিয়ে বরিশাল বিভাগে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২৬ হাজার ৭৭৮।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক শ্যামল কৃষ্ণ মণ্ডল গণমাধ্যমে বলেন, ‘বরিশাল বিভাগে বেশ কয়েক দিন ধরে, বিশেষ করে জুলাইয়ের শুরু থেকে সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি চলছে এবং তা নতুন নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করছে। এখন আমাদের আশঙ্কা ঈদে প্রচুর লোকসমাগম নিয়ে। কারণ, ঈদ উপলক্ষে লঞ্চে-বাসে করে প্রচুর লোক গ্রামে ফিরছেন। গ্রামে ফিরে তাঁরা অবাধে পরিবার ও হাটবাজারে সবার সঙ্গে অবাধে মিশছেন। অনেক ক্ষেত্রেই তাঁরা স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। আর সবচেয়ে আশঙ্কার বিষয় হচ্ছে, করোনার প্রথম ঢেউয়ের সময় সংক্রমণ খুব একটা গ্রামে ছড়ায়নি। কিন্তু এবার তা গ্রামেও ব্যাপকতর হচ্ছে। সাধারণ মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়ে সচেতন না হলে সংক্রমণ আরও বাড়ার আশঙ্কা আছে।’
সূত্রঃ প্রথম আলো।