রবিবার, ৪ জুন ২০২৩
গাজী আরিফুর রহমান, বরিশালঃ
বরিশালে টানা তিন দিনের বৃষ্টিতে নগরীসহ জেলার অধিকাংশ সড়কতলিয়ে গেছ। গত রোববার ভোর ৫ টার দিকে প্রথম শুরু হয় এ বৃষ্টি। টানা বৃষ্টিতে সাধারণ মানুষের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। একই সঙ্গে কীর্তনখোলা নদীর জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হচ্ছে নদীতীরবর্তী নিম্নাঞ্চল। খাল ও ড্রেন গুলোতেও জোয়ারের পানি ঢুকে পড়ায় প্লাবিত হচ্ছে নগরীর নিম্নাঞ্চলগুলো।
মুষলধারায় বৃষ্টির কারণে হঠাৎ করে বিপাকে পড়ে নগরবাসী। বিশেষ করে রিকশাচালক, মোটরসাইকেলচালক থেকে শুরু করে সাধারণ খেটে খাওয়া কর্মজীবীরা বেশি বিপদে পড়েছেন। এদিকে প্রচণ্ড বৃষ্টিতে সমস্যায় পড়তে হয়েছে স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের।
মঙ্গলবার ( ১৩ সেপ্টেম্বর ) নগরীর সদর রোর্ডে গিয়ে দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা তাদের নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটি হওয়ার পর বৃষ্টি কমার আশায় রাস্তার বিভিন্ন পয়েন্টে অপেক্ষা করছে। তবে বৃষ্টি না কমায় বাধ্য হয়ে তাদের অনেকেই ভিজে বাসায় যেতে লক্ষ করা গেছে। এছাড়াও দেখা গেছে পেটের টানে বৃষ্টির মধ্যে ভিজে এক বৃদ্ধ তার মাথায় কলার সাজি নিয়ে বিক্রির উদ্দেশ্যে বের হয়েছেন। এদিকে নগরীর বেশ কিছু এলাকাভিত্তিক সড়ক বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে। যার ফলে সাময়িক সময়ের জন্য তৈরি হয়েছিল জনদুর্ভোগ।
অন্যদিকে লক্ষ করা গেছে, বরিশালের কীর্তনখোলাসহ দক্ষিণাঞ্চলের সব নদ-নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সে সঙ্গে দিনভর হালকা ও মাঝারি ধরনের বৃষ্টি হচ্ছে সমগ্র বরিশালে।
সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাতে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানিয়েছে, বিভাগের মধ্যে বরিশাল নগর সংলগ্ন কীর্তনখোলা নদীর পানি বিপদসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া ঝালকাঠির বিষখালী নদীর পানি বিপদসীমার ২৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অপরদিকে দিনের সর্বশেষ জোয়ারে ভোলা খেয়াঘাট সংলগ্ন তেঁতুলিয়া নদীর পানি ১০ সেন্টিমিটার, ভোলার দৌলতখানের সুরমা-মেঘনা নদীর পানি ৬৪ সেন্টিমিটার, তজুমদ্দিনের সুরমা-মেঘনার পানি বিপদসীমার ৮৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আর পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জের বুড়িশ্বর/পায়রা নদীর পানি বিপদসীমার ৩৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
অপরদিকে বরগুনায় বিষখালী নদীর পানি বিপদসীমার ৩৬ সেন্টিমিটার ও পাথরঘাটায় ৮২ সেন্টমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া পিরোজপুরে বলেশ্বর নদীর পানি বিপদসীমার ১৪ সেন্টিমিটার ও উমেদপুরে কচা নদীর পানি ২২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পাউবোর গেজরিডার শাখার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দক্ষিণাঞ্চলের প্রধান প্রধান নদ-নদীতে পানির স্তরের তথ্য সংগ্রহ করা হয়। তবে গত দুদিনের মতো আজও এসব নদীর সঙ্গে সংযুক্ত দক্ষিণাঞ্চলের সব নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করেছে।
বরিশাল পাউবোর উপসহকারী প্রকৌশলী মো. মাসুম জানান, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপ ও পূর্ণিমার প্রভাবে গত তিন দিন ধরে দক্ষিণাঞ্চলের সব নদ-নদীর পানি জোয়ারের সময় স্বাভাবিকের থেকে বাড়বে।