মঙ্গলবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২৩
মোস্তাফিজুর রহমান সুজনঃ
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলা ফায়ার সার্ভিস স্টেশন কর্মকর্তা মোঃ আরিফুজ্জামান শেখের গাড়ীর তেল কেনা নিয়ে তেলেস মাতি।
জেনে গেছে তেলেস মাতি ছাড়াও তার বিরুদ্ধে রয়েছে আরও একাধিক অনিয়ম-দূর্নীতির অভিযোগ।
ফায়ার স্টেশনের গাড়িগুলোর জন্য যে তেল কেনা হয় সেখানেও তিনি করছেন দূর্নীতি। অভিযোগ আছে তিনি প্রতিনিয়ত যে পরিমাণ তেল কেনেন তার দ্বিগুণ বা তিনগুণ পাম্পের দেয়া ভাউচারে বিল করান।
গত বুধবার (১১ জানুয়ারি) পটুয়াখালীর শিয়ালী বদরপুরের এস এস ফিলিং স্টেশন থেকে মবিল নেন ২০ লিটার এবং তেল নেন ২৫৭ লিটার।
বিলের ভাউচারে মবিলের পরিমাণ ঠিক থাকলেও তেলের পরিমাণ লেখান ৪০০লিটার। ঘটনাস্থলেই স্থানীয়রাসহ সাংবাদিকদের নিয়ে তাকে তেল কেনার এ অনিয়ম সম্পর্কে জানতে চান।
কিন্তু তখন তেল কেনার এ অনিয়ম সম্পর্কে সদুত্তর দিতে পারেননি বাউফল ফায়ার স্টেশনের এ কর্মকর্তা।
সাংবাদিকদের জেরার মুখে পড়েন তিনি পরিস্থিতি সামাল দিতে সহকারী পরিচালকের অফিসে দ্রুত তিনি গাড়ী নিয়ে সটকে পড়েন চালক বাসার ও আরিফুজ্জামান শেখ।
অভিযুক্ত বাউফল ফায়ার সার্ভিস স্টেশন কর্মকর্তা মোঃ আরিফুজ্জামান শেখের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঘটনাস্থলে যেয়ে তদন্ত করেন এবং প্রমাণ নেন।
সোমবার (২৩ জানুয়ারি) সরেজমিনে তার অফিসে আসলে তিনি আরও বলেন, অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা বানোয়াট। আমাকে হেয়প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যে এমন কাজ হয়েছে।
তথ্য প্রমাণ ও সেদিনের ভিডিও ফুটেজ কি প্রমাণ নই জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন, আমরা বাকীতে তেল কিনি। তবে বাকিতে তেল কিনলে তার জন্য ডিউ লেখা থাকার কথা কিন্তু সেটাও নেই।
সুত্র জানায়, বাকিতে তেল ক্রয় করার কোন আইন না থাকলেও উক্ত কর্মকর্তা তেল চুরি করার জন্য আইন নিজেই তৈরি করেছেন। ওই সময় চালক আবুল বাশার চুপ ছিলেন।
তবে সরেজমিনে আবুল বাশার বলেন, গাড়িতে ৪৩ লিটার তেল এবং দুই ড্রামে মোট ২৫৭ লিটার তেল নিয়েছি। এদিকে ভাউচারে লেখা হয়েছে ৪০০ লিটার তেল।
এব্যাপারে জেলা সহকারী পরিচালক মোঃ আমিনুল ইসলাম সরকার বলেন, উপজেলা ফায়ার অফিসার আরিফুজ্জামান শেখের বিরুদ্ধে অনিয়ম দুর্ণীতির অনেক অভিযোগ পেয়েছি। খোঁজ খবর নিয়ে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ফায়ার সার্ভিস মহা পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন জানান, আমরা আরিফুজ্জামানের তেল চুরির বিষয়ে অবগতির পর তার বিরুদ্ধে প্রশাসন ও অর্থ বিভাগ তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছি।
এছাড়াও বিভিন্ন পত্রিকা থেকে জানা যায়, তিনি ঢাকার পোস্তগোলায় কর্মরত থাকাকালীন অপরাধে তাকে উত্তরায় সংযুক্ত করা হয়।
উত্তরায় একটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গিয়ে ১০ লক্ষ টাকা আত্নসাৎ করেন। এ বিষয়ে বিভাগীয় অভিযোগ হলে ব্যারাকে তার বালিশের ভিতর থেকে টাকা উদ্ধার হয়।
পদোন্নতি না দিয়ে তাকে মুন্সীগঞ্জ শ্রীনগর বদলি করলে সেখানে লাইসেন্স তৈরির চাদাঁবাজীর অভিযোগ হয়।
এবং অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় পটুয়াখালী জেলায় বদলী করা হয়। বাউফল জেলার দুরবর্তী উপজেলা হওয়ার সুবাধে চালক আবুল বাসার সহ প্রতিমাসে তেল চুরি করেন।