বুধবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৪
সপ্তাহের ব্যবধানে রাজধানীর বাজারগুলোতে প্রায় সব ধরনের সবজির দাম বেড়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে মাছের দাম। তবে কিছুটা কমেছে ব্রয়লার মুরগির দাম।
শুক্রবার (৯ জুলাই) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সপ্তাহে বিভিন্ন সবজির দাম কেজিতে বেড়েছে ১০ টাকা থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত। মাছের দাম কেজিতে বেড়েছে ৪০ টাকা পর্যন্ত। আর ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে কমেছে ১০ টাকা।
সপ্তাহের ব্যবধানে সব থেকে বেশি বেড়েছে গাজরের দাম। এক সপ্তাহ আগে কেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হওয়া গাজরের দাম বেড়ে ১৩০ টাকা পর্যন্ত উঠেছে। এটিই এখন বাজারের সব থেকে দামি সবজি।
কেজি একশ টাকার ওপরে বিক্রি হওয়ার তালিকায় রয়েছে পাকা টমেটো। আগের সপ্তাহে ৮০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া পাকা টমেটোর দাম বেড়ে এখন ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
এর সঙ্গে দাম বেড়েছে বেগুন, ঝিঙে, করলা, বরবটি, চিচিঙ্গার। বেগুনের দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ৬০ থেকে ৭০ টাকা বিক্রি হচ্ছে, যা আগের সপ্তাহে ছিল ৫০ থেকে ৬০ টাকা। ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া ঝিঙের দাম বেড়ে ৬০ থেকে ৭০ টাকা হয়েছে।
করলা বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি, যা আগে ছিল ৪০ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে। চিচিঙ্গার কেজি সপ্তাহের ব্যবধানে ২০ টাকা বেড়ে ৬০ টাকা হয়ে গেছে। ৬০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া বরবটির দাম বেড়ে ৮০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
বেশিরভাগ সবজির দাম বাড়ার মধ্যে অপরিবর্তিত রয়েছে ঢেঁড়স, পটল, পেঁপে, কাঁচকলার দাম। আগের মতো ঢেঁড়স ৪০ থেকে ৫০ টাকা এবং পটল ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। কাঁচকলার হালি বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। পেঁপের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা।
সবজির দামের বিষয়ে কারওয়ানবাজারের ব্যবসায়ী আয়নাল বলেন, বৃষ্টিতে সবজি ক্ষেতের অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে। চাহিদার তুলনায় বাজারে সবজির সরবরাহ কম। এ কারণে দাম বেড়ে গেছে। পরিস্থিতি এমন থাকলে সামনে সবজির দাম আরও বাড়তে পারে।
খিলগাঁও তালতলা বাজার থেকে সবজি কেনা আমিনুল ইসলাম বলেন, বাজারে সবকিছুর দাম বাড়তি। ৫০০ টাকা নিয়ে বাজারে আসলে তেমন কিছুই কেনা যায় না। করোনার কারণে এমনিতেই আয় কমে গেছে। এখন সবকিছুর দাম বাড়লে, আমাদের কী অবস্থা বুঝে দেখেন?
এদিকে দুই সপ্তাহ আগে বেড়ে যাওয়া আদা বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে। আমদানি করা আদার কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা। আর দেশি আদার কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকা। এর সঙ্গে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ। দেশি পেঁয়াজের কেজি গত সপ্তাহের মতো ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
মাছ বাজারে গিয়ে দেখা যায়, তেলাপিয়া মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা কেজিতে, যা আগে ছিল ১২০ থেকে ১৩০ টাকা। রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ২৩০ থেকে ২৮০ টাকা কেজি, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ২০০ থেকে ২৫০ টাকার মধ্যে। মৃগেল মাছ বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২২০ টাকা কেজি, যা আগে ছিল ১৬০ থেকে ১৮০ টাকার মধ্যে।
চিংড়ি আগের মতো ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। পাবদা মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। রূপচাঁদা মাছ বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৮৫০ টাকায়। এ দুটি মাছের দাম সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিবর্তিত রয়েছে।
মাছের দামের বিষয়ে রামপুরার ব্যবসায়ী সুবল বলেন, বাজারে মাছের আমদানি কম। এ কারণে দাম একটু বেশি। সামনে মাছের দাম আরও বাড়তে পারে।
মাছ ও সবজি দাম বাড়ার মধ্যে কিছুটা কমেছে ব্রয়লার মুরগির দাম। বেশিরভাগ বাজারে ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৫০ টাকা কেজি।
ব্রয়লার মুরগির দাম কমলেও অপরিবর্তিত রয়েছে পাকিস্তানি কক বা সোনালী মুরগি এবং লাল লেয়ার মুরগি। লেয়ার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৩০ থেকে ২৪০ টাকা। আর সোনালী মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৩০ টাকা।
মুরগির পাশাপাশি দাম অপরিবর্তিত রয়েছে গরু ও খাসির মাংসের। গরুর মাংসের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫৮০ থেকে ৬০০ টাকা। আর খাসির মাংসের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা।
এর সঙ্গে গত সপ্তাহের ব্যবধানে দাম অপরিবর্তিত রয়েছে আলু, ডিম ও পেঁয়াজের। আলুর কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকা। আর ফার্মের মুরগির ডিম ডজন বিক্রি হচ্ছে ১০৫ থেকে ১১০ টাকা। দেশি পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা।
মুরগির দামের বিষয়ে খিলগাঁওয়ের ব্যবসায়ী মো. আব্দুস সালাম বলেন, লকডাউনের কারণে হোটেলগুলোতে বিক্রি কমেছে। এছাড়া বিভিন্ন অনুষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এ কারণে ব্রয়লার মুরগির চাহিদা কম এবং দাম কমেছে।
সুত্র : জাগোনিউজ২৪.কম