রাবি উপাচার্য নিজ হাতে পানি পান করিয়ে আমরন অনশন ভঙ্গ করালেন - Pallibarta.com

রবিবার, ৪ জুন ২০২৩

রাবি উপাচার্য নিজ হাতে পানি পান করিয়ে আমরন অনশন ভঙ্গ করালেন

রাবি উপাচার্য নিজ হাতে পানি পান করিয়ে আমরন অনশন ভঙ্গ করালেন

হুমায়ুন কবীর, রাজশাহীঃ
সাড়ে তিন মাসেও ফল বিপর্যয়ের সমাধান না হওয়ায় এবার অনশন করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উর্দু বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থীরা। সোমবার (১৬ অক্টোবর ) সকাল দশটায় অনশন শুরু করে উপাচার্যের আশ্বাসে রাত সাড়ে আটটার দিকে অনশন ভঙ্গ করে তারা। অনশনের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়া আন্দোলনকারী তিন শিক্ষার্থী এখন বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসাধীন।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো, পুনর্মূল্যায়ন করে দ্রুত ২য় সেমিস্টারের ফলাফল প্রকাশ, ফল বিপর্যয়ের সঙ্গে জড়িত শিক্ষকদের শাস্তি, পরবর্তীতে পরীক্ষা কমিটি থেকে অভিযুক্ত শিক্ষকদের বাদ দেওয়া এবং ছাত্রবান্ধব বিভাগ। জানা যায়, রাত সাড়ে সাতটার দিকে আন্দোলনকারী ও তাদের সিনিয়র কয়েকজনসহ দশ জনকে নিয়ে আলোচনায় বসে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আলোচনা শেষে রাত সাড়ে আটটার দিকে উপাচার্যের আশ্বাসে অনশন ভঙ্গ করেন আন্দোলনকারীরা।

এসময় উপাচার্য বলেন, আমরা আশা করেছিলাম, বিভাগই বিষয়টার সমাধান করতে পারবে। একাডেমিক বিষয়গুলো ডিপেন্ড করে বিভাগের উপর, এখানে প্রশাসনের কিছু করার নাই। কিন্তু যেহেতু আমাদের ছাত্ররা আমাদের কাছে এসেছে, সেহেতু বিষয়টা ক্ষতিয়ে দেখার জন্য আমরা একটা কমিটি গঠন করে দিয়েছি। এক সপ্তাহের মধ্যে তাদের রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। ওই রিপোর্ট অনুযায়ী ছাত্ররা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকলে, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধিবিধান অনুযায়ী আমরা ব্যবস্থা নিবো।

অনশন ভঙ্গের পরে আন্দোলনকারী মো. জাহিদ হাসান নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, ভিসি স্যারের আশ্বাসে আমরা অনশন ভেঙেছি। আর কিছুদিন অপেক্ষা করে দেখি কি হয়। দিনব্যাপী অনশন এবং সন্ধ্যায় হওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির কারণে আমাদের তিনজন সহপাঠী অসুস্থ হয়ে এখন মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসাধীন। এদিকে আন্দোলকারী শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন, সন্ধ্যার পরে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলামের সাথে উচ্চস্বরে কথা বলার অভিযোগ করে আন্দোলনরত জোবায়ের নামে এক শিক্ষার্থীর গায়ে হাত তুলেছেন নাট্যকলা বিভাগের অধ্যাপক রহমান রাজু ও বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক প্রদীপ কুমার পান্ডে।

একারণে, রাত সাতটার দিকে ‘প্রদীপ পান্ডের দুই গালে, জিতা মারো তালে তালে’ এবং ‘ রহমান রাজুর দুই গালে, জুতা মারো তালে তালে’ বলে স্লোগান দিতে থাকে তারা। এবিষয়ে আন্দোলনকারী মো. জাহিদ হাসান বলেন, সন্ধ্যার পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে আসেন। প্রো- ভিসি স্যার আমাদের বিভিন্ন বিষয় বোঝাচ্ছিলেন এবং আমাদের সাথে কথা বলছিলেন। এসময় প্রো-ভিসি স্যারের সাথে উচ্চস্বরে কথা বলার অভিযোগ তুলে আমাদের সহপাঠী জোবায়েরের কলার ধরে প্রশাসন ভবনের ভিতরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন রাজু স্যার আর পান্ডে স্যার।

ওইসময় আমরা সবাই উত্তেজিত হয়ে গেলে জোবায়েরকে ছেড়ে দেন তারা। এসময় ধাক্কাধাক্কিতে অনেকেই পড়ে যায় এবং তিনজন অসুস্থ হয়ে যায়, ওদের মেডিকেল সেন্টারে পাঠানো হয়েছে। অভিযোগের বিষয়ে অধ্যাপক রহমান রাজু বলেন, ‘আমি কারো গায়ে হাত তুলেছি তো দূরের কথা, সৌজন্যতাবসতও কারো গায়ে হাত তুলেছি, এটা যদি কেউ প্রমাণ করতে পারে, তাহলে বিষয়টা প্রমাণ করার ত্রিশ সেকেন্ডের মধ্যে আমি চাকরি ছেড়ে দিয়ে চলে যাবো। এঘটনাটির সাথে আমি বিন্দুমাত্র জড়িত হয়নি।

যখন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তাদের বোঝাচ্ছিলেন যে, আমাদের উপর আস্থা রাখো, তখন আমি প্রশাসনের প্রতি আস্থা রাখতে তাদের অনুরোধ করেছিলাম। তারা বলছিলো, তারা কারো উপরেই আস্থা রাখবেনা। এসময় আমি পিছনে গিয়ে প্রো-ভিসি স্যারের সাথে দাড়িয়ে ছিলাম।’ অধ্যাপক প্রদীপ কুমার পান্ডে বলেন, বাকবিতন্ডা হয়েছে, কিন্তু কারো গায়ে হাত তোলা হয়নি। প্রসঙ্গত, গত ২৫ আগষ্ট উর্দূ বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থীদের দ্বিতীয় সেমিস্টারের ফল প্রকাশ করা হয়।

ফল প্রকাশের পর কাঙ্খিত ফল না পেয়ে ওইদিনই সকল শিক্ষার্থী সভাপতির কক্ষে তালা ঝুলিয়ে ফল পুনর্মূল্যায়নের দাবি জানান। ঘটনাস্থলে গিয়ে ছাত্র উপদেষ্টা তিন দিনের মধ্যে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন। তিনদিন পর শিক্ষার্থীরা ছাত্র উপদেষ্টার কাছে গেলে তিনি এক সপ্তাহ সময় নেন। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিভিন্ন অযুহাত দেখিয়ে কালক্ষেপন করা হয়েছে। পাঁচ-ছয়বার ডেট নিয়েও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের সমস্যাগুলোর সমাধান দিতে পারেননি। এজন্য আজকে তারা আমরণ অনশনে বসেছিলেন।

আরো পড়ুন ...

আর্কাইভ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০