মঙ্গলবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২৩
মোস্তাফিজুর রহমান সুজনঃ
কলাপাড়া উপজেলার প্রাণকেন্দ্রে “খেপুপাড়া সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের” মাসব্যাপী খেলা নিয়ে সংশ্লিষ্ট ও স্থানীয়দের মাঝে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
খেলার কারনে স্কুল সংলগ্ন আবাসিক এলাকার শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকরা নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্থ্য হচ্ছে বলে অভিযোগে দাবি করা হয়।
এছাড়াও খেলা নামে একটি মহল র্দীঘদিন থেকে চাঁদাবাজী করছে আসছে। এসকল চাঁদাবাজীর কারনে উপজেলার ব্যবসায়ী ও সাধারন জনগন ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
দ্রুত এই খেলা বন্ধ করতে জেলা প্রশাসক ও সংশ্লিষ্টদের কাছে লিখিত আবেদন করেছেন একটি মহল। তবে নিরাপত্তা জনিত কারনে আবেদন কারীর পরিচয় গোপন রাখার শর্ত দিয়েছে।
অভিযোগে বলা হয়-ওই প্রতিষ্ঠানে প্রায় ২০০০ শিক্ষার্থী রয়েছে। এ সকল শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনেকেই স্কুল মাঠে খেলা-ধুলা, শারিরিক চর্চা এবং বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করে থাকেন।
এছাড়াও মাঠটিকে প্যারেড গ্রাউন্ড হিসেবে ব্যবহার হয়। এবং সরকারী গুরুত্বপূর্ন একাধিক প্রোগ্রাম ওই মাঠে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।
কিন্তু চলতি মৌসুমে ওই স্কুলটিকে রাতে নাইট ফুটবল খেলার আয়োজন করেন প্রয়াত মরহুম এমপি আবদুর রাজ্জাক খানের ছেলে মো. ইলিয়াস খান রানা ও তার সহযোগী মো: রাহিমুল হক হিরু, রয়েল ব্যচ ২০০০ এর ব্যবস্থাপনায়- যা মাসব্যাপী চলে আসছে।
২শ ফুট দৈর্ঘ্য এবং ১৮০ ফুট প্রস্থ্যের মাঠটি অভিযুক্ত আয়োজনের জন্য মোটেও উপযোগী নয়। উল্লেখ্য যে একটি ফুটবল মাঠের আয়তন দৈঘ্য-৩৬০ থেকে ৩২৮ ফুট এবং প্রস্থ-২৪৬ থেকে ২১০ ফুট।
আর ক্রিকেট মাঠের ব্যাস ৪৫০ থেকে ৫০০ ফুট। ক্রিকেট মৌসুমে ক্রিকেট বল স্কুল ভবনের জানালার গ্লাস ও সোলার প্যানেলে বল পরে ক্ষতি গ্রস্থের সংখ্যা বাড়ছে।
খেলায় ধারাভাষ্য ও গানের অতিরিক্ত মাত্রার সাউন্ডে অতিষ্ট হচ্ছে সংশ্লিষ্টরা। বল পড়ে নষ্ট হচ্ছে বিদ্যালয়ে সাইনবোর্ড, লাইটিং সরঞ্জাম গুলো।
এ প্রসঙ্গে স্কুল প্রধান শিক্ষক মো. আবদুর রহিম বলেন, যদি উর্ধতম কর্তপক্ষ খেলার অনুমতি দেয় তাহলে আমরা কি করতে পারি।
এ প্রসঙ্গে আয়োজক গলাচিপা উপজেলার পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো: ইলিয়াস খান রানা বলেন, আমি এই খেলার সাথে সম্পৃক্ত নই। এই খেলা পরিচালনা করেন ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ হুমায়ুন কবির।
এ প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসনের দায়িত্বশীলদের মতামত নেয়া সম্ভব হয়নি। তবে উপজেলা র্নিবাহী অফিসার শংকর চন্দ্র বৈদ্য বলেন-এরকম অভিযোগ তিনি পাননি। তবে খেলা শেষের দিকে। সকলের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষক/অভিভাবকরা জনান খেলার নামে চলছে সিজনাল ধান্ধাবাজি। যদি খেলার জন্যই আয়োজন হয় তাহলে সরকারি মোজাহার উদ্দিন বিশ্বাস কলেজ মাঠেই খেলা হবে।
কারন এত ছোট মাঠে এত বড় খেলা সম্ভব না। খেপুপাড়া উপজেলার খেলার ঐতিহ্য নষ্ট করছে এই ছোট ছোট সংস্ককরনের খেলা এখানে। এক সময়ে বিখ্যাত খেলোয়ারদের বিচরন ছিল।
বৃষ্টির কারণে বিদ্যালয়ে ছাত্র/ছাএীদের উপস্থিতি কমে যায়। শীতকাল কিংবা শুষ্ক ঋতুতে বিদ্যালয়ের সহশিক্ষা কার্যক্রম স্কাউটিং, সংগীত চচ্চা, কম্পিউটার ল্যাবে কম্পিউটার প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন প্রশিক্ষণ চলমান থাকে।
কিন্তু বেশ কয়েক বছর যাবৎ বিভিন্ন খেলা আয়োজন করার কারণে উক্ত কার্যক্রম গুলো পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে না।
কম্পিউটার ল্যাবগুলো মাঠের একেবারে কাছে হওয়ায় খেলার কারণে কয়েকবার জানালার গ্লাস ভেঙ্গে যায়। একটি বিল্ডিং এর জানালার সবগুলো গ্লাসতো একেবারেই ভাঙ্গা।
অভিভাবকদের ভাষ্যমতে কোমলমতি শিশুদের শিক্ষার পরিবেশ রক্ষায় উক্ত খেলাগুলি মোজাহার উদ্দিন বিশ্বাস কলেজ মাঠে আযোজন করা হোক। আর প্রকৃত খেলোয়াদের মাধ্যমেই কলাপাড়া উপজেলার খেলা পরিচালনা করা হোক।