বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪
রাজশাহী মহানগরের সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহবুব জামান ভুলু ও সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এস.এম মাসুদুল হক ডুলু এঁর মৃত্যুবার্ষিকী স্মরণে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রাজশাহী মহানগরের উদ্যোগে গতকাল রবিবার সন্ধ্যা ৬.৩০ টায় কুমারপাড়াস্থ দলীয় কার্যালয়ে স্মরণ সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মাননীয় মেয়র জননেতা এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন। সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রাজশাহী মহানগরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল।
স্মৃতিচারণ করে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রাজশাহী জেলার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অনিল কুমার সরকার। আলোচক ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রাজশাহী মহানগরের সাধারণ সম্পাদক মোঃ ডাবলু সরকার। স্মৃতিচারণ করে আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রাজশাহী মহানগরের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর ইকবাল, সদস্য নফিকুল ইসলাম সেল্টু, হাবিবুর রহমান বাবু। সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রাজশাহী মহানগরের যুগ্ম সম্পাদক আহ্সানুল হক পিন্টু।
প্রধান অতিথি হিসেবে স্মৃতিচারণ করে জননেতা এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহবুব জামান ভুলু ও বীর মুক্তিযোদ্ধা এস.এম মাসুদুল হক ডুলু ছিলেন দুর্দিনের পরীক্ষিত নেতা। তাঁদের ত্যাগ তীতিক্ষার জন্য সংগঠন আজ এই পর্যন্ত অগ্রগামী হয়েছে। সংগঠনের জন্য তাঁরা নিবেদিত প্রাণ, কখনও অন্যায়ের সাথে আপোষ করেন নি। তাঁদেরকে উভয়কে হারিয়েই রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের যে শূণ্যতার সৃষ্টি হয়েছে, তা অপূরণীয়। আমরা তাঁদেরকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি এবং তাঁদের দেখিয়ে যাওয়া পথে আমাদের রাজনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যাবো।
স্মৃতিচারণের এক পর্যায়ে তিনি বলেন, আজকের আমার রাজনীতিতে যে অবস্থান তার জন্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহবুব জামান ভুলু’র অবদান অনস্বীকার্য। আমার আজ ১৯৮৬ সালের ভূবন মোহন পার্কের সম্মেলনের কথা মনে পড়ছে। সেদিন আমাকে হাত ধরে নিয়ে সে সম্মেলনে উপস্থিত হয়েছিলেন মাহবুব জামান ভুলু। এবং সেই সম্মেলনের মঞ্চে আমাকে বক্তব্য দিতে দেওয়া হয়েছিলো। মঞ্চে সেটিই আমার জীবনের প্রথম বক্তৃতা।
সেই সম্মেলনের মধ্যে দিয়ে মহানগর আওয়ামী লীগের যে কমিটি হয়েছিলো সেই কমিটি শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক পদে আমাকে রাখা হয়েছিলো, সেটিই আওয়ামী লীগে আমার প্রথম পদ। আজকে স্মৃতির মণিকোঠায় অনেক কিছুই ভেসে উঠছে, আমি স্মৃতিকাতর হয়ে পড়েছি। আরেকজন শ্রদ্ধেয় নেতা মাসুদুল হক ডুলু, তিনি দলের জন্য যে ঝুকিটা নিয়েছিলেন আমরা দলের নেতাকর্মীরা তার এই অবদান কোনদিন ভুলবো না। তিনি দলকে ধারণ করে রাজনীতির জন্য অনেক কিছুই করেছেন, আজকে তিনি আমাদের মাঝে নেই।
কিন্তু তাঁর কর্মগুলো রয়ে গেছে আমাদের মাঝে, আমরা তাঁদের স্মরণ করবো, শ্রদ্ধা জানাবো তাঁদের প্রয়ান দিবসে। তিনি আরো বলেন, আমি তাঁদের দুইজনের সাথেই সাধারণ সম্পাদক হিসেবে কাজ করেছি। রাজনীতির পরামর্শ, আন্দোলন, সংগ্রাম তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করেই চালিয়েছি। যার ফলশ্রুতিতে আজকে আমাদের দলের বর্তমানে এই অবস্থানে পৌঁছিয়েছি।
স্মরণ সভার এক পর্যায়ে তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট দেশে অস্থিতিশীল অবস্থা সৃষ্টির পায়তারা করছে। সরকারের পতন ঘটাতে তারা অপরাজনীতি শুরু করেছে, যেমনটি তাদের পূর্বসূরীরা শুরু করেছিলো ১৯৭৩-৭৪ সালে অন্য নামে। এমপি হত্যা, পাটের গুদামে আগুন সহ নানা অপকর্ম করে বঙ্গবন্ধুর ভাবমূর্তিকে ক্ষুন্ন করার অপপ্রয়াস ও বঙ্গবন্ধুর সরকারকে ব্যর্থ সরকার হিসেবে তুলে ধরার জন্য হেন অপকর্ম নেই যে তারা করেনি।
তাদের হাত থেকে রক্ষা পান নি আমাদের রাজশাহীর মাহবুব জামান ভুলু, মাসুদুল হক ডুলু, মজনু, নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কুদ্দুস, তাঁদের সকলকে গুলি করে আহত করা হয়েছিলো। নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াতের অপরাজনীতিকে রুখে দেওয়ার জন্য সকলকে রাজপথে সক্রিয় থাকতে হবে। যেখানেই তারা অপকর্ম করবে, সেখানেই তাদেরকে রুখে দিতে হবে। আগামী নির্বাচনের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা’র নেতৃত্বে সরকার গঠন করার জন্য সকলকে স্ব স্ব অবস্থান থেকে কাজ করার আহ্বান জানান।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রাজশাহী মহানগরের সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাদশা, বদরুজ্জামান খায়ের, যুগ্ম সম্পাদক মোস্তাক হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাড. আসলাম সরকার, দপ্তর সম্পাদক মাহাবুব-উল-আলম বুলবুল, আইন বিষয়ক সম্পাদক এ্যাড. মুসাব্বিরুল ইসলাম, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক ফিরোজ কবির সেন্টু, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম জাহিদ, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক রবিউল আলম রবি, যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক মকিদুজ্জামান জুরাত, শ্রম সম্পাদক আব্দুস সোহেল, উপ-দপ্তর সম্পাদক পংকজ দে, সদস্য জহির উদ্দিন তেতু, আশরাফ উদ্দিন খান, আব্দুস সালাম, মজিবুর রহমান, ইসমাইল হোসেন, মোখলেশুর রহমান কচি, এ্যাড. রাশেদ-উন-নবী আহসান, থানা আওয়ামী লীগের মধ্যে বোয়ালিয়া (পূর্ব) থানার সাধারণ সম্পাদক শ্যামল কুমার ঘোষ, রাজপাড়া থানার সাধারণ সম্পাদক শেখ আনসারুল হক খিচ্চু, মতিহার থানার সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন, নগর শ্রমিক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওয়ালী খান, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শরীফ আলী মুনমুন, নগর কৃষক লীগ সভাপতি রহমতউল্লাহ সেলিম, নগর মহিলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক কানিজ ফাতেমা মিতু, নগর ছাত্রলীগ সভাপতি নূর মোহাম্মদ সিয়াম, সাধারণ সম্পাদক ডাঃ সিরাজুম মুবিন সবুজ, নগর তাঁতী লীগ আহ্বায়ক আনিসুর রহমান আনার, যুগ্ম আহ্বায়ক মোকসেদ-উল-আলম সুমন প্রমুখ।