মঙ্গলবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২৩
মোস্তাফিজুর রহমান সুজনঃ
পটুয়াখালীর পৌর শহরের হোটেল-রেষ্টুরেন্টে কিংবা কলস ও বালতিতে পানি সরবরাহ করে জীবিকা নির্বাহ করেন মোহাম্মদ নুর হোসেন ।
গত প্রায় ২৫ বছর ধরে কাক ডাকা ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত এভাবেই দোকানে দোকানে ভাঙা ভ্যানে করে পানি টেনে চলে তার জীবন সংগ্রাম।
নুরুর পরিবারে মা’ স্ত্রী ও দুই মেয়ে নিয়ে তার ছোট্ট একটা সংসার ১৬ বছর বয়সী একমাত্র ছেলে ওসমান লিভার আক্রান্ত হয়ে পরিবারের সবাইকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশের যাত্রী হয়েছেন ৪ বছর আগে। বালতি ও কলস প্রতি ৫ টাকা করে পান তিনি। মাত্র ৩ বছর বয়সের মেয়টা নিজ চোখের সামনে পুকুরে পরে গিয়ে পানিতে ডুবে মারাযান এযেনো এক হৃদয় বিতারক ঘটনা।
তার পরেও গভীর রাতে যখন ক্লান্ত ও অবসন্ন শরীরে বাড়ি ফেরেন তখন গুনে দেখেন তার সারাদিনের আয় দুই- আড়াইশত টাকা। সারাদিন কাজে ব্যস্ত থাকায় বছরের বেশিরভাগ সময় ভাত খাওয়া হয়না তার।
দুপুরে পানি দেওয়ার কাজে ব্যস্ত থাকায় আর বাড়ি ফিরতে পারে না, বেশীরভাগ সময় রুটি ও চা হয় তার দুপুরে খাবার। নিজের সম্পত্তি না থাকায় পৌর শহরের ৭ নং ওয়ার্ডে সরকারি সম্পত্তিতে খুপড়ি ঘরে বসবাস করেন নুরু মিয়া। মানবেতর জীবন-যাপন করছেন তিনি। খালি পা,ছেঁড়া-ময়লা জামাকাপড় নিয়ে পানি টেনে এভাবেই দিনের পর দিন বছরের পর বছর আর যুগের পর যুগ চলছে নুর হোসেনের জীবন-সংগ্রাম।
মোহাম্মদ নুর হোসেন জানান,জীবনে অনেক কষ্ট করেছি, মানুষের বাসায় বাসায় দোকানে পানি টেনে দেই এবং কলস প্রতি আমাকে টাকা দেওয়া হয় আমি আমার স্ত্রী সন্তান নিয়ে পানি টেনে যা টাকা পাই তা দিয়ে সংসার চালাই, আমার নেই থাকার কোনো স্থায়ী বাসস্থান আমি এখন যেখানে থাকি সেটা সরকারি একটা জমির উপরে যেখানে টিনের একটি ঝুপড়ি ঘর তুলে থাকি,মাঝে মধ্যে যেদিন অসুস্থ থাকি সেদিন পানি টানতে পারি না আর টাকাও রোজগার হয় না। সরকার অনেক আশ্রয়হীন লোকদের ঘরের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন নুরুর মতো একজন অসহায় সহজ সরল খেটে খাওয়া মানুষকে যদি এক খানা ঘরের ব্যবস্থা করে দিতেন। কিন্ত এটাই বাস্তব নুরুর জীবন কাহিনী দেখার ও শোনার কেউ নেই।
এভাবে নুর হোসেন নুরুর জীবন সংগ্রাম চলছে আসলে বাস্তবে সে কখনো সঠিক ভাবে হিসেব করতে পারেনা কাকে কয় কলস পানি দিয়েছেন। এবং সঠিক ভাবে টাকার হিসেব করতে যানেন না নুরুকে যখন যে যা দেয় সেগুলো নিয়েই বাসায় ফিরে যান নুরু।