শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪
পলিথিনের বিকল্প হিসেবে পাট থেকে পরিবেশবান্ধব ব্যাগ আবিষ্কার করেছিলেন বাংলাদেশের একজন বিজ্ঞানী। পরে এই ব্যাগের নাম দেয়া হয় ‘সোনালী ব্যাগ’। সেই ব্যাগ তৈরির জন্য বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশনের (বিজেএমসি) অধীনে একটি পরীক্ষামূলক প্রকল্প নেয়া হয়। সেই প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হতে চললেও আশা জাগানিয়া ও আলোচিত ‘সোনালী ব্যাগ’ এখনো সাধারণ মানুষের নাগালে আসেনি।
আবিষ্কারের পাঁচ বছর পরও পরিবেশ দূষণকারী পলিথিনের রাজ্যে হানা দেয়া তো দূরের কথা, দুয়ারে কড়াও নাড়তে পারেনি ‘সোনালী ব্যাগ’। এতে প্রশ্ন উঠেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আন্তরিকতা নিয়ে। বিজেএমসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পাট থেকে ব্যাগ তৈরির প্রকল্প সফলই বলা যায়। তবে শেষ পর্যায়ে পাটের সেলুলোজ থেকে তৈরি শিট সেলাই করে ব্যাগ তৈরিতে জটিলতায় আটকে আছে সব। এটি একটি নতুন বিষয়। কোথাও মেশিন নেই। তাই বিভিন্ন দেশকে বিষয়টি বুঝিয়ে মেশিন তৈরি করতে হচ্ছে।
সফলভাবে শিট জোড়া দিয়ে ব্যাগ উৎপাদনে মেশিন পাওয়া গেলে বিজেএমসি বড় উৎপাদনে যেতে পারবে। বাণিজ্যিকভাবেও বেসরকারিখাতে ‘সোনালী ব্যাগ’ উৎপাদন শুরু হবে। তখনই সাধারণ মানুষের কাছে পরিবেশবান্ধব এই ব্যাগ সহজলভ্য হবে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
আণবিক শক্তি কমিশনের সাবেক মহাপরিচালক মোবারক আহমেদ খান ২০১৬ সালে পাট থেকে পলিথিনের বিকল্প তৈরি করেন। পরে তাকে বিজেএমসির বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। তার এই আবিষ্কার দেশে-বিদেশে ব্যাপক আলোচিত হয়।
‘সোনালী ব্যাগ’ দেখতে প্রচলিত পলিথিনের মতোই। এটি হালকা-পাতলা ও টেকসই। পাটের সুক্ষ্ণ সেলুলোজকে প্রক্রিয়াজাত করে এ ব্যাগ তৈরি করা হয়। পাটের তৈরি সোনালী ব্যাগ মাটিতে ফেললে তা মাটির সঙ্গে মিশে যাবে। ফলে পরিবেশ দূষিত হবে না। একটি ব্যাগ একাধিকবার ব্যবহার করা যায়।
পলিথিনের বিকল্প পচনশীল ‘সোনালী ব্যাগ’ তৈরির পাইলট প্রকল্পের উদ্বোধন করা হয় ২০১৭ সালের ১২ মে। রাজধানীর ডেমরায় লতিফ বাওয়ানী জুটমিলে ব্যাগ তৈরির প্ল্যান্ট স্থাপন করা হয়। বিভিন্ন পর্যায় পেরিয়ে শেষ পর্যন্ত মেশিনের সাহায্যে পাটের সেলুলোজ থেকে শিট তৈরি করা হয়। এরপর হাতে সেলাই করে শিট জোড়া দিয়ে ব্যাগ উৎপাদন করা হয়। সীমিত পরিসরে উৎপাদিত সেই ব্যাগ বিক্রিও করছে বিজেএমসি। প্রতিটি ব্যাগের দাম ১০ টাকা।