রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪
করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে চলা বিধিনিষেধ পবিত্র ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে আট দিন শিথিল করার সিদ্ধান্তে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন করোনা সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি সভাপতি মোহাম্মদ সহিদুল্লা। তিনি জানিয়েছেন, এই সিদ্ধান্ত তাঁদের পরামর্শের উল্টো। তাঁর আশঙ্কা এর ফলে সংক্রমণ বৃদ্ধির সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যাবে।
আজ সোমবার সরকারের পক্ষ থেকে তথ্য বিবরণীতে জানানো হয়েছে, বিধিনিষেধ ১৫ জুলাই (বৃহস্পতিবার) থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত আট দিন শিথিল রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে ঈদের পর ২৩ জুলাই থেকে আবার কঠোর বিধিনিষেধ জারি করা হবে।
কোন কোন ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ শিথিল থাকবে তা আগামীকাল মঙ্গলবার প্রজ্ঞাপন দিয়ে জানাবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। তবে সরকারি সূত্রগুলো বলছে, শিথিলের সময় স্বাস্থ্যবিধি মেনে গণপরিবহন এবং শপিং মলসহ দোকানপাট খোলা থাকবে। তবে আসনসংখ্যার অর্ধেক যাত্রী নিয়ে চলতে হবে গণপরিবহনকে। ইতিমধ্যে রেল মন্ত্রণালয় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছে, ১৫ থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত অর্ধেক আসন ফাঁকা রেখে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল করবে। এ ক্ষেত্রে টিকিট শুধুমাত্র অনলাইনে বিক্রি হবে।
সরকার এমন দিনে বিধিনিষেধ শিথিলের সিদ্ধান্ত জানাল, যেদিন দেশে একদিনে করোনাভাইরাস সংক্রমণে সর্বোচ্চ সংখ্যক রোগী শনাক্তের কথা জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। অধিদপ্তর জানায়, দেশে ২৪ ঘণ্টায় (গত রোববার সকাল আটটা থেকে আজ সোমবার সকাল আটটা পর্যন্ত) করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে ১৩ হাজার ৭৬৮ জন। এই সময় করোনায় মারা গেছে ২২০ জন।
বিধিনিষেধ শিথিল করার সিদ্ধান্ত করোনা সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সঙ্গে পরামর্শ করে করা হয়েছে কি না জানতে চাইলে কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ সহিদুল্লা আজ প্রথম আলোকে বলেন, না। এটি তাঁদের পরামর্শের উল্টো। তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করছি, এর ফলে সংক্রমণ বৃদ্ধির সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যাবে। আমরা উদ্বিগ্ন। ”
করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ন্ত্রণে সরকার এ বছর ৫ এপ্রিল থেকে ধাপে ধাপে বিধিনিষেধ দিয়ে আসছে। দেশব্যাপী বিধিনিষেধের পাশাপাশি এবার স্থানীয় প্রশাসনও বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ বিধিনিষেধ জারি হয়েছিল। কিন্তু তারপরও করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় ১ জুলাই থেকে সারা দেশে কঠোর বিধিনিষেধ জারি করা হয়। প্রথমে এক সপ্তাহের জন্য বিধিনিষেধ ঘোষণা করা হলেও পরে তা বাড়িয়ে ১৪ জুলাই পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত করোনা নিয়ন্ত্রণে আসেনি। এখন শ্রমজীবী মানুষসহ জীবিকার দিক বিবেচনা করে ঈদকে ঘিরে বিধিনিষেধ শিথিলের সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সূত্রগুলো জানিয়েছে।