রবিবার, ২৬ মার্চ ২০২৩
নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদ নির্বাচনের একদিন যেতে না যেতেই কারচুপির অভিযোগ উঠেছে। ইভিএমে কারচুপির মাধ্যমে হারানোর অভিযোগ করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন এক নম্বর ওয়ার্ডে সংরক্ষিত নারী সদস্য পদপ্রার্থী আছিয়া খানম সুমি। ভোটে পরাজিত হওয়ার জন্য তিনি দলীয় সাংসদ একেএম শামীম ওসমানকেও দোষারোপ করেন। সুমি আওয়ামী মহিলা লীগের জেলা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক।
মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) দুপুরে নগরীর দেওভোগে নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন ডেকে তিনি বলেন, ‘ভোটের আগের দিন রাতে এমপি শামীম ওসমান চেয়ারম্যান-মেম্বারদের ডেকে সাদিয়া আফরিনকে ভোট প্রদানে চাপ দিয়েছেন। এরপর থেকে কেউ নির্বাচনে অংশ নিলে যেন ওসমান পরিবারের অনুমতি নেয়। নারায়ণগঞ্জে যারা সত্যিকারের আওয়ামী লীগ, দলে তাদের নাম নেই। এখানে সব ওসমান লীগ।
ভোটারদের কাছে ক্ষমা চেয়ে সুমি বলেন, ‘আমি আমার ভোটারদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। আমি ভোটারদের ভোটে পরাজিত হইনি। আমাকে ওসমান পরিবারের দুই ভাই শামীম ওসমান ও সেলিম ওসমান হাতে ধরে পরাজিত করেছেন। ভোটে কারচুপির মাধ্যমে অযৌক্তিক একটা ফলাফল আমার হাতে তুলে দিয়েছেন।’
সুমি আরো বলেন, ‘সারা বাংলাদেশে উনি (শামীম ওসমান) নাকি আইডল। আমার মতো সাধারণ নেত্রী যে কখনও তার বিরুদ্ধে বক্তব্য দিই নাই, তাহলে আমাকে নিয়ে খেলাটা কেন খেললো? নির্বাচনে এমন করবে আগে বললেই তো আমি নির্বাচনে অংশ নিতাম না।
ফলাফল অনুযায়ী এক নম্বর ওয়ার্ডে সংরক্ষিত নারী সদস্য প্রার্থী ও যুব মহিলা লীগের মহানগর কমিটির আহ্বায়ক সাদিয়া আফরিন ১২৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাফায়েত আলম সানির স্ত্রী এবং ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বক্তাবলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শওকত আলীর কন্যা। সায়ায়েত আলম সানি ও শওকত আলী নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে (ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমানের ঘনিষ্ঠ অনুসারী।
ভোটগ্রহণের দিনও দুই সাংসদের নির্দেশনায় কারচুপি হয়েছে বলে অভিযোগ সুমির। পরাজিত এই প্রার্থী বলেন, ‘৯০জন ভোটার আমার প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিলেন ৯০টা না পাইলেও ৩০টা ভোটও তো পাইতাম। যেই ফলাফল আমারে দিছে সেইটা স্বচ্ছ না। এইখানে কারচুপি হইছে। দুই সাংসদের কথায় নির্বাচন অফিসাররাও এই কারচুপিতে যুক্ত।
ভোটের দিন আমার ছেলে নিজ কানে শুনেছে, একজন অফিসার বলছেন, ১০২টা ভোট হওয়ার পর মেমোরি কার্ড পরিবর্তন করে ফেলবেন। মেমোরি কার্ড কেন পরিবর্তন করতে হবে? ডিসি স্যার (রিটার্নিং কর্মকর্তা) প্রার্থীদের নিয়ে সভায় বলছিলেন, কেন্দ্রে সাংবাদিকও ঢুকতে পারবে না। অথচ পুরো কেন্দ্রভর্তি শামীম ওসমানের অনুসারী নেতা-কর্মীরা ছিল। কেন্দ্রগুলো সব শামীম ওসমানের লোকজনের দখলে ছিল। বারবার এই কথা বলার পরও পুলিশের কোনো সদস্য কিছু বলে নাই।’