জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টে যে তামিম অনিশ্চিত, সেটি হারারে থেকে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় কাল কোচ রাসেল ডমিঙ্গোই বলেছেন, ‘তামিমের খেলা এখনো পুরোপুরি নিশ্চিত নয়। তাকে নিয়ে সংশয় আছে। টেস্টে তার খেলার ব্যাপারে আরও পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’ কাল থেকেই যেহেতু টেস্ট, সে সিদ্ধান্ত হয়ে যাওয়ার কথা আজই।
তামিমের না খেলাটা বড় ধাক্কাই হবে দলের জন্য। তিনি ছাড়া দলে আর কোনো ওপেনারই যে থিতু নন! ব্যাট হাতে ভালো সময়ই যাচ্ছিল তামিমের। টেস্টে সর্বশেষ ৫ ইনিংসের চারটিতেই করেছেন ফিফটি, যার দুটি থেমেছে ৯০-এর ঘরে। প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ে হলে তো কথাই নেই! জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্টে ১১ ইনিংসে ৪২ গড়ে দুই সেঞ্চুরি ও এক ফিফটিতে ৪৬৩ রান তাঁর।
দলের সঙ্গে হারারে গেলেও পুরোপুরি ব্যথামুক্ত ছিল না তামিমের ডান হাঁটু। সেটি আরও বেড়ে যায় প্রস্তুতি ম্যাচে ব্যাটিংয়ের সময়। তারপরও চোটটা এখনো সহনীয় পর্যায়েই আছে। বিসিবির চিকিৎসক দেবাশিস চৌধুরীর কথা, ‘তামিমের চোট এমন কিছু নয় যে অস্ত্রোপচার করাতে হবে। কিছুদিন বিশ্রাম নিলেই ঠিক হয়ে যাবে। ব্যথা কমার ওপরই নির্ভর করছে সবকিছু।’ কাজেই আপাতত বিশ্রামই একমাত্র ‘চিকিৎসা’ তামিমের। আর ব্যথা নিয়েও খেলা চালিয়ে গেলে চোটের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে এবং প্রয়োজন হতে পারে অস্ত্রোপচারের। তখন লম্বা সময়ের জন্য মাঠের বাইরে চলে যেতে হতে পারে তামিমকে।
অস্ট্রেলিয়ার বিশেষজ্ঞ শল্যবিদ ডেভিড ইয়াংও সে রকম শঙ্কার কথাই বলেছেন। সূত্র জানিয়েছে, তামিম তার হাঁটুর স্ক্যান রিপোর্ট পাঠিয়েছিলেন ডেভিড ইয়াংকে। সব দেখে তাঁর পরামর্শ, তামিমের এখনই ১০ থেকে ১২ সপ্তাহের বিশ্রামে যাওয়া উচিত। জিম্বাবুয়ে সিরিজে না খেলারও নাকি পরামর্শ ছিল ইয়াংয়ের। কিন্তু তামিম যেহেতু ওয়ানডে দলের অধিনায়ক আর ওয়ানডেতে পয়েন্টেরও ব্যাপার আছে, কিছুটা ঝুঁকি নিয়েও তাঁকে খেলাতে চায় টিম ম্যানেজমেন্ট। যেটা তাদের ভাষায় ‘ক্যালকুলেটিভ রিস্ক’। তার আগে টেস্টেও ব্যথার মাত্রা বিবেচনা করেই মাঠে নামবেন তামিম। এ ক্ষেত্রে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার তাঁর ওপরই ছেড়ে দেওয়া হতে পারে।
ওয়ানডে সিরিজ খেলে দেশে ফিরে তামিম দুই–আড়াই মাসের বিশ্রামে চলে যাবেন, এখন পর্যন্ত এমনই সিদ্ধান্ত। সে ক্ষেত্রে তাঁর খেলা হবে না অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টি–টোয়েন্টি সিরিজ দুটিতে। দুটি সিরিজেই হবে পাঁচটি করে টি–টোয়েন্টি ম্যাচ।
দলে অন্য যাঁদের চোট ছিল, তাঁরা অবশ্য সেসব কাটিয়ে উঠেছেন। মুশফিকের চোট নিয়ে আর কোনো দুশ্চিন্তা নেই। অনুশীলনে গোড়ালিতে চোট পাওয়ায় প্রস্তুতি ম্যাচে বোলিং না করা তাইজুল ইসলামও এখন ঝুঁকিমুক্ত।
অনিশ্চয়তা শুধু তামিমকে নিয়েই। আর সে অনিশ্চয়তাও শুধু জিম্বাবুয়ে সফরেই সীমাবদ্ধ থাকছে না।